২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা
শিব শংকর রবিদাস, মাদারীপুর
প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০২৩ ১২:১২ পিএম
লিটন মুন্সীর বাবা-মা। প্রবা ফটো
যুবলীগ নেতা লিটন মুন্সী মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার হোসেনপুর ইউনিয়নের উত্তর হোসেনপুর গ্রামের আইয়ুব আলী মুন্সীর ছেলে। দলের জন্য ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ। যেখানেই আওয়ামী লীগের মিটিং-মিছিল, সেখানেই লিটন মুন্সীর উপস্থিতি। সেই টানেই লিটন সমাবেশে যোগ দিতে ঢাকা গিয়েছিলেন।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় নির্মমভাবে নিহত হন তিনি। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় ওই পরিবারে কান্নার পাশাপাশি এখন কিছুটা হলেও আনন্দ বইছে। কিন্তু গত ৪ বছর ধরে কেউই খবর নেয়নি তার বাবা-মায়ের। এখন অসহায় জীবন যাপন করছে তারা। পুরোনো ঘরের চাল দিয়ে পানি পড়ে। তাই গ্রামের বাড়িতে সরকারিভাবে একটি ঘর নির্মাণের দাবি তাদের।
গতকাল রবিবার নিহত যুবলীগ নেতা লিটন মুন্সীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ১৯ বছর পার হলেও লিটনের বাবা-মায়ের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। লিটনের স্ত্রী মাফিয়া বেগম লিটন মারা যাওয়ার ৩ বছর পরই প্রবাসী এক যুবককে বিয়ে করে শ্বশুরবাড়িতে থাকেন। সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেয়ে একমাত্র মেয়ে মিথিলা মোটামুটি ভালোই আছেন। তিনি এ বছর এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন।
মা আছিয়া বেগম বলেন, ‘আমার বাবা (লিটন মুন্সী) বলেছিল পুরোনো ঘর মেরামত করার দরকার নেই। আমি এখানে বিল্ডিং দিব। কিন্তু সেটা আর হয় নাই। পুরোনো ঘরেই আমরা থাকি। ঘরের চাল দিয়ে পানি পড়ে। প্রধানমন্ত্রী যদি আমাদের বাড়িতে একটি ঘর নির্মাণ করে দিতেন, তাহলে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ভালোভাবে থাকতে পারব। আমরা দুজনেই অসুস্থ। প্রতি মাসে আমাদের ৫-৬ হাজার টাকার ওষুধ লাগে। এসব টাকা পাব কোথায়?’ তিনি আরও বলেন, ‘শুনেছি প্রধানমন্ত্রী ২০১৮ সালে লিটনের মেয়ে মিথিলার নামে ঢাকায় একটি ফ্লাট বাড়ি এবং ৫ লাখ টাকা দিয়েছেন। এ ছাড়াও প্রতি মাসে তার খরচ বাবদ ৫ হাজার করে টাকা দেন। মিথিলা মাদারীপুর থাকে। মাঝে মাঝে আমাদের কাছে ফোন করে।’
লিটনের বাবা আইয়ুব আলী মুন্সী বলেন, ‘সরকারিভাবে ৫ লাখ টাকা পেয়েছিলাম। চিকিৎসা করতে সে টাকা খরচ হয়ে গেছে। এখন আমি মাসে ৩ হাজার টাকা করে ভাতা পাই। এতে আমাদের সংসার চলে না।’
নিহত লিটন মুন্সীর একমাত্র মেয়ে নুসরাত জাহান মিথিলা বলেন, ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় যখন আমার বাবা মারা যান তখন আমি খুবই ছোট। বাবা কী জিনিস বুঝতে পারিনি। বাবার আদর পাওয়ার আগেই বাবাকে হারিয়েছি। হামলার ঘটনায় অপরাধীদের বিচারের রায় দ্রুত কার্যকর হলেই আমার বাবার আত্মা শান্তি পাবে।’