মোংলা ও মোড়েলগঞ্জ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ আগস্ট ২০২৩ ২৩:০১ পিএম
আপডেট : ০৩ আগস্ট ২০২৩ ২৩:০৮ পিএম
জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে সুন্দরবন। প্রবা ফটো
নিম্নচাপ ও পূর্ণিমার প্রভাবে দুই থেকে পাঁচ ফুট উচ্চতার জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে গোটা সুন্দরবন। বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) দুইবার এভাবে তলিয়ে যায় সুন্দরবন।
সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার মো. আজাদ কবির প্রতিদিনের বাংলাদেশকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার থেকে সুন্দরবনের সব থেকে উচু এলাকা করমজল বন্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্রটি জলোচ্ছ্বাসে দুই ফুট পানিতে দুবার তলিয়ে থাকছে। এই বন্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্রর সেডে থাকা হরিণ, কুমির ও বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির বাটাগুর বাচকা কচ্ছপগুলো নিরাপদ রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গোপসাগর উপকূলে সুন্দরবনের সব থেকে নিচু এলাকায় হরিণসহ ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণিরা ঝড়, জলোচ্ছ্বাসসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় গাছ, উচু পাড় ও বন বিভাগের অফিস এলাকা আশ্রয় নিয়ে টিকে থাকে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে সুন্দরবনের বন্যপ্রাণিদের রক্ষায় মাটির উচু ১২টি টিলা নির্মাণ করা হচ্ছে।’
জানা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের বাইরে থাকা শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, মোংলা, রামপাল, বাগেরহাট সদর ও কচুয়া উপজেলার শতাধিক গ্রামসহ মোড়েলগঞ্জ ও মোংলা পোর্ট পোরসভার নিম্নাঞ্চলের কমপক্ষে সহস্রাধিক বাড়ি প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে ভারী বর্ষণে জনজীবন আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জলোচ্ছ্বাসে পানগুছি নদীর পানির চাপে মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের গাবতলা গ্রামের আধা কিলোমিটার কার্পেটিং সড়ক ধসে গেছে। ভাঙন হুমকিতে পড়েছে নদীর তীরবর্তী ২৫ কিলোমিটার কাঁচা-পাকা সড়ক, বাড়িঘর, বাজার ১২ মিটার বেড়িবাঁধসহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
এদিকে মেরেলগঞ্জ উপজেলার নদীর তীরবর্তী পঞ্চকরণ ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক মজুমদার, সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির মোল্লা এবং বারইখালীর চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল খান মহারাজ জানান, গত দুই দিনের পানির চাপে নদীর তীরবর্তী তাদের ইউনিয়নগুলোর অনেক সড়ক ভেঙে গেছে। দেবরাজ পঞ্চকরণ বেড়িবাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। এভাবে এক সপ্তাহ পানির চাপ থাকলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে।
বাগেরহাট জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘মোরেলগঞ্জ শহরের রামপাল-মোংলা হয়ে ঘষিয়াখালী পর্যন্ত ৯৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষার জন্য মন্ত্রাণালয়ে প্রস্তাবনা রয়েছে। এ ছাড়াও ইতোমধ্যে পানগুছি নদীর ভাঙন হতে বাগেরহাট জেলা সদর সংলগ্ন এলাকা সংরক্ষণ এবং বিষখালী নদী পুনঃখনন শীর্ষক প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি কাজ শেষ হলে এ সমস্যা থাকবে না।’