আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০২৩ ২১:১৭ পিএম
আপডেট : ২১ আগস্ট ২০২৩ ২১:৩৩ পিএম
প্রতীকী ফটো
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ১১ লাখ টাকায় এক গৃহবধূ হত্যা মামলা রফাদফা হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার (২০ আগস্ট) বিকালে আখাউড়া পৌরসভা ভবনে বর্তমান ও সাবেক কয়েকজন পৌর কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে এক সভায় বিষয়টির মীমাংসা হয়। তবে আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হত্যা মামলা আপসযোগ্য না। পুলিশ জানিয়েছে, তারা আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে।
গত ২২ জুন কথা-কাটাকাটির জেরে আখাউড়া পৌর শহরের ৭ নং ওয়ার্ডের চন্দনসার এলাকার জাকির হোসেন টিপুর স্ত্রী সোমা আক্তারকে (২৭) বেদম মারধর করেন একই এলাকার আরিফ হাসান জিকু ও তার পরিবারের লোকজন। পরদিন বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় সোমা আক্তারের বাবা সেলিম মিয়া বাদী হয়ে আরিফসহ তার পরিবারের চারজনকে আসামি করে আখাউড়া থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ আরিফের মা হোসনে আরা বেগমকে গ্রেপ্তার করে। অন্যরা পলাতক।
স্থানীয় লোকজন জানান, রবিবার বিকালে আখাউড়া পৌরসভা ভবনের তৃতীয় তলায় বর্তমান ও সাবেক কয়েকজন পৌর কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে সভা হয়। পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজলের বড় ভাই দানিস খলিফার সভাপতিত্বে সভা সঞ্চালনা করেন ৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শিপন হায়দার। বিকাল ৪টায় শুরু হয়ে সভা শেষ হয় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়। সভায় প্যানেল মেয়র এনামুল আহসান খাদেম, বাবুল মিয়া, পৌর কাউন্সিলর জান্নাত হোসেন ঈশান, সাবেক কাউন্সিলর আতিকুর রহমান, কাজী লিটন খাদেম, রফিকুল ইসলাম শিশু, মো. তাজুল ইসলাম, ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি কাদির মোল্লা, ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মানিক মিয়া উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে ১৬ জনের একটি জুরি বোর্ড গঠন করা হয়। ওই জুরি বোর্ড নিহত ব্যক্তির পরিবারকে ১১ লাখ টাকা দেওয়ার রায় দেয়। আসামিপক্ষ তাৎক্ষণিক ২ লাখ টাকা সালিশ বোর্ডে জমা দেয়। এদিকে হত্যা মামলা সালিশের মাধ্যমে শেষ হওয়া নিয়ে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
প্যানেল মেয়র এনামুল আহসান বলেন, ‘উভয় পক্ষের সম্মতিতে সালিশ বৈঠকে সোমা আক্তার হত্যার ঘটনাটি মীমাংসা করেছি। নিহতের পরিবারকে ১১ লাখ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শিপন হায়দার বলেন, ’সোমা আক্তারের হত্যার বিষয়টি শেষ হয়েছে। সোমার দুই সন্তানকে ৪ লাখ এবং তার বাবাকে ৭ লাখ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজকোর্টের আইনজীবী নাসির উদ্দিন বলেছেন, ‘হত্যা মামলা আপসযোগ্য না। এটা আপস করা যায় না।’
আখাউড়া থানার ওসি আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘হত্যা মামলা সামাজিকভাবে মীমাংসা করার কোনো সুযোগ নেই। আমরা একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এখন বাইরে কে কী করল, এটা আমাদের দেখার বিষয় না।’