মানিকগঞ্জ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ মে ২০২৩ ২১:০৭ পিএম
প্রবা ফটো
নানা আকৃতির ঘুড়ি উড়ছে আকাশে। কইরা, চিলা, পতেঙ্গা, প্রজাপতি, ডোল, নৌকা- রয়েছে এমন বাহারি নামও। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তীতে স্মৃতিবিজড়িত মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকার পোদ্দার বাড়ি মাঠে চলছে ঘুড্ডি মেলা। উৎসবকে ঘিরে সেখানে বসেছে গ্রামীণ মেলা। মেলায় খাবার দোকান, খেলনা, বেলুন শুটার, প্রসাধনী সামগ্রীর পাশাপাশি রয়েছে ঘুড়ি বিক্রির দোকানও। বিভিন্ন এলাকা থেকে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা। শুক্রবার(৫ মে) মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে এমনটাই দেখা গেছে।
এ ঘুড্ডি উৎসব ও মেলার আয়োজন করেছে জাতীয় লোক সাহিত্য সংগ্রহ ও গবেষণা কেন্দ্র। আয়োজক কমিটি সূত্রে জানা গেছে, ২১ বছর আগে এ মেলার আয়োজন করেন স্থানীয় প্রবীণ নাট্যকার ও নির্দেশক, জাতীয় লোক সাহিত্য সংগ্রহ ও গবেষণা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বাবু রঞ্জন সাহা। তিনি বেঁচে না থাকলেও মেলার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে স্থানীয় সাংস্কৃতিক কর্মীদের নিয়ে উদযাপন কমিটি করা হয়েছে।
প্রতিবছর ২৫-২৭ মে তিনদিন ব্যাপী এই মেলা হয়ে থাকে। মেলায় ঘুড়ি উড়ানোর পাশাপাশি নজরুল সংগীত, নৃত্য ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃত্তি, লোকযাত্রা, নাটকসহ কাবাডি খেলারও আয়োজন রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বিকালে এ মেলার উদ্বোধন করেন মানকিগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম।
উদ্বাধনের পর থেকেই মেলা স্থলে আসতে থাকে শতশত ঘুড়িপ্রেমী শিশু, কিশোরসহ নানা বয়সী মানুষ। পরিবার পরিজন নিয়ে আসছেন বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা সানোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘এখানে এসে ছোট বেলার স্মৃতি মনে পড়ে গেল। এমন সময়ে বিকালে কত রকমের ঘুড়ি আকাশে উড়িয়েছি। বর্তমান প্রজন্ম সেই আনন্দ থেকে বঞ্চিত। আমার সন্তান আজই দেখলো কীভাবে আকাশে ঘুড়ি উড়ে।’
তিন বন্ধু নিয়ে মেলায় এসেছেন কিশোর রাজিব হোসেন রাব্বি। সাথে প্রায় ৪ ফুটের মতো একটি চিলা ঘুড়ি। তিনি জানালেন, মেলা উপলক্ষ তার বড় ভাই ঘুড়ি ও সুতা কিনে দিয়েছেন। এটা উড়াতেই এখানে আসা। তার মতো অনেকেই এসেছেন ঘুড়ি উড়াতে।
আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক সৈয়দ রইস উদ্দিন বলেন, ‘এই মেলার জনক জাতীয় লোক সাহিত্য সংগ্রহ ও গবেষণা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বাবু রঞ্জন সাহা। তিনি এ অঞ্চলের প্রবীণ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন। দুই দশকের এই আয়োজন এখন স্থানীয় সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। আগামীতে ব্যাপকতা বৃদ্ধির জন্য তরুণ সাংস্কৃতিক কর্মীদের নিয়ে কাজ করছি।’
সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম বলেন, ‘ঘুড়ি উড়ানো, মেলা- এগুলো গ্রামীণ ঐতিহ্য। আমাদের ঐতিহ্যকে হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবেনা। এমন আয়োজনের মাধ্যমে আমাদের সন্তানেরা মাদক, সন্ত্রাস থেকে দূরে থাকবে।’