রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ মে ২০২৩ ২১:২৪ পিএম
আপডেট : ২৬ মে ২০২৩ ২১:৫৬ পিএম
রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া এলাকার চিনখলা গ্রামে মোশা বাহিনীর সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষ। প্রবা ফটো
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গ্রামবাসী ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী মোশারফ হোসেন মোশাসহ তার বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। পুলিশ বাদী হয়ে একটি এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর পক্ষে আরেকটি মামলা করা হয়।
সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর আক্রমণের অভিযোগে শুক্রবার (২৬ মে) মোশারফ হোসেন মোশা ও তার বাহিনীর ২৪ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত ৭০-৮০ জনকে আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় মামলা করেন থানার এসআই আমিনুর রহমান।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন—আবু মিয়া, জায়েদা খাতুন, মারুফা খাতুন, আলো, আনোয়ার হোসেন ধলকু, বদিউজ্জামান বদি, সাখাওয়াত উল্লাহ, নীরব, স্বাধীন, নাজমুল, ওয়াসিম, রিফাত, রায়হান, দেলোয়ার, তাজেল, রুবেল, লিটন, আমির হামজা, জয়নাল, শাহাজালাল, নুর জাহান, সালেহা, আলী আজগর ও এমারত।
মামলার বাদী জানান, মোশারফ হোসেন মোশার হুকুমে ও নেতৃত্বে উল্লিখিত আসামিসহ অজ্ঞাতপরিচয় ৭০-৮০ জন অস্ত্রসহ পুলিশের সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের ওপর অতর্কিত আক্রমণ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এ সময় আসামি আনোয়ার হোসেন ওরফে ধলকুর ছোড়া ইটপাটকেলের আঘাতে পুলিশ পরিদর্শক আতাউর রহমান, সাখাওয়াত উল্লাহর ছোড়া ইটপাটকেলে পুলিশ পরিদর্শক তন্ময় মণ্ডল, নীরবের ছোড়া ইটপাটকেলে এসআই অলিউল্লাহ, স্বাধীনের ছোড়া ইটপাটকেলে এসআই শহিদুল ইসলাম এবং আসামি নাজমুলের ইটপাটকেলে পুলিশ সদস্য আল-আমিনসহ কয়েকজন নারী পুলিশ সদস্য আহত হন। এ সময় জানমাল রক্ষার্থে পুলিশ ২২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ৩৪ মামলার আসামি মোশাকে প্রধান আসামি করে তার বাহিনীর ৩৭ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় ৬০-৭০ জনকে আসামি করে অপর মামলাটি করেন।
বাদীর অভিযোগ, পিস্তল, ককটেল, লোহার রড, চাপাতি, রামদা নিয়ে গ্রামবাসীকে ঘেরাও করে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে মোশা বাহিনীর সদস্যরা। চাঁদার টাকা না পেয়ে গ্রামবাসীর ওপর তারা হামলা করে।
এই মামলার আসামিরা হলেন—আনোয়ার হোসেন ধলকু, আলী আজগর ভূঁইয়া, বদিউজ্জামান বদি, সাখাওয়াত উল্লাহ, নীরব, স্বাধীন, নাজমুল, আব্বাস, ওয়াসীম, রিফাত, রায়হান, দেলোয়ার, অনিক, সূজন, তাজেল, রুবেল, লিটন, আমির হামজা ওরফে ভূট্টু, জয়নাল, কবির, শাহাজাদা, শিহাব, আরমান, কামাল, আলী, সোবহান, নূর ইসলাম, নিলু, এমারত, আমির মিয়া, তৃপ্তি, নাসরিন, আলম তারা, নূর জাহান ও চুমকী।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন, ’আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে। গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
এর আগে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া এলাকার চিনখলা গ্রামে মোশা বাহিনীর সঙ্গে গ্রামবাসীর দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে যাওয়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ওপরও চড়াও হয় মোশা বাহিনী।
পুলিশ মোশাকে গ্রেপ্তার করার পর তার সহযোগীরা হামলা চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তাদের হামলায় পুলিশ ও গ্রামবাসীসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন অন্তত তিনজন। পরে অভিযান চালিয়ে ওই এলাকা থেকে মোশা বাহিনীর তিন নারী সদস্যসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।