দিনাজপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ এপ্রিল ২০২৩ ১২:০৬ পিএম
আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২৩ ১২:১৭ পিএম
দিনাজপুরের গোর-এ-শহীদ ঈদগাহ। প্রবা ফটো
দিনাজপুর গোর-এ-শহীদ বড় ময়দানে এশিয়া উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ ঈদুল ফিতরের জামাত আয়োজনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। বিশাল সৌন্দর্যমণ্ডিত এ ঈদগাহ মাঠে এবার ৬ লাখ মুসল্লির নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জামাত শুরু হবে ঈদের দিন সকাল ৯টায়। আয়োজকরা জানান, সুষ্ঠুভাবে ঈদের জামাত সম্পন্নের জন্য নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা।
গত কয়েক বছর থেকেই দিনাজপুরের গোর-এ-শহীদ বড় ময়দান ও কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দানে ঈদ জামাত নিয়ে দেখা দিয়েছে নানান তর্ক। বিশেষ করে কোন জামাত বড় এ নিয়ে।
তবে এবার দিনাজপুরে ৬ লাখ মুসল্লির যে জমায়েতের প্রত্যাশা করছেন আয়োজকরা, তাতে করে এটিই হতে পারে দেশের সর্ববৃহৎ ঈদ জামাত।
আয়োজকরা জানান, ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায়ের জন্য দিনরাত কাজ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মিনার সংস্কার ও রঙ করা, ধোয়ামোছা, মাঠে মাটি ভরাট, চুনের দাগসহ আনুষঙ্গিক কাজ চলছে। পর্যাপ্ত মাইক লাগানো হচ্ছে মাঠে। এরই মধ্যে মাঠের বিভিন্ন জায়গায় নির্মাণ করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পর্যবেক্ষণের টাওয়ার। ঈদের জামাত সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সুসজ্জিত প্রবেশদ্বারে সিসিটিভি ক্যামেরা, তিন স্তরের সর্বোচ্চ নিরাপত্তাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
দিনাজপুরের পুলিশ সুপার শাহ্ ইফতেখার আহমেদ জানান, আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত বাহিনীর সদস্যরা পোশাকে ও সাদা পোশাকে নিয়োজিত থাকবেন।
২০১৫ সালে নির্মাণকাজ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত সাতটি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে এ ঈদগাহে। করোনার কারণে দুই বছর নামাজ আদায় বন্ধ থাকায় দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর গত বছর ঈদুল ফিতরের নামাজ আবারও আদায় হয়।
গোর-এ-শহীদ ময়দানের মিনারটি ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঈদকার্ডে স্থান পেয়েছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমেও জায়গা করে নিয়েছে ঈদগাহ মাঠটি।
দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ বলেন, দিনাজপুর গোর-এ-শহীদ ময়দানটি ২২ একর জমির ওপর অবস্থিত। মুসল্লিদের সুবিধার্থে ইতোমধ্যে মাঠের কোণে অবস্থিত স্টেশন ক্লাবটি ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এবার ১২ একর জমি নামাজের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। ৫১৬ ফুট দীর্ঘ সর্বোচ্চ ৬০ ফুট উচ্চতার দুটি গম্বুজসহ ৫২টি গম্বুজ রয়েছে। মিনারের দুই ধারে ৬০ ফুট করে দুটি এবং প্রধান মিনারের উচ্চতা ৫৫ ফুট। এর মাঝে আরও ২০ ফুট উচ্চতার ৫২টি গম্বুজ নিয়ে ৫১৬ ফুট প্রস্থের ঐতিহাসিক গোর-এ-শহীদ ময়দানের ঈদগাহ মিনারটি এখন ঐতিহাসিক মিনারে পরিণত হয়েছে। প্রতিটি গম্বুজে দেওয়া হয়েছে বৈদ্যুতিক বাতি।
২০১৫ সালে মাঠের পশ্চিম প্রান্তে মিনার নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন দিনাজপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম। তিনি বলেন, দৃষ্টিনন্দিত মিনারের পাদদেশে খোলা আকাশের নিচে লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতি এবং ঈদের দিনে নামাজ আদায়ের স্বপ্ন দেখেন। এবারের ঈদে প্রায় ৬ লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন বলেও তিনি জানান।
রাজধানী ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, সাতক্ষীরা, টাঙ্গাইল, বগুড়া, রংপুর, নীলফামারী, জয়পুরহাটসহ আশপাশের প্রায় সব জেলার মুসল্লি অংশ নেন এ জামাতে।
জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে দুই দফায় অনুষ্ঠিত হয়েছে ঈদ জামাত প্রস্তুতি সভা। মাঠ পরিদর্শন করেছেন হুইপ ইকবালুর রহিমসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
এবার ঈদের নামাজে ইমামতি করবেন দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতাল জামে মসজিদের খতিব মাওলানা শামসুল হক কাসেমী।