× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বকেয়া টাকা চাওয়ায় দোকানিকে কারণ দর্শানোর নোটিস প্রধান শিক্ষকের!

কুড়িগ্রাম প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২১ এপ্রিল ২০২৩ ১২:২৭ পিএম

আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০২৩ ১৫:০৪ পিএম

বকেয়া টাকা চাওয়ায় দোকানিকে কারণ দর্শানোর নোটিস প্রধান শিক্ষকের!

বকেয়া টাকা চাওয়ায় এক দোকানিকে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উৎপল কান্তি সরকার কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাত দিনের মধ্যে নোটিসের জবাব না দিলে ওই দোকানির সঙ্গে বিদ্যালয়ের বাণিজ্যিক ঘরের চুক্তিপত্র বাতিলের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। গত ১৭ এপ্রিল প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের প্যাডে স্বাক্ষর করে এই নোটিস দেন বলে জানা গেছে। যদিও রমজান ও ঈদ উপলক্ষে বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে।

ওই দোকানির নাম আতাউর রহমান আতা। তিনি দুর্গাপুর বাজারে বিদ্যালয়ের বাণিজ্যিক ঘর ভাড়া নিয়ে টি স্টলের ব্যবসা করে আসছেন। এই দোকানির দাবি, বাকি দিতে অপারগতা জানিয়ে পাওনা টাকা চাওয়ায় তাকে চুক্তি বাতিলের হুমকি দিয়ে নোটিস দেওয়া হয়েছে।

এই দোকানিকে দেওয়া প্রধান শিক্ষকের নোটিসের একটি কপি এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, ১৭ এপ্রিল বিদ্যালয় হতে ওই দোকানে মাল কিনতে যাওয়া বিদ্যালয়ের অফিস সহায়কের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়েছে। এ কারণে তার বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানাতে সাত দিন সময় দেওয়া হয়েছে। জবাব না দিলে দোকানির সঙ্গে বিদ্যালয় কমিটির হওয়া চুক্তি বাতিল করা হবে। 

আতাউর রহমান আতা বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক উৎপল কান্তি সরকার করোনা মহামারির পর থেকে এখন পর্যন্ত স্কুলের নামে আমার দোকান থেকে বাকিতে চা-নাস্তা নিয়ে আসছেন। আমি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। আমি স্যারের কাছে প্রায় ২৭ হাজার টাকা পাই। বিভিন্ন সময় তার কাছে টাকা চাইলে তিনি টালবাহানা করেন। কিন্তু তিনি টাকা দেন না। আড়াই বছর ধরে বকেয়া পড়ে আছে। এর মধ্যে গত ১৭ এপ্রিল তিনি ইফতার নেওয়ার  জন্য আমার দোকানে তার পিয়নকে পাঠান। কিন্তু তিনি লিখিত কোনও স্লিপ দেননি। আমি পিয়নকে স্লিপ ছাড়া ইফতারসামগ্রী দিতে অপারগতা জানিয়ে পাওনা টাকা দেওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষককে বলতে বলি। এরপর আমি ইফতারসামগ্রীও দিয়ে দেই। এ ঘটনার জেরে প্রধান শিক্ষক পরের দিন নোটিস পাঠান। ’

ভুক্তভোগী এই দোকানি বলেন, ‘ওই স্কুলের সাবেক সভাপতি স্কুলের নাম করে আমার দোকানে প্রায় অর্ধ লাখ টাকা বাকি নিয়েছিলেন। সেই টাকাও স্কুল থেকে দেওয়ার কথা থাকলেও এখনও তা দেওয়া হয়নি। এভাবে বাকিতে পণ্য নিয়ে টাকা না দিলে আমি ব্যবসা করবো কেমন করে। আর টাকা চাইলে এখন ডিড বাতিলের ভয় দেখানো হচ্ছে। কিন্তু আমি কার কাছে বিচার  চাইবো সেটাই বুঝতেছি না।’

ইফতার আন‌তে যাওয়া বিদ‌্যাল‌য়ের অফিস সহায়ক মো. সাইদুল ব‌লেন, ‘ইফতার আনার জন‌্য ‌গে‌লে আতা বা‌কি দেওয়া নি‌য়ে আপ‌ত্তি জা‌নি‌য়ে‌ছেন। কিন্তু তিনি আমা‌কে কোনও গা‌লিগালাজ ক‌রেননি। আমার সঙ্গে খারাপ ব‌্যবহারও ক‌রেননি। প্রধান শিক্ষক কেন নো‌টিস দি‌‌য়েছেন আমি জা‌নি না।’

এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার বিকালে প্রধান শিক্ষক উৎপল কান্তি সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। 

জেলা শিক্ষা অফিসার শামসুল আলম বলেন, ‘এ ধরণের নোটিস দেওয়ার কোনও এখতিয়ার প্রধান শিক্ষকের নেই। বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়া প্রধান শিক্ষক এভাবে বিদ্যালয়ের প্যাড ব্যবহার করে কাউকে নোটিস দিতে পারেন না।’

শুধু এই অভিযোগ নয়, প্রধান শিক্ষক উৎপল কান্তি রায়ের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের বাণিজ্যিক ঘরের ভাড়াসহ বিদ্যালয়ের নিজস্ব আয়ের প্রায় আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। তদন্তে এসব অভিযোগের সত্যতা পায় উপজেলা প্রশাসন। এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অবজ্ঞা করে বিদ্যালয় মাঠে প্রতি সপ্তাহে গরুর হাট বসানোর অভিযোগও রয়েছে। 

এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ২০০৪ সালের ৫ নম্বর আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক বরাবর প্রতিবেদন পাঠান কুড়িগ্রামের সাবেক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম। ২০২০ সালে পাঠানো ওই প্রতিবেদন গত দুই বছরেও আলোর মুখ দেখেনি। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নেওয়া হয়নি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা