বোরো ধানের কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে হতাশায় পড়েছেন দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার কৃষকরা। বর্তমানে বাজারে যে দামে ধান বিক্রি হচ্ছে তাতে কোনোমতে উৎপাদন খরচ উঠে আসছে। এতে লাভ হচ্ছে না তাদের। এজন্য ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৪ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৫ হেক্টর বেশি। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েরেছ ৯৩ হাজার ২৯১ মেট্রিক টন। ইতোমধ্যে ৮০ থেকে ৮২ ভাগ জমির ধান কাটাসহ মাড়াই শেষ হয়েছে।
রবিবার (২১ মে) উপজেলার অম্রবাড়ী গ্রামের কৃষক মুকুল হোসেন ফুলবাড়ীর ধানহাটি বাজারে ১ হাজার ৪০ টাকা মণ দরে ধান বিক্রি করেছেন। তিনি জানান, ৮ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষাবাদ করেছেন। ৩৩ শতকের বিঘায় ফলন হয়েছে গড়ে ২৮ থেকে ৩০ মণ। ফলনে খুশি হলেও ধান বিক্রি করতে গিয়ে কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে হতাশ।
মুক্তারপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল আলী জানান, ধান একটু কাঁচা থাকায় ৯২০ টাকা মণ দরে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন। গত এক সপ্তাহ থেকে হাটবাজারে ধানের দাম কম। ভরা মৌসুমে হাটবাজারে প্রচুর ধান উঠলেও ব্যবসায়ীরা কিনছেন কম। তারা সিন্ডিকেট করে এমনটা করছেন বলে অভিযোগ তার। ফলে অনেক কৃষক ধান বিক্রি না করে নিয়ে যাচ্ছেন।
লক্ষ্মণডাঙ্গা গ্রামের প্রান্তিক চাষি রাম চন্দ্র বলেন, কাটা, মাড়াই, সেচ, জমির বর্গার টাকাসহ বিভিন্ন ব্যয় মেটাতে ধান ওঠার পরপরই ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের ধান বিক্রি করতে হয়। ধানের দাম অস্বাভাবিকভাবে পড়ে গেছে। বর্তমান দামে ধান বিক্রি করে উৎপাদন খরচ উঠলেও লাভ হবে না।
উপজেলার বিভিন্ন সাপ্তাহিক ধানের হাটে গত তিন দিনে মোটা এবং চিকন জাতের নানা নামের ধান ভিন্ন ভিন্ন দরে বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে ব্রি-২৯ ধান বিক্রি হচ্ছে শুকনো প্রতি মণ ১ হাজার ২০ টাকা থেকে ১ হাজার ৪০ টাকা এবং ভিজা ৯২৫ থেকে ৯৫০ টাকায়। একইভাবে ব্রি-৯০ ধান ১ হাজার ১০০ টাকা; কাটারিভোগ জাতের ধান ১ হাজার ২২০ টাকা; মিনিকেট ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ১৭৫ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। স্থানীয় জাত গুটিস্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা দরে।
ফুলবাড়ী পৌর শহরের ধান ব্যবসায়ী দীপক পালিত, শাহজাহান হোসেন, নাসির উদ্দিন লাবুসহ কয়েকজন জানান, একসঙ্গে প্রত্যেক এলাকার ধান হাটবাজারে আসায় দাম কমে গেছে। বিভিন্ন অঞ্চলের মহাজনরা ধান কেনা শুরু না করায় এমন অবস্থা হয়েছে। তারা ধান কেনা শুরু করলে দাম বাড়বে। তা ছাড়া স্থানীয় অটোরাইস মিলগুলোও ধান কেনার বিষয়ে তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছে না বলে জানান তিনি।
জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুম্মান আক্তার বলেন, এ বছর উপজেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে কৃষি বিভাগ ও কৃষক উভয়ই খুশি। ধানের দাম ওঠানামা করে। এখন সরকারি গুদামে ধান কেনা শুরু হয়েছে, সেখানে ধান বিক্রির জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি
প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু
রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯
যোগাযোগ
প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯, +৮৮০১৮১৫৫৫২৯৯৭ । ই-মেইল: [email protected]
সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]
2023 Protidiner Bangladesh All Rights Reserved. Developed By Protidiner Bangladesh Team.