গাজীপুরের শ্রীপুরে সিজারিয়ান অপারেশনের পর নবজাতককে বিক্রি করে বিল আদায়ের অভিযোগে নিউ এশিয়া ডায়াগনস্টিক ও প্যাথলজি হাসপাতালকে জরিমানা ও কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত।
শুক্রবার (২৬ মে) সন্ধ্যা ৭টায় শ্রীপুর চৌরাস্তা এলাকার ওই হাসপাতালে ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে এই নির্দেশনা দেন।
অভিযোগ উঠেছে, হাসপাতালের পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম ওই নবজাতককে ৩০ হাজার টাকায় অজ্ঞাত ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেন। পরে হাসপাতালের বিল রেখে প্রসূতি মাকে ১৪ হাজার টাকা হাতে দিয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড় দেন।
প্রসূতি মায়ের নাম প্রিয়া আক্তার। বাবার নাম রাসেল। প্রিয়া-রাসেল দম্পতি শ্রীপুর পৌরসভার পটকা বাবুল সরকারের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তাদের আরও দুই কন্যা রয়েছে। প্রিয়া গৃহিনী এবং রাসেল দিনমজুর।
রাসেল ময়মনসিংহের তারাকান্দা থানার মালিডাঙ্গা গ্রামের আবু হানিফার ছেলে। প্রিয়া বরিশালের হিজলা উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের ফারুখ হাওলাদারের মেয়ে।
রাসেল বলেন, গত রবিবার আমার স্ত্রীর প্রসব ব্যাথা উঠলে শ্রীপুর চৌরাস্তা নিউ এশিয়া ডায়াগনস্টিক ও প্যাথলজি হাসপাতালে ভর্তি করি। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে হাসপাতালের পরিচালক জাহাঙ্গীর সিজারিয়ান অপারেশনের পরামর্শ দেন। দ্রুত অপারেশন না করালে মা ও সন্তানের ক্ষতি হতে পারে বলে জানান। তখন আমি জানাই আমার কাছে সিজার করার টাকা নেই। এ কথা শুনে পরিচালক বাচ্চা বিক্রির প্রস্তাব দেন। ছেলে হলে ৫০ হাজার এবং মেয়ে হলে ৩০ হাজার টাকা দেবে বলে জানায়। এই টাকা থেকে আবার সিজারের খরচ রেখে দেওয়ার কথা বলে।
রাসেল জানান, রবিবার সন্ধ্যা ৭টায় প্রিয়া সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়।
পরের দিন সোমবার জাহাঙ্গীর অজ্ঞাত কোনো এক ব্যক্তির হাতে নবজাতককে বিক্রি করে দেন। তবে কার কাছে সন্তানকে বিক্রি করেছে তা জানতে পারেনি রাসেল দম্পতি। পরে জাহাঙ্গীর দম্পতিকে ১৪ হাজার টাকা দিয়ে জানায়, মেয়েকে বিক্রি করে ত্রিশ হাজার টাকা পাওয়া গেছে তা থেকে ১৬ হাজার টাকা হাসপাতালের বিল কেটে রাখা হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যায় বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়ভাবে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে সাংবাদিকরা হাসপাতালে গিয়ে তথ্য চাইলে তারা বিষয়টি অস্বীকার করে।
হাসপাতালের পরিচালক জাহাঙ্গীর বলেন, প্রিয়া-রাসেল দম্পতির সম্মতি নিয়েই সিজার করা হয়েছে। সন্তানকে তারাই বিক্রি করে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করেছে।
শ্রীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আল মামুন বলেন, বিষয়টি জানার পর শুক্রবার ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ওই হাসপাতালকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কাগজপত্রে ত্রুটি থাকায় হাসপাতালের সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল ফজল মো. নাসিম বলেন, নবজাতক বিক্রি করে হাসপাতালের বিল পরিশোধের বিষয়ে কেনো অভিযোগ পাইনি। তবে বিষয়টি আমি শুনেছি এবং জানতে পেরেছি ভ্রাম্যমান আদালত হাসপাতালের সকল কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। নবজাতক বিক্রির বিষয়ে কোনো অভিযোগ আসলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।
সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি
প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু
রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯
যোগাযোগ
প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯, +৮৮০১৮১৫৫৫২৯৯৭ । ই-মেইল: [email protected]
সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]
2023 Protidiner Bangladesh All Rights Reserved. Developed By Protidiner Bangladesh Team.