প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৮ আগস্ট ২০২৩ ২৩:৪৭ পিএম
আপডেট : ১০ আগস্ট ২০২৩ ১১:২৮ এএম
মো. মোহসিন হোসাইন। সংগৃহীত ছবি
কয়েক বছর আগেও পড়াশোনা বন্ধ ছিল। পরিবারের আর্থিক সংকটের কারণে বাধ্য হয়েই পড়াশোনা ছাড়তে হয়েছিল তার। তবে মনোবল আর চেষ্টায় আবারও লেখাপড়ায় ফেরেন তিনি। স্বল্প প্রযুক্তি ও নিজ মেধা খাটিয়ে গ্রামে বসেই আয় করছেন। পাশে দাঁড়িয়েছেন পরিবারের। পাশাপাশি চলছে পড়াশোনাও। বলা হচ্ছে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার মো. মোহসিন হোসাইনের কথা। উপজেলা শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রামে বাস করেন তিনি। তবে সেখানে বসেই তৈরি করছেন ভিডিও কনটেন্ট। সেই কনটেন্ট থেকে আয় দিয়ে আর্থিকভাবে এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তিনি।
২০১৯ সালে দাখিল পাস করেন মোহসিন। পরিবারে আর্থিক অভাব ছিল আগে থেকেই। এ কারণে আর পড়াশোনা এগোয়নি। তবে যেকোনোভাবেই পড়াশোনা এগিয়ে নেওয়ায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন। এ কারণে আয়ের উৎস খুঁজতে থাকেন। শুরু করেন গ্রাফিক্সের কাজ শেখা। কাজ শেখার পাশাপাশি মোবাইলে ভিডিও বানিয়ে ইউটিউব ও ফেসবুকে শেয়ার করতে থাকেন। একটা সময় এটা থেকে আয়ের কথা ভাবলেন। পরে দর্শকদের টানতে পারে এমন কনটেন্ট বানানো শুরু করেন।
ছোটবেলা থেকেই হামদ-নাত ও গজলের প্রতি অসম্ভব ভালোবাসা ছিল মোহসিনের। জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে আয়োজিত সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ফুলমালীর চালা ফজরগঞ্জ আলিম মাদ্রাসা থেকে অংশ নিয়ে ‘হামদ-নাত’ বিভাগে উপজেলা পর্যায়ে ২০১৭ ও ২০১৮ সালে অর্জন করেন প্রথম স্থান। জেলা পর্যায়েও জেতেন পুরস্কার। এরপর পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে পড়াশোনার ফাঁকে হামদ-নাত ও গজলের ভিডিও বানিয়ে সেগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড করেন। সেখান থেকেই আয় তার।
এ বিষয়ে মোহসিন বলেন, প্রথম দিকে ফেসবুক ও ইউটিউবে কনটেন্ট বানালেও তেমন নিয়মিত ছিলেন না। পরে অন্যান্য মাধ্যমের পাশাপাশি বাংলালিংকের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম টফিতেও কনটেন্ট আপলোড করতে থাকেন। দেশি এই প্ল্যাটফর্ম থেকে আয়ও আসতে শুরু করে দ্রুত। এর পর থেকেই আরও ভালো মানের বেশি বেশি কনটেন্ট আপলোড করতে থাকেন টফিতে। টফি থেকে আয় করা টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তোলেন। এ প্ল্যাটফর্ম থেকে আয় করা সহজ বলে নিয়মিত এখানে কন্টেন্ট আপলোড করে যেতে চান মোহসিন। পাশাপাশি অন্য মাধ্যমগুলোতেও কনটেন্ট প্রকাশ করে যাবেন তিনি।
টফি আয়োজিত ‘সুরের সাথে নুরের পথে’ শীর্ষক হামদ-নাত প্রতিযোগিতায় সারা দেশের মধ্যে প্রথম হন মোহসিন। বছরজুড়ে বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে গান, অভিনয়, নৃত্যসহ নানা রকম প্রতিযোগিতা দেখা গেলেও হামদ-নাত প্রতিযোগিতা তেমন দেখা যায় না। তবে দেশে অনেক কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী রয়েছে যারা গজল, হামদ ও নাতে পারদর্শী। মূলত তাদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যেই এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে টফি।
ভিডিওর ভিউসংখ্যার ওপর ভিত্তি করে সেরা ১০ জন বিজয়ীকে বেছে নেওয়া হয়। যাদের সবাই বাস করেন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। এতে দ্বিতীয় হন সৈয়দপুরের মো. শাহ আতিক উল্লাহ। ১০ বিজয়ীর মধ্যে একমাত্র নারী প্রতিযোগী ছিলেন কিশোরগঞ্জের শারমিন আক্তার।