দেবাশীষ দত্ত, কুষ্টিয়া
প্রকাশ : ০৪ আগস্ট ২০২৩ ১২:০২ পিএম
কুমারখালীর বাগুলাট ইউনিয়নে কালীগঙ্গা নদীর ওপর নির্মিত সেতুর সংযোগ সড়ক নেই। প্রবা ফটো
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নে কালীগঙ্গা নদীর ওপর পাকা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে ১০ বছর আগে। কিন্তু সেতুতে ওঠার জন্য নেই কোনো সংযোগ সড়ক। বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে হয় স্থানীয়দের। চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আশপাশের পাঁচ গ্রামের মানুষকে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১২-১৩ অর্থবছরে পণ্য পরিবহন ও মানুষের যাতায়াতের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ‘সেতু-কালভার্ট কর্মসূচি’র আওতায় ৩৬ ফুট দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু কোনো সংযোগ সড়ক ছাড়াই প্রকল্পের কাজ শেষ করা হয়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নির্মাণের কয়েক মাস পরে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) তৎকালীন চেয়ারম্যান বালু দিয়ে কোনোরকম সংযোগ সড়কের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু পরের বছরই বন্যায় তা ভেসে যায়। এরপরে আর নির্মাণ বা সংস্কার করা হয়নি। সংযোগ সড়ক না হওয়ায় শালঘর মধুয়া, সাঁথপাড়া, খালপাড়া বাজারসহ আশপাশের গ্রামের মানুষ বাঁশের চরাট (সাঁকো) বানিয়ে চলাচল করছে।
স্থানীয় আবুল কালাম নামে একজন বলেন, ‘সারা বছর পায়ে হেঁটে কোনোরকম সেতুটি ব্যবহৃত হয়। কিন্তু কৃষিপণ্য পরিবহন, ব্যবসায়ীসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজে লাগে না। ১০ মিনিটের পথ ৩০ মিনিট ঘুরে যেতে হয়। তা ছাড়া বর্ষা মৌসুমে সেতুটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। দীর্ঘদিন এভাবে রাস্তাবিহীন পড়ে আছে, তবু কর্তৃপক্ষের নজরে আসে না।’
আলী হোসেন নামে আরেকজন বলেন, ‘আশপাশের গ্রামগুলাতে ধান, পাট, পেঁয়াজ ও শাকসবজির আবাদ হয়। কিন্তু যাতায়াতব্যবস্থা না থাকায় ভোগান্তিতে পড়ছেন কৃষকরা। মাথায় করে পণ্য নিয়ে পারাপার হওয়ার সময় নদীতে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান চাই।’
কলেজছাত্র মো. কাজল বলেন, নদীর মাঝখানে সেতুটি অনেক বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু দুই পাশে রাস্তা নির্মাণ করা হয়নি। বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার করতে চরম ভোগান্তি হয়। বর্ষা মৌসুমে কয়েক কিলোমিটার ঘুরে কলেজে যেতে হয়।
বাগুলাট ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল হক নবা বলেন, সেতু নির্মাণের পর সংযোগ সড়ক করতে হয়। এখানে তা করা হয়নি। ফলে সেতুটি কোনো কাজেই আসছে না। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
জানতে চাইলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সাইদুর রহমান বলেন, সরেজমিনে স্থানটি পরিদর্শন করা হয়েছে। সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণের বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।