× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

কর্ণফুলীর তীরে বাঁধ

আট কিমি বাঁধ নির্মাণে ৫ বছর পার সিডিএর

সুবল বড়ুয়া, চট্টগ্রাম

প্রকাশ : ২০ জুলাই ২০২৩ ১১:০৫ এএম

আপডেট : ২০ জুলাই ২০২৩ ১৩:৪৮ পিএম

সৌন্দর্য বর্ধনের নকশা।

সৌন্দর্য বর্ধনের নকশা।

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী তীরবর্তী কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত চার লেনের সড়ক কাম বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের অক্টোবরে। সাড়ে আট কিলোমিটার দীর্ঘ এই বাঁধের ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ২৭৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা।

প্রকল্পটি তিন বছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। তবে প্রায় পাঁচ বছর সময় পার হলেও গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পটির কাজ এখনও শেষ করতে পারেনি বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। এই সময়ে দুই দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর পাশাপাশি ৪৭১ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। এতে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৭৪৬ কোটি টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুন করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম নগরীর ‘অভিশাপ’ খ্যাত জলাবদ্ধতা নিরসনে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়ন না হওয়াকে অনৈতিক বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে সিডিএর প্রকল্প পরিচালক (পিডি) জানিয়েছেন, অর্থ বরাদ্দ ও জমি অধিগ্রহণসহ নানা জটিলতার কারণে পুরোদমে নির্মাণকাজ করা যায়নি। তাই প্রকল্পটি যথাসময়ে শেষ করা সম্ভব হয়নি। ফলে আসন্ন বর্ষা সামাল দিতে চাক্তাই ও রাজাখালী খালে অস্থায়ীভাবে স্লুইসগেট চালু করা হচ্ছে।

গত সোমবার প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীর কালুরঘাট সেতু থেকে শাহ আমানত সেতু পর্যন্ত কর্ণফুলী নদীর তীরবর্তী শহরের অংশের চাক্তাই, রাজাখালী, বলিরহাট, সাব খাল-২ ও ইস্পাহানি খালের পার্শ্ববর্তী এলাকায় মাটি ভরাট করে সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। বাকলিয়ার বলিরহাট, কল্পলোক এলাকার রাজাখালী খাল ও এর দুটি শাখা খাল, দুটি সাব খাল, ফয়স খাল, নোয়াখালী খালের মুখে রেগুলেটর ও পাম্পহাউজ স্থাপনের জন্য পাইলিং ও বেজ ঢালাই করা হয়েছে। তবে প্রকল্পের আওতায় কর্ণফুলী নদীর তীর ঘেঁষে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৪ ফুট উঁচু ও ৮০ ফুট প্রশস্ত চার লেনের সড়ক কাম বাঁধ এবং ১২টি খালের মুখে জোয়ার-ভাটা নিয়ন্ত্রক রেগুলেটর ও পাম্পহাউজ স্থাপনের কাজ দৃশ্যমান হয়নি।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সাড়ে আট কিলোমিটার দীর্ঘ ‘কর্ণফুলী নদী তীরবর্তী কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক কাম বাঁধ নির্মাণ’ প্রকল্পটির কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে। প্রকল্পটির মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল ২ হাজার ২৭৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা। তখন প্রকল্পটির মেয়াদ তিন বছর ধরা হয়েছিল। পরে প্রথম সংশোধনীতে ব্যয় বাড়ানো হয় প্রায় ৩৫ কোটি টাকা। দ্বিতীয় সংশোধনীতে বাড়ানো হয় ৪৩৬ কোটি টাকা। এখন প্রকল্প ব্যয় হয়েছে ২ হাজার ৭৪৬ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। 

তবে বারংবার মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানো বিষয়টি অনৈতিক বলে মন্তব্য করেছেন সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) চট্টগ্রামের সভাপতি অ্যাডভোকেট আকতার কবির চৌধুরী। প্রতিদিনের বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ও ঠিকাদাররা যোগসাজশে বারবার প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ায় মূলত হরিলুট করার জন্য। প্রকল্প নেওয়ার আগেই প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় নির্ধারিত থাকে। সেই অনুসারে প্রকল্পের কাজ শেষ করা হয় না কেন? তিন থেকে চারবার প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হবে কেন? এর কারণ হচ্ছে প্রকল্পে অনিয়ম আর হরিলুট করা। যা প্রায় প্রত্যেক বড় বড় প্রকল্পে হচ্ছে। জবাবদিহিতা না থাকায় দেশের বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম হচ্ছে এবং অসংগতিই নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। নয়তো এভাবে সরকারি টাকা নয়ছয় হতেই থাকবে।’

এ প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক ও সিডিএর প্রকৌশলী রাজীব দাশ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদনের পর দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শেষে ২০১৮ সালের অক্টোবরে নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রকল্প অনুমোদনের পর থেকে বরাদ্দ সংকট, জমি রিকুইজিশন, কোভিড পরিস্থিতিসহ নানা জটিলতায় পুরোদমে নির্মাণকাজ করা যায়নি। তবে ইতোমধ্যে প্রকল্পের ৬৭ শতাংশ ভৌত অবকাঠামো নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। প্রায় সাড়ে আট কিলোমিটার সড়কের মধ্যে সাত কিলোমিটার অংশের নির্মাণকাজ শেষ। ১২টির মধ্যে ১০টি খালের মুখে স্লুইসগেটের কাঠামোর কাজ শেষ হয়েছে। সেখানে বসানোর জন্য নেদারল্যান্ডস থেকে মরিচা প্রতিরোধক অত্যাধুনিক ফাইভার গেট আনা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এসব গেট অর্ডার দেওয়া হয়েছে। আশা করি আগামী অক্টোবরে এসব মালামাল দেশে এসে পৌঁছবে। আসলেই এসব গেট স্থাপন করা হবে। তবে আসন্ন বর্ষা সামাল দিতে চাক্তাই ও রাজাখালীতে অস্থায়ীভাবে স্লুইসগেট চালু করা হচ্ছে।’ 

রাজীব দাশ আরও বলেন, ১২টি খালের মুখে রেগুলেটর স্থাপনের কথা থাকলেও একসঙ্গে সব খালের মুখে নির্মাণকাজ করা যায়নি। বিশেষ করে চাক্তাই আর রাজখালী খালে পানিপ্রবাহ চলমান থাকায় রেগুলেটর স্থাপন করতে হিমশিম খেতে হয়েছে। তবে এখন পুরোদমে কাজ চলছে। ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। আশা করি এই সময়ের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা