× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

হাজার কোটি টাকার জমি প্রভাবশালীদের দখলে

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৮ জুন ২০২৩ ০১:২৫ এএম

আপডেট : ০৮ জুন ২০২৩ ১১:৫১ এএম

প্রবা ফটো

প্রবা ফটো

কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়ায় সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের অন্তত হাজার কোটি টাকা মূল্যের অধিগ্রহণ করা জমি প্রভাবশালীরা দখল করে রেখেছে। এখনও অব্যাহত রয়েছে দখলপ্রক্রিয়া। উচ্ছেদ-নোটিসকেও তোয়াক্কা করছে না দখলবাজরা। জমির দাম বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সড়কের জমি দখলও। জনবল সংকটের পাশাপাশি নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী না থাকায় জমি রক্ষায় অসহায় সওজ কর্তৃপক্ষ। 

জাতীয় মহাসড়কের মাতামুহুরি সেতু থেকে থানা রাস্তার মাথা পর্যন্ত চকরিয়া পৌর শহরের এক কিলোমিটার সড়ক। এই সড়কের জন্য ১৯৫৫ সালে জমি অধিগ্রহণ হয়েছিল ৩২ দশমিক ৫১ একর। সেই জমি থেকে ২০ একরের বেশি এখন বেদখলে রয়েছে। দখলবাজরা মূল্যবান এই জমিতে বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তুলে দিব্যি ব্যবসা করে যাচ্ছে। এই এক কিলোমিটার সড়কের জমির মূল্য আকাশচুম্বী। প্রতি গণ্ডা জমির দাম কমপক্ষে ২০ লাখ টাকা। এ হিসাবে ২০০ কোটি টাকা মূল্যের ২০ একরের বেশি সড়কের জমি প্রভাবশালীরা দখলে নিয়েছে। এখানে কাউকে দখল থেকে উচ্ছেদ করলেই হুমকি-বাধা আসে। উচ্ছেদের কয়েক ঘণ্টা পরই ফের স্থাপনা নির্মাণ করে দখলবাজরা। এভাবে চকরিয়া ও পেকুয়ায় ১১টি সড়কের অধিগ্রহণ করা অন্তত হাজার কোটি টাকা মূল্যের জমি প্রভাবশালীদের দখলে রয়েছে।

এ তথ্য প্রতিদিনের বাংলাদেশকে নিশ্চিত করেছেন চকরিয়া সড়ক উপবিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ দিদারুল ইসলাম। তিনি জানান, চকরিয়া ও পেকুয়ায় সওজের তত্ত্বাবধানে ১১টি সড়ক রয়েছে। তার মধ্যে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কের ৩৯ কিলোমিটার, ২টি আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাক্রমে (চকরিয়া-বদরখালী) ১৭ কিলোমিটার, পটিয়া-আনোয়ারা-বাঁশখালী-টৈইটং-ঈদমনী ৭৬ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়কের মধ্যে চকরিয়া ও পেকুয়ার (টৈটং-ঈদমনী) অংশে পড়েছে ১৮ কিলোমিটার। দুই উপজেলায় জেলা মহাসড়ক রয়েছে ৮টি। মোট ১৪২ কিলোমিটারের সড়কগুলো হলোÑ হারবাং-টৈটং, ইয়াংচা-মানিকপুর-শান্তিবাজার, একতাবাজার-মগনামা ঘাট, বরইতলী (বানিয়ারছড়া)-পহরচাঁদা, লক্ষারচর-বেতুয়াবাজার-বাঘগুজারা, ইলিশয়া-বাঘগুজারা, ডুলাহাজারা-গর্জনিয়া, ফুলতলা-মগবাজার।

সওজের বিভিন্ন শাখা অফিসে যোগাযোগ করেও সড়কের জন্য অধিগ্রহণ করা ও বেদখল হওয়া মোট জমির পরিমাণ পাওয়া যায়নি। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক কালেও এলজিইডি থেকে কয়েকটি সড়ক সওজে ন্যস্ত হয়েছে। কিছু জমির বিএস রেকর্ড হয়েছে ব্যক্তির নামে। নতুন-পুরাতন রেকর্ড সমন্বয় করা গেলে অধিগ্রহণের মোট পরিমাণ বলা যাবে। অনুরূপভাবে সওজের তত্ত্বাবধানে জমি অধিগ্রহণের পর থেকেই টাকা গ্রহীতা জমির মালিক বা অন্য কেউ পর্যায়ক্রমে সড়কে জমি দখল করেছে। চকরিয়া পৌর শহর, পেকুয়া বাজারসহ স্টেশন এলাকায় জমির দাম অত্যধিক বেড়ে যাওয়ায় এলাকাভিত্তিক কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি সড়কের জমি দখল করে মার্কেটসহ নানা স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। এখনও সেই দখল-নির্মাণ অব্যাহত রয়েছে। 

প্রকৌশলী মোহাম্মদ দিদারুল ইসলাম বলেন, ‘২০২১ সালের ২২ ডিসেম্বর বরইতলী এলাকার জাতীয় মহাসড়কের বেদখল হওয়া বিপুল জমি প্রভাবশালীদের হাত থেকে উদ্ধার করলেও পরে দখলবাজরা পুনরায় ওই জমি নিজেদের আয়ত্তে নিয়ে স্থাপনা নির্মাণ করেছে। অনুরূপভাবে সড়কের স্টেশন এলাকায় জমি দখল করা ৫০ জন দখলবাজকে নোটিসও দেওয়া হয়েছে গত এক বছরে। তাদের বলা হয়েছে, অবৈধভাবে সড়কের জমিতে নির্মিত স্থাপনা সরিয়ে নিতে। এরপরও তারা নোটিসের আদেশ না মানায় মৌখিক ও লিখিতভাবে দখল নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।’

সওজের চকরিয়া উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাহাত আলম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমি মাত্র ছয় মাস আগে এখানে যোগদান করেছি। সড়ক নির্মাণসহ অফিসিয়াল নানা কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। অধিগ্রহণ ও বেদখল জমির পরিমাণ সহসাই হিসাব করে জানানো যাবে।’ তিনি বলেন, ‘প্রভাবশালীরা সড়কের জমি দখলে নামলে আমাদের কিছুই করার থাকে না। নোটিস প্রদান ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জবরদখলের তথ্য অবহিত করে থাকি।’

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘রেলওয়ের নিজস্ব পুলিশ বাহিনী রয়েছে। আমাদের কোনো সশস্ত্র বাহিনী নেই। তাই জমি বেদখল ঠেকানো কঠিন হয়ে পড়ে। এরপরও অতিসম্প্রতি চকরিয়া পৌর শহরে জবরদখলকৃত একটি জমির ফটক ও সীমানাপ্রাচীর গুঁড়িয়ে দিয়ে উদ্ধারচেষ্টা চালায়। দখলবাজরা এতই শক্তিশালী যে, প্রকাশ্যে আমাদের উচ্ছেদ অভিযানে বাধা ও হুমকি দিয়েছে। উচ্ছেদের কয়েক ঘণ্টা পরই ফের বেড়া দিয়ে দখল করে নিয়েছে তারা।’ দুই উপজেলায় সড়কের হাজার কোটি টাকা মূল্যের জমি বেদখলে থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাহাত আলম।

সওজ কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহে আরেফীন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, নানা জটিলতায় অধিগ্রহণ ও বেদখলের জমির সঠিক পরিমাণ এখন বলা যাচ্ছে না। ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আরএস রেকর্ডমূলে সড়কের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। কোনো না কোনো দপ্তরের ভুলে সড়কের বিপুল জমি ব্যক্তির নামে বিএস রেকর্ড হয়েছে। এমন তথ্য উদঘাটন করে চকরিয়া-পেকুয়ার রেকর্ড সংশোধন করতে গত দুই মাসে ৫৩টি মিস মামলা দায়ের করেছি। ওই মামলার রায় হওয়ার পর অধিগ্রহণ ও বেদখল জমির সঠিক পরিমাণ জানা যাবে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা