× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

হাসপাতালে পানি আনতে হয় বাইরে থেকে

সুফল চাকমা, বান্দরবান

প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০২৩ ১৪:৩০ পিএম

বান্দরবান সদর হাসপাতাল। ছবি : সংগৃহীত

বান্দরবান সদর হাসপাতাল। ছবি : সংগৃহীত

প্রস্রাবের সমস্যার কারণে গত ১ জুলাই বান্দরবান সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন শিমুল বড়ুয়া। কিন্তু প্রথম দিনেই টের পেলেন পানি সমস্যা কাকে বলে। জরুরি প্রয়োজনে টয়লেটে ঢুকেছিলেন। কিন্তু দেখতে পেলেন লাইনে পানি নেই। দিন পেরোলে বুঝতে পারলেন, এ শুধু এক-আধা ঘণ্টার সমস্যা নয়। অধিকাংশ সময়ই পানি থাকে না হাসপাতালে। পর্যাপ্ত পানি ব্যবহার করা যায় না বলে টয়লেটগুলো অপরিচ্ছন্ন, দুর্গন্ধে ভরা। 

প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বললেন তিনি, ‘যেখানে টয়লেট ব্যবহারের পানি ঠিকমতো থাকে না, সেখানে খাওয়ার পানি বাইরে থেকে নিয়ে আসা তো খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। আমার মনে হয়, পানি সমস্যার কারণেই এখানে এসে উল্টো আমি আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছি।’

ভুক্তভোগীরা বলছেন, বান্দরবান পার্বত্য জেলার সরকারি স্বাস্থ্যসেবার এই প্রধান চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানটিতে নানা সমস্যা লেগেই আছে। তবে সেসবের মধ্যে গত প্রায় এক মাস ধরে পানি সমস্যা তীব্রভাবে ভোগাচ্ছে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীদের। হাসপাতালে পানি না থাকায় বাইরের বিভিন্ন দোকান কিংবা বাড়ি থেকে পানি সংগ্রহ করে ব্যবহার করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন রোগী ও তাদের সঙ্গে থাকা আত্মীয়স্বজন এবং শুভানুধ্যায়ীরা।

দিন পনেরো হলো- এ হাসপাতালে পায়ে ফোঁড়া নিয়ে ভর্তি হয়েছেন বুলেট খিয়াং (১৭)। তাকে দেখাশোনা করছেন তার মা শৈমা খেয়াং। তিনিও পানি সমস্যার কথা জানিয়ে বলেন, গত ১৫ দিনে মাত্র তিনবার গোসল করতে পেরেছি। হাসপাতালের টয়লেট ও গোসলখানায় যখনই যাই, তখনই দেখি পানি নেই। হাসপাতালের সামনের চা-দোকান থেকে পানি সংগ্রহ করে কোনোমতে পরিচ্ছন্ন হতে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আমিও অচিরেই অসুস্থ হয়ে পড়ব।

‘সাংবাদিকরা খোঁজ নেওয়ায় সংকট কমেছে’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের একজন কর্মচারী বলেন, ‘গত কয়েক সপ্তাহ এ হাসপাতালে চরম পানি সংকট ছিল। তবে গত সপ্তাহে হাসপাতালে এসে সাংবাদিকরা পানি সমস্যার খবর নেওয়ার পর চলতি সপ্তাহে ওই সংকট খানিকটা কমেছে।’ 

জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. জিয়াউল হায়দার পানি সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘অনেকদিন ধরে এ সমস্যা চলছে। এর সমাধান হওয়া জরুরি।’ 

মেডিকেল অফিসার বলেন, ‘এখন আমরা পানি পাই বান্দরবান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে। কিন্তু সেখান থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী পানি দেওয়া হয় না। কখনও বলে, মোটর নষ্ট; আবার কখনও বলে, বিদ্যুৎ সমস্যা। এ রকম নানা সমস্যা দেখিয়ে পানি দেওয়া হয় না। হাসপাতালে নিজস্ব পানির ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত এ সমস্যা দূর হবে না।’ নিমার্ণাধীন আড়াইশ শয্যা হাসপাতাল ভবনের কাজ শেষ হলে পানি সমস্যা থাকবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

তবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সিনিয়র সহকারী প্রকৌশল খোরশেদ আলম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘হাসপাতালে পানি যে কত প্রয়োজনীয়, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সে কারণে হাসপাতালে গুরুত্বের সঙ্গেই পানি সরবরাহ করা হয়। এরপরও যদি পানি সমস্যা থাকে, সেটার দায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের, আমাদের নয়।’ গুরুত্বের সঙ্গে সরবরাহের পরও হাসপাতালে কেন পানি সংকট হচ্ছে, তা খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান এই কর্মকর্তা। 

‘ডিপ টিউবওয়েল বসলে সমস্যা কাটবে’

এদিকে হাসপাতাল সূত্র জানাচ্ছে, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করতে পারছে না। এ কারণে হাসপাতালে দীর্ঘদিন পানি সংকট লেগে আছে। শয্যা ও রোগীর সংখ্যাও আগের তুলনায় বেড়েছে। ব্যবহারকারী বেশি হওয়ায়ও পানির সংকট হচ্ছে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, পানি সংকট দূর করার লক্ষ্যে হাসপাতাল এলাকায় একবার ডিপ টিউবওয়েল বসানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু মাটির গভীরে পাথর থাকায় তা বসানো যায়নি। বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের আগামী উন্নয়ন সমন্বয় সভায় পানি সমস্যার বিষয়টি আবারও উত্থাপন করা হবে বলে জানান তিনি।

বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ও স্বাস্থ্য বিভাগের আহ্বায়ক ক্য সা প্রু জানান, হাসপাতালের কিছু অব্যবস্থাপনার কারণেও পানির সমস্যা হচ্ছে। হাসপাতালের পানির লাইন আলাদা করতে হবে। আড়াইশ শয্যা হাসপাতালের নতুন ভবন নির্মাণে দুটি ডিপ টিউবওয়েল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এগুলো স্থাপনের কাজ শেষ হলে এবং গণপূর্ত বিভাগ থেকে তা হস্তান্তর করলে আর পানির সংকট থাকবে না।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা