× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

বাড়ছে উত্তাপ, রংপুরে পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই প্রধান ৩ দলের

মেরিনা লাভলী, রংপুর

প্রকাশ : ২৬ মে ২০২৩ ১২:০৩ পিএম

আপডেট : ২৬ মে ২০২৩ ১৩:০২ পিএম

জাতীয় সংসদ। ফাইল ফটো

জাতীয় সংসদ। ফাইল ফটো

ঘনিয়ে আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। মাঠে সক্রিয়তা দেখাতে রাজনৈতিক দলগুলোর হাইকমান্ড নেতাদের তৃণমূলে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। অথচ রংপুরে প্রধান তিন দলেরই পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই।

আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে চলছে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি। কবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে তা জানেন না নেতারা। দলে পদ না থাকায় অনেক নেতা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ঝিমিয়ে পড়ছেন। তাই দলে গতিশীলতা বাড়াতে দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কথা বলছেন নেতাকর্মীরা।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া বিপুল ভোটে পরাজিত হয়ে জামানত হারান। নির্বাচনের পর থেকে রংপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি রংপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে হাইকমান্ড। এতে রংপুর মহানগর শাখায় ডা. দেলোয়ার হোসেনকে আহ্বায়ক ও আবুল কাশেমকে যুগ্ম আহ্বায়ক এবং জেলা শাখায় একেএম ছায়াদত হোসেন বকুলকে আহ্বায়ক ও অধ্যাপক মাজেদ আলী বাবুলকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়।

এরপর ১১ ফেব্রুয়ারি ১০১ সদস্যবিশিষ্ট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটিকে দলের নেতাকর্মীদের অনেকেই স্বাগত জানান। জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন হওয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে কবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হবে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যক্রম আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। ফলে দলের নেতাদের অনেকে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। এদিকে নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভক্তি প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। 

কাউনিয়ায় আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটি ও পদবঞ্চিতদের সংঘর্ষে গত ২৪ এপ্রিল সোনা মিয়া নামে এক কর্মী নিহত হয়েছেন। এদিকে মিঠাপুকুরে এমপি এইচএন আশিকুর রহমান ও উপজেলা চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সরকারের মধ্যে বিরোধ দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। তাই আওয়ামী লীগের কোন্দল রুখতে দ্রুত সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন নেতাকর্মীরা।

জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ছায়াদাত হোসেন বকুল বলেন, তারা দলকে সুসংগঠিত করেছেন। কেন্দ্রের নির্দেশ পেলেই সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হবে। তাদের মাঝে কোনো বিভেদ নেই। 

মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য সচিব আবুল কাশেম বলেন, মহানগর আওয়ামী লীগ আগের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে দলের নেতাকর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করছে। জাতীয় নির্বাচনের আগে কমিটি হলে কার্যক্রম আরও বেগবান হবে।

অন্যদিকে ২০২২ সালের এপ্রিলে দীর্ঘ পাঁচ বছর পর রংপুর জেলা ও মহানগর বিএনপির মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে আহ্বায়ক কমিটি দেয় বিএনপি। ঘোষিত জেলা বিএনপির কমিটিতে বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলামকে আহ্বায়ক এবং মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান লাকুকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। ৩৬ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে বিলুপ্ত কমিটির সহসভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আফসার আলীকে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে মনোনীত করা হয়।

এ ছাড়া মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি সামসুজ্জামান সামুকে আহ্বায়ক ও মহানগর যুবদলের সভাপতি মাহফুজ উন-নবী ডনকে সদস্য সচিব করে ৪২ সদস্যবিশিষ্ট রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয় কেন্দ্র থেকে। সেই কমিটি দিয়ে চলছে দলের ১০ দাবি আদায়ের আন্দোলন। ওদিকে আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর থেকে দলের শীর্ষে থাকা নেতারা অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছেন। রাজনৈতিক কর্মসূচিতে তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ চোখে পড়ে না। তাই দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমে গতিশীলতা ও ঐক্যবদ্ধতা ধরে রাখতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের বিকল্প নেই বলছেন নেতারা।

মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামছুজ্জামান সামু বলেন, রংপুর নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডে কমিটি গঠনের কাজ চলমান রয়েছে। এ ছাড়া জেলা ও মহানগর বিএনপি একসঙ্গে এবং পৃথকভাবে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় কর্মসূচি সফলভাবে পালন করছে। বিএনপির সব নেতাকর্মী রাজপথে রয়েছে। ১০ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথেই থাকবে। কেন্দ্রের নির্দেশনা পেলে সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে। 

এদিকে রংপুরকে নিজেদের দুর্গ দাবি করা জাতীয় পার্টির জেলা কমিটি চলছে আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে। মহানগর জাতীয় পার্টির পূর্ণাঙ্গ কমিটি থাকলেও জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেনি তারা। রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ছিলেন বহিষ্কৃত নেতা বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা।

২০২২ সালে চেয়ারম্যান জিএম কাদের তাকে বহিষ্কার করে জেলা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন। সেই সঙ্গে ওই বছর ২০ সেপ্টেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল মাসুদ নান্টুকে আহ্বায়ক ও আব্দুর রাজ্জাককে সদস্য সচিব করে ৩১ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এরই মধ্যে চলতি বছর ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান আবুল মাসুদ নান্টু।

এরপর থেকে ওই পদ কাউকে দেওয়া হয়নি। ফলে আহ্বায়ক ছাড়াই চলছে জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক কার্যক্রম। চলতি বছর ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হলে এ আহ্বায়ক কমিটি নির্বাচনে শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারবে কি না তা নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে সংশয় রয়েছে।

জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাক বলেন, জাতীয় পার্টির ঘাঁটি রংপুরে তাদের দল আগের চেয়ে বেশি শক্তিশালী। সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে তারা সক্ষমতা দেখিয়েছেন। সম্মেলনের মাধ্যমে দ্রুত কমিটি গঠন করা হবে।

গত ২৪ মে রংপুর সফরে এসে পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের তৃণমূল পর্যায় থেকে দলকে শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্ব দিতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: protidinerbangladesh.pb@gmail.com

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: pbad2022@gmail.com

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: pbonlinead@gmail.com

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: pbcirculation@gmail.com

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা