× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বজ্রপাতে ১০ জনকে হারিয়ে শোকে মুহ্যমান সিরাজগঞ্জের দুই গ্রাম

সিরাজগঞ্জ সংবাদদাতা

প্রকাশ : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২১:০৬ পিএম

আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১০:৪১ এএম

বজ্রপাতে ১০ জনকে হারিয়ে শোকে মুহ্যমান সিরাজগঞ্জের দুই গ্রাম

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার পাশাপাশি দুটি গ্রাম মাটিখোড়া ও শিবপুর। প্রত্যন্ত এই দুই জনপদের পরিবেশ ভারী হয়ে আছে শোকার্ত মানুষের বেদনা আর স্বজনদের বুকফাটা কান্নায়। চোখের জলে তারা কবরে নামিয়েছেন বজ্রপাতে প্রাণ হারানো ১০ জনকে।

বৃহস্পতিবার রাতে নিজ নিজ গ্রামে দাফন করা হয়েছে মৃতদের। তাদের মধ্যে শিবপুর গ্রামেরই পাঁচজন। এক পরিবারের এই পাঁচ সদস্য হলেন কৃষিশ্রমিক শমসের আলী, তার ভাই আফসার আলী, বড় ছেলে শাহীন রেজা, মেয়ের জামাই মোবাখকর আলী, ও নাতি আব্দুল মোন্নাফ। স্থানীয় কবরস্থানে তাদের কবরও হয়েছে পাশাপাশি। বজ্রাঘাতে প্রাণ হারানো এই গ্রামের হোসনে আরাকেও কবর দেওয়া হয়েছে তাদের সঙ্গে।

শমসেরের পরিবারের আরেক সদস্য তার বড় ছেলে জাহাঙ্গীর আলম গুরুতর অবস্থায় সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেখানে কথা হয় তার সঙ্গে। বিছানায় শুয়ে কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকালে মাটিকোড়া গ্রামের শাহ আলমের কাছ থেকে ধানের চারা কেনেন আমার চাচা আফসার আলী। সেই চারা তোলার জন্য আমি, চাচা আফসার আলী, বাবা শমসের আলী, বড় ভাই শাহীন রেজা, বোন জামাতা মোবাখর আলী এবং ভাগনে এসএসসি পরীক্ষার্থী আব্দুল মোন্নাফ মিলে মাটিকোড়া গ্রামে যাই।



‘সবাই চারা তুলতে শুরু করি। আমাদের সঙ্গে আরও অনেকে জমিতে কাজ করছিল। বিকালের দিকে হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হয়। তখন শিশুসহ সবাই মাঠের মধ্যে একটি শ্যালোমেশিন ঘরে গিয়ে উঠি। একপর্যায়ে বিকট শব্দ শুনতে পাই। এর পর আর কিছু বলতে পারব না। রাতে জ্ঞান ফিরলে দেখি আমি হাসপাতালে। সকালে শুনি সবাই মারা গেছে।’

বজ্রাঘাতে পাঁচ সদস্যকে হারিয়ে শমসের আলীর পরিবারটি পড়েছে অথই সাগরে। একদিকে প্রিয়জন হারানোর বেদনা অন্যদিকে ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে তাদের।

পাশের মাটিকোড়া গ্রামে মৃতদের মধ্যে আট বছর বয়সের শিশু আরিফা খাতুনও রয়েছে। অন্যরা হলেন-আব্দুল কুদ্দুস, শাহ আলম ও কিশোরী রিতু খাতুন।


পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে দিশাহারা শাহ আলমের পরিবার। তার স্ত্রী ববিতা খাতুন বলেন, ‘আমার জীবনে অন্ধকার নেমে এসেছে। আমার সন্তানকে নিয়ে কোথায় যাব আমি। দুপুরে একসঙ্গে ভাত খেয়ে জমিতে গিয়ে স্বামী ফিরেছে লাশ হয়ে। আমার মেয়ের ভবিষ্যৎ কী হবে।’

এই গ্রামের চার শিশু নুরনাহার নদী, নুরজাহান, আমিনা খাতুন ও রুপা খাতুন গুরুতর আহত হয়ে ভর্তি আছে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তাদের বয়স ৭ থেকে ১১ বছরের মধ্যে। 

এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক জুলফিকার আলী বলেন, ‘আমারদের হাসপাতালে চার ছোট মেয়ে ভর্তি আছে। তাদের চিকিৎসা চলছে। তবে দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠাতে হতে পারে।’

উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজ্জ্বল হোসেন বলেন, ‘আমরা এই দুর্ঘটনায় মর্মাহত। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি মৃতদেহ দাফন-কাফনের জন্য তাদের পরিবারকে ২৫ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া স্থানীয় সংসদ সদস্যের পক্ষ থেকে ৫ হাজার ও পৌর মেয়রর পক্ষ থেকে ১০ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া হয়েছে।’


প্রবা/আরকে/ এসআর

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা