চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০২৩ ২১:০৭ পিএম
আপডেট : ২১ জুলাই ২০২৩ ২১:১৫ পিএম
যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যা করে লাশ গুম করার দায়ে স্বামী মামুনুর রশীদকে ১৪ বছর পর গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। ছবি : প্রবা
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যা করে লাশ গুম করার দায়ে স্বামী মামুনুর রশীদকে (৫০) ১৪ বছর পর গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গত বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম মহানগরীর কোতোয়ালির ব্রিজঘাট এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামুনুর রশীদ আনোয়ারা থানার কৈখাইন গ্রামের আব্দুল শুক্কুরের ছেলে।
শুক্রবার (২১ জুলাই) র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) নুরুল আবছার গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, নিহত কলি আক্তার বরগুনা জেলার তালতলী থানার নিদ্রারচর এলাকার বাসিন্দা। ২০০২ সালের জুন মাসে চট্টগ্রামে এসে তিনি একটি গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিতে চাকরি নিয়েছিলেন। এ সময় মামুনুরের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক হয়। পরে পরিবারের কাউকে না জানিয়ে কলি ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে মামুনুরকে বিয়ে করেন। পরবর্তী সময়ে কলির পরিবার তাদের বিয়ে মেনে নেয়।
এই দম্পতির একটি তিন বছরের কন্যাসন্তান রয়েছে উল্লেখ করে নুরুল আবছার আরও জানান, বিয়ের পর থেকে মামুনুর রশীদ এবং তার পরিবারের সদস্যরা যৌতুক দাবি করে আসছিল। মেয়ের সুখের জন্য তার পরিবার সৌদি আরব যাওয়ার জন্য মামুনুরকে আড়াই লাখ টাকা দেয়। কিন্তু আসামি উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করে টাকা নষ্ট করে ফেলে। মামুনুর রশীদ ডাকাতিসহ বিভিন্ন মামলায় কারাগারে গেলে কলির পরিবার ঋণ করে মামলা চালায়। কিন্তু জামিনে মুক্ত হয়ে আরও ৫০ হাজার টাকার জন্য ভিকটিম এবং তার পরিবারকে চাপ দেয় সে। ৫০ হাজার টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে স্বামী মামুনুর রশীদ ও তার পরিবারের সদস্যরা কলিকে মারধর শুরু করে।
তিনি আরও জানান, ২০০৯ সালের ২৬ মে কলির মা ফোন করে কলি আক্তারের খবর জানতে চাইলে মামুনুর রশীদ জানিয়েছিল, কলি আক্তার ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এর কিছুক্ষণ পর ঘাতক মামুনুর রশীদ মোবাইল ফোনে ভিকটিমের মাকে জানায়, কলি ডায়রিয়া রোগে মারা গেছে এবং দাফনকাফনও শেষ।
পরবর্তী সময়ে ভিকটিমের পরিবার আশপাশের লোকজন থেকে জানতে পারে, যৌতুকের টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় কলি আক্তারকে হত্যা করা হয় এবং হত্যার আলামত গোপন করার জন্য তাড়াহুড়া করে কাউকে না জানিয়ে দাফন করে ফেলে মামুনুর।
নুরুল আবছার আরও জানান, এ ঘটনায় নিহত কলির মা বাদী হয়ে আনোয়ারা থানায় মামুনুরসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আসামিদের গ্রেপ্তার করতে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রাখে র্যাব। কিন্তু দীর্ঘ ১৪ বছর পালিয়ে থাকার পর বৃহস্পতিবার রাতে মামুনুর গ্রেপ্তার হয়।