× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

উদ্বোধনের দুই মাসেই বেহাল আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২১ মে ২০২৩ ১৪:০১ পিএম

আপডেট : ২১ মে ২০২৩ ১৭:০১ পিএম

কলাপাড়ার লতাচাপলী ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পের রাস্তায় পানি জমে আছে। দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির সংকট। প্রবা ফটো

কলাপাড়ার লতাচাপলী ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পের রাস্তায় পানি জমে আছে। দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির সংকট। প্রবা ফটো

‘আগে ঘর আছিল না, মানুষের বাড়িতে থাকতাম। শেষ বয়সে কই থাকমু, এইডা লইয়া সব সময় চিন্তা করতাম। সরকারি পাকা ঘর পাইয়া সব চিন্তা শেষ হইছিল। আমাগো মতো ঘরহারা মানুষের খুশির সীমা ছিল না। ওই ঘরই অহন বড় দুশ্চিন্তার কারণ হইয়া দাঁড়াইছে। ফ্লোরের আস্তরণ ও দেওয়ালের রং উইঠা গেছে। দেওয়ালের বালু আগলা হইয়া পইড়া যাইতাছে। বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। টিনের চাল দিয়া পানি পড়ে। ঘরের দরজা-জানালা ভাঙা। খাওয়ার পানিরও সংকট আছে।’ 

কথাগুলো বলছিলেন পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের নয়াপাড়া এলাকার আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা মোসাম্মৎ সাথী বেগম। তিনি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৪৫ নম্বর ঘরের বাসিন্দা।

একই অবস্থা ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধিকাংশ ঘরের। বসবাসরত পরিবার ও স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করায় অনেক ঘরের ফ্লোরের প্লাস্টার ও রং এখনই উঠে যাচ্ছে। অপরদিকে অনেকে ঘরে ওঠার সময়ই ঘরের দরজা-জানালা ভাঙা ছিল।

৪৫ নম্বর ঘরের বাসিন্দা সাথী বেগম বলেন, ‘আমরা ঘরে ওঠার সময় পেছনের একটা দরজা ও সামনের একটি জানালা ভাঙা পাই। পেছনের জানালার একটি পার্ট ছিলই না। এরপর পানি ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা হয়নি। ফলে দুর্ভোগের শেষ নেই।’

৪৭ নম্বর ঘরের তারেক হোসেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর পাইয়া আমরা খুবই খুশি। ঘর নির্মাণের সঙ্গে যারা জড়িত, তারা নিম্নমানের উপকরণ দিয়া কাজ করায় আমরা ভোগান্তির মধ্যে আছি।’

৫৯ নম্বর ঘরের লাল বরু বলেন, ‘আমরা ঘর পাইছি সত্য, কিন্তু এখন পর্যন্ত পানি ও বিদ্যুৎ পাই নাই। পানি ও বিদ্যুতের কারণে আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে।’ ২৩ নম্বর ঘরের মোহাম্মদ ছিদ্দিক বলেন, ‘থাকার ঘর হয়েছে কিন্তু পানি ও বিদ্যুৎ পাইনি। বৃষ্টি হতে না হতেই চলাচলের পথে পানি জইমা যাচ্ছে।’

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে আশ্রয়ণ প্রকল্পের জমি ও ঘর দেওয়ার কাজ শুরু হয়। এর অংশ হিসেবে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় এ উপজেলার নয়াপাড়া এলাকায় ৬৪টি ভূমিহীন পরিবারকে ২ শতাংশ খাসজমি বন্দোবস্ত দিয়ে একটি করে সেমিপাকা ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়। প্রতিটি ঘর নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকা। প্রকল্পের অধীনে নির্মাণাধীন কাজের দেখভাল করছে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন।

আশ্রয়ণের ঘরের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় সবার ঘরেরই কিছু না কিছু সমস্যা আছে। তাদের ভাষ্য, ঘর পাকা হলেও ভয় নিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে। অল্প টাকায় বারান্দাসহ তিন কক্ষের ঘর বানানো হয়েছে। কাজ হয়েছে একেবারে নিম্নমানের। দেওয়া হয়নি পরিমাণ মতো সিমেন্ট। এ কারণে এখনই ঘরের ফ্লোরের প্লাস্টার উঠে যাচ্ছে। ঘর হস্তান্তরের সময় রং করে চাকচিক্য দেখানো হয়েছিল। পাঁচ বছর টিকবে কি না সন্দেহ আছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা হুমায়ুন কবিরের তত্ত্বাবধানে একটি ঘরের জন্য ২ লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকা বরাদ্দে এসব ঘর নির্মাণ করা হয়। গত ২১ মার্চ প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসব ঘর উদ্বোধন করেন। এরপর উপকারভোগীরা সেখানে বসবাস শুরু করেন। তবে বর্ষা আসার আগেই অধিকাংশ ঘরের ছাদ থেকে পানি পড়া শুরু হয়েছে। উদ্বোধনের দুই মাস অতিবাহিত হলেও ওইসব পরিবারের জন্য পানি ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়নি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামে মুজিব শতবর্ষের ঘর নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ করেছেন উপকারভোগীরা। তাদের অভিযোগ, আশ্রয়ণ প্রকল্পের এসব ঘর নির্মাণে নিম্নমানের ইট, বালু, কাঠ, টিন ও প্রয়োজনের তুলনায় সিমেন্ট কম ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে নির্মাণকৃত ঘর কোনোটা উঁচু কোনোটা নিচু। মনে হচ্ছে নিচু ঘরে ইট কম ব্যবহার করা হয়েছে।

লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনছার উদ্দিন মোল্লা বলেন, ঘরে যেসব ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়েছে সেসব ঠিক করার কাজ প্রক্রিয়াধীন আছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: protidinerbangladesh.pb@gmail.com

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: pbad2022@gmail.com

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: pbonlinead@gmail.com

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: pbcirculation@gmail.com

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা