লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ আগস্ট ২০২৩ ২২:৩৭ পিএম
‘অ-বাজি আই ক্যান গরি বাইচ্চুম, কী হাই থাইক্কুম, আর ঘরত হানাপিনা নাই তিন দিন ধরি, ঘরগান ভাঙ্গি গিঅই। পোয়াক্কলর বাপও মরি গিঅ, আই ক্যান গরি চইল্লুম (বাবা আমি কেমন করে বাঁচব, কী খেয়ে থাকব, আমার বাড়িতে খাবারদাবার নেই তিন দিন ধরে, বাড়িটা ভেঙে গেছে। বাচ্চাদের বাবাও মরে গেছে, আমি কীভাবে চলব)। ’মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) বিকালে সাংবাদিকদের দেখে এভাবেই আহাজারি করেন চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার নিহত রিকশাচালক আব্দুল মাবুদের প্রথম স্ত্রী হোসনে আরা বেগম।
গত ৭ আগস্ট রাতে বাড়ি ফেরার পথে আব্দুল মাবুদ বন্যার পানিতে তলিয়ে নিখোঁজ হন। তিনি উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের চট্টলাপাড়া এলাকার রহিম বকসুর ছেলে। ওই রাতে পদুয়া দরগাহ মুড়া এলাকা থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন মাবুদ। পথিমধ্যে চুনতিপাড়া ব্রিজের কাছে পানির নিচে তলিয়ে যান। নিখোঁজের তিন দিন পর ১০ আগস্ট সকালে একই এলাকার কুতুবের পাড়া বিলে অর্ধগলিত লাশ দেখে তার ভাই আসহাব মিয়াকে খবর দেন স্থানীয়রা। পরে সে লাশ চিহ্নিত করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে আসহাব মিয়া বলেন, ‘সামাজিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়েছে।’
আব্দুল মাবুদের দুই স্ত্রী, পাঁচ মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে। টানা বর্ষণে মাবুদের মাটির ঘরটি ভেঙে গেছে। মেরামত করার সামর্থ্য নেই পরিবারের। ভিটেবাড়ি ছাড়া কোনো জায়গাজমিও নেই। মাবুদের আরেক ভাই জসিম উদ্দিন বলেন, ‘পরিবারে উপার্জন করার মতো কেউ নেই। মেয়েগুলো বড় হয়েছে। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি হলো ভাইয়ের পরিবার। আমরাও তো অসচ্ছল।’
পদুয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বলেন, পরিবারটি খুব অসহায় হয়ে পড়েছে। তাৎক্ষণিক দাফন-কাফনের জন্য সহযোগিতা করা হয়েছে।