বিএনপির কর্মিসভা
খুলনা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ মে ২০২৩ ২১:০৫ পিএম
আপডেট : ১৯ মে ২০২৩ ২২:৫১ পিএম
খুলনায় শুক্রবার বিকালে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। প্রবা ফটো
খুলনায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। শুক্রবার (১৯ মে) বিকাল সাড়ে চারটার দিকে খুলনা প্রেস ক্লাবের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস ও শটগানের গুলি ছুড়েছে পুলিশ। এতে ৪০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি বিএনপির। দলটির নেতাদের অভিযোগ, ঘটনাস্থল থেকে ৩০-৩৫ জনকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। তবে বাহিনীটি বলছে, বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও লাঠি দিয়ে আঘাত করেছেন। এতে ৬-৭ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
বিএনপি, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খুলনা প্রেস ক্লাবের শহীদ আবু নাসের ব্যাংক্যুয়েট হল চত্বরে কর্মিসভা ও বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজন করে বিএনপির খুলনা জেলা ও মহানগর শাখা। বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে এটি শুরু হয়। খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে সেখানে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা আজিজুল বারী হেলাল, শামিমুর রহমান শামীম, খুলনা মহানগরের সদস্য সচিব শফিকুল ইসলাম তুহিন, জেলা বিএনপির সভাপতি আমীর এজাজ খান, সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পীসহ মহানগর ও জেলার নেতাকর্মীরা।
সভা শুরুর কিছুক্ষণ পর মিছিল বের করার চেষ্টা করেন নেতাকর্মীরা। তখন পুলিশ বাধা দিলে প্রেস ক্লাবের সামনে অনেকে বসে পড়েন। দুই পক্ষের তর্কাতর্কির একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বিএনপির নেতাকর্মীরা।
খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম মনা বলেন, ‘কেন্দ্রঘোষিত সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের ১০ দফাসহ নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, হয়রানি, নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে ও অন্যান্য দাবিতে খুলনা জেলা কার্যালয়ের সামনে জনসমাবেশের আয়োজন করা হয়। সেখানে পুলিশ বাধা দেয়। পরে প্রেস ক্লাবের সামনে কর্মিসভা ও বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজন করা হয়। সেখানেও বাধা দিয়ে পণ্ড করে দিয়েছে পুলিশ। আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এটির প্রতিবাদে আমরা কর্মসূচি ঘোষণা করব।’
বিএনপি জনসমাবেশের অনুমতি নেয়নি বলে জানিয়েছেন খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন। তিনি বলেন, ‘অনুমতি ছাড়া জনসমাবেশের চেষ্টা করছিল তারা। বাধা দেওয়ায় পুলিশের ওপর হামলা করেছে।’
তবে খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনের অভিযোগ, কর্মিসভা ও বিক্ষোভ সমাবেশ পণ্ড করতে পুলিশ লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস ও গুলি ছোড়ে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ৪০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন দিঘলিয়া সেনাটি ইউনিয়ন বিএনপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মুজিবুর রহমান, ১২ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদুর রহমান রিপন, পাইকগাছা উপজেলার যুবদল নেতা তাজমুল হোসেন। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তা ছাড়া পুলিশ আমাদের ৩০-৩৫ জন নেতাকর্মীকে ধরে নিয়ে গেছে।’
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মাদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘কর্মিসভা থেকে মিছিল বের করে রাস্তায় অবস্থান নেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এতে যান ও মানুষ চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। সরে যেতে বললে তর্কে জড়িয়ে পড়েন তারা। একপর্যায়ে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। আত্মরক্ষায় পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও শটগানের গুলি ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির নেতাকর্মীদের হামলায় পুলিশের ৬-৭ জন সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে ১০জনকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’