নরসিংদীতে ছাত্রদলের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ আরেক নেতার মৃত্যু

নরসিংদীর শহরতলি চিনিশপুরে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ আরেক ছাত্রদল নেতা আশরাফুল ইসলাম মারা গেছেন। শুক্রবার (২৬ মে) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

এর আগে বৃহস্পতিবার নরসিংদী সদর থেকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাদেকুর রহমানকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। তবে এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি।

আশরাফুলের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতা মাইনুদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘গতকাল সাদেক মারা যায়। আর আজ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আশরাফুলও মারা গেল। আমরা এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’

নিহত আশরাফুল পৌর শহরের সাটিরপাড়া এলাকার নাজমুল হকের ছেলে আর সাদেকুর নরসিংদীর শহরতলি হাজীপুর ইউনিয়নের বাদুয়ারচর গ্রামের মৃত আলাউদ্দিন মিয়ার ছেলে।

বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টার দিকে চিনিশপুরে জেলা বিএনপি কার্যালয়ের পাশে সংঘর্ষ ঘটে। এ সময় সাদেকুরের মাথায় গুলি লাগে। আর পেটে গুলি লাগে আশরাফুলের। তারা সবশেষ ঘোষিত জেলা ছাত্রদলের কমিটিতে পদ পাননি।

তাদের মৃত্যুর জেরে কাল রাতে সাদেকুরের নিজ এলাকা হাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলামের বাড়িতে আগুন দেওয়াসহ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতারা জানান, ২৬ জানুয়ারি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদকে সভাপতি, মাইনুদ্দিন ভূঁইয়াকে সিনিয়র সহসভাপতি ও মেহেদী হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা ছাত্রদলের পাঁচ সদস্যের আংশিক কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।

এর পর থেকেই ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবিতে পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতাকর্মীরা আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন। এর জেরে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা আহ্বায়ক খায়রুল কবীর খোকনের চিনিশপুরের বাসভবন তথা জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে একাধিকবার হামলার ঘটনা ঘটে।

ছাত্রদলের কমিটি বাতিলের আন্দোলনের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার বিকালে চিনিশপুরে জেলা বিএনপি কার্যালয়ের কাছে মোটরসাইকেল শোডাউন করে বিক্ষোভ করেছিলেন পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। এ সময় ছাত্রদলের অন্য গ্রুপের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। এ সময় মাথায় ও পিঠে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন সাদেক ও আশরাফুল।

পরে তাদের উদ্ধার করে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দুজনকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়। সেখানে গতকাল সাদেক মারা যান। এক দিন পর শুক্রবার সকালে মারা যান আশরাফুলও।