সিলেট অফিস
প্রকাশ : ০১ এপ্রিল ২০২৩ ১৯:৫২ পিএম
আপডেট : ০১ এপ্রিল ২০২৩ ১৯:৫৫ পিএম
সিলেটে নগর ভবনে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। প্রবা ফটো
সিলেটে উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের ছাদে ফাটল দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)।
শনিবার (১ এপ্রিল) বিকালে নগর ভবনে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানান। নগরীর কদমতলীতে পুরাতন টার্মিনালের ৮ একর জায়গায় প্রায় ৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন আধুনিক টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়েছে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষামূলক চালু হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে টার্মিনালের উদ্বোধন হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে মেয়র আরিফ বলেন, ‘দেশের সবচেয়ে আধুনিক এই বাস টার্মিনালের একটি অংশে ত্রুটি ধরা পড়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে তা পরিদর্শন করেছি। এ নিয়ে জনমনে কোনো বিভ্রান্তি যেন না ছড়ায়, তার জন্য বিশেষজ্ঞদের দিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, তদন্ত কমিটি ১০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মেয়র জানিয়েছেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষক, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সিলেটের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, গণপূর্ত অধিদপ্তর সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী, সড়ক বিভাগ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর সমন্বয়ে ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে মিউনিসিপ্যাল গভর্নমেন্ট সার্ভিস প্রজেক্ট (এমজিএসপি) প্রকল্পের আওতায় সিসিকের উদ্যোগে এই টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়। ২০১৮ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পের কাজ ২০২০ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা থাকলেও তা হয়নি।
মেয়র আরিফ বলেন, এখনও সিসিকের কাছে এই প্রকল্পটি নির্মাণ সংস্থা হস্তান্তর করেনি। উদ্বোধনের জন্য অপেক্ষমান বাস টার্মিনালটিতে সুযোগ-সুবিধা ঠিক আছে কি-না, তা পর্যবেক্ষণের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে সেবা প্রদান শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে স্থাপনাটির একটি অংশে কিছু ত্রুটি দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, টেকনিক্যাল (তদন্ত) টিম যেদিন রিপোর্ট জমা দেবে, সেদিন সংবাদকর্মীদের সামনেই তা পেশ করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলী আকবর উপস্থিত ছিলেন।
এক মাসের মধ্যে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি শেষ
কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নিয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন হলেও দীর্ঘদিন ধরে নগরীর রাস্তাঘাট খোঁড়াখুঁড়ির ব্যাখ্যা দিয়েছেন মেয়র আরিফ। তিনি বলেন, সিলেটের পানির লাইনগুলো ৩০-৪০ বছরের পুরানো। তাই বিভিন্ন জায়গায় ছিদ্র হয়ে পানি বের হয়ে রাস্তা নষ্ট হচ্ছে। তাই ছিদ্রগুলো সংস্কার না করে নতুন পিভিসি পাইপ দিয়ে পানির লাইন টানা হচ্ছে। আগামী ১ মাসের মধ্যে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শেষ হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
পানির সংকট বিষয়ে মেয়র বলেন, সিলেটে যে পানি উত্তোলন হয় তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। সরকার যদি আরও একটি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট তৈরি করে দেয় তাহলে পানির চাহিদা মেটানো সম্ভব।
মেয়র বলেন, প্রধানমন্ত্রী সিলেটের উন্নয়নে ১২শ ২৮ কোটি টাকা বিল পাস করেন। এরমধ্যে ৮০ শতাংশ সরকার এবং বাকি ২০ শতাংশ সিলেট সিটি করপোরেশনের নিজস্ব অর্থায়ন থেকে দিচ্ছে। সিলেটের জনগণের স্বার্থে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে আরো ৯টি প্রকল্পের জন্য আবেদন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।