চুয়াডাঙ্গা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০২৩ ২০:২৩ পিএম
আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২৩ ২১:১৪ পিএম
চুয়াডাঙ্গায় বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রবা ফটো
চৈত্র মাসে মৃদু থেকে মাঝারি তাপমাত্রা বিরাজ করলেও বৈশাখের শুরু থেকেই তীব্র থেকে অতি তীব্র দাবদাহে পুড়ছে চুয়াডাঙ্গার জনজীবন। চুয়াডাঙ্গায় বুধবার (১৯ এপ্রিল) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাতে এ তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। সেই সঙ্গে আগামী ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত এ তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকবে।
এর মধ্যে তাপমাত্রা কমার এবং বৃষ্টিপাতের কোনো সম্ভাবনা নেই। আবহাওয়ার এ তথ্য দুপুরে নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান।
তিনি বলেন, ’চুয়াডাঙ্গায় প্রতিদিনই দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে। ১৬ দিন ধরে জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে। বুধবার সকাল ৯টায় তাপমাত্রা ছিল ৩১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুপুর ১২টায় তাপমাত্রা বেড়ে ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি হয়ে যায়। এরপর বেলা ৩টায় ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রিতে পৌঁছায়। শুরু হয় অতি দাবদাহ। দিনের চেয়ে রাতের তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ’চুয়াডাঙ্গায় তেমন নদ-নদী নেই। যা আছে সেগুলো প্রায় শুকিয়ে যাচ্ছে। সেচকাজের জন্য মাত্রাতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি উঠানো হচ্ছে। এতে পানির স্তর নিচ থেকে আরও নিচে নেমে যাচ্ছে। গাছপালার সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এ ছাড়া কর্কটক্রান্তি রো বরাবর চুয়াডাঙ্গার অবস্থান হওয়ায় এ জেলায় গ্রীষ্মকালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এবং শীতকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করে।’
এদিকে চুয়াডাঙ্গায় টানা ১৫ দিন ধরে তীব্র দাবদাহে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। গত শনিবার থেকে শুরু হয়েছে অতি দাবদাহ। সেই সঙ্গে কয়েক দিন ধরে দিনে-রাতে যুক্ত হয়েছে অসহনীয় লোডশেডিং।
রোদ আর গরমে রোজাদারদের অবস্থাও ওষ্ঠাগত। সামনে ঈদ, তাই মানুষ জীবন-জীবিকার তাগিদে বাধ্য হয়ে বাইরে বের হচ্ছে। এতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে, দুপুরের পর থেকে বাইরে বের হওয়া দায় হয়ে পড়েছে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছে না কেউ।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়ে, যাতে হিট স্ট্রক, পানিশূন্যতা ও ডায়রিয়া আক্রান্ত না হয় সাধারণ মানুষ। প্রতিদিন শতাধিক মানুষ ডায়রিয়া, পানি শূন্যতায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।
চলমান তাপপ্রবাহে সবচেয়ে কষ্টে আছেন খেটে-খাওয়া দিনমজুর, রিকশা-ভ্যানচালক ও কৃষকেরা। তীব্র রোদে মাঠে টিকতে পারছেন না কৃষক ও দিনমজুর। রাস্তায় ভাড়া মারতে পারছেন না রিকশা-ভ্যানচালকরা।
এদিকে তীব্র খরায় ঝরে যাচ্ছে আম-লিচুর গুটি। বোরো ধান, সবজি ক্ষেতে প্রতিদিন সেচ দিতে হচ্ছে। ফলে বিপাকে পড়েছে কৃষকরা।