× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন

স্থানীয়দের দাবি উপেক্ষা, সমাবেশে এমপির ‘বাধা’

এস এম রানা, চট্টগ্রাম

প্রকাশ : ২৪ আগস্ট ২০২৩ ১৫:১৩ পিএম

আপডেট : ২৪ আগস্ট ২০২৩ ১৫:৩৯ পিএম

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার তেমুহনী এলাকায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন সংস্কার করা হচ্ছে। প্রবা ফটো

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার তেমুহনী এলাকায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন সংস্কার করা হচ্ছে। প্রবা ফটো

সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত নবনির্মিত দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনের কিছু স্থানে সেতু-কালভার্ট নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলেন রেলসচিব ড. মো. হুমায়ুন কবির। গত ১৮ আগস্ট তার সেই ঘোষণার তিন দিন পর গত সোমবার শুরু হয় ক্ষতিগ্রস্ত রেল সড়ক সংস্কার।

এদিকে ঘোষণার পরও সেতু-কালভার্ট নির্মাণ না হওয়ায় বিক্ষুব্ধ স্থানীয়রা গতকাল বুধবার রেললাইনে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। কিন্তু তারা স্থানীয় সংসদ সদস্য (এমপি) নজরুল ইসলাম চৌধুরী এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের ‘বাধার’ কারণে সেই কর্মসূচিও পালন করতে পারেনি। পরে রেলমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি জমা দেয় সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে।

আন্দোলনে বাধা দেওয়া বিষয়ে সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি বাধা দিইনি। স্থানীয়দের সমস্যা সমাধান করা আমার দায়িত্ব। সেই দায়িত্বের কারণেই বলেছি, রেল সচিবের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় তিনটি সেতু নির্মিত হবে। যেহেতু রেল কর্তৃপক্ষ সেতুর দাবি মেনে নিয়েছে এবং সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছে, তাই আন্দোলনের প্রয়োজন নেই। সেই বার্তা তাদের দিয়েছি।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘এটা ঠিক আপাতত সেতু হচ্ছে না। সড়ক সংস্কারকাজ হবে। এটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প। তাই সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে রেল যাবে কক্সবাজার। তবে ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই সেতুর কাজ শুরু হবে। সেতু বাস্তবায়ন আমি করবই।’ 

দ্রুত সময়ের মধ্যে পর্যাপ্ত সেতু-কালভার্ট নির্মাণের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলন কর্মসূচিতে যুক্ত ছিলেন স্থানীয় যুবলীগ নেতা মো. হেলাল উদ্দিন টিপু এবং কেঁওচিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রিপন সুজন দাশ। আন্দোলন কর্মসূচির জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার পরও কেন কর্মসূচি পালন করতে পারলেন না, এমন প্রশ্নে হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘সাধারণ মানুষের দাবির কথাও যদি বলা যায়, তাহলে ভবিষ্যতে এলাকায় কাদের নিয়ে রাজনীতি করব? আজ দলের নেতারাই আমাকে প্রশ্ন করেছেনÑ আমি বিরোধী দলের ভাষায় কথা বলছি কি না?’ এ বিষয়ে রিপন দাশ বলেন, ‘আমরা দ্রুত রেল সেতু দেখতে চাই। মানুষ বাঁচিয়ে রেখে রেললাইন চাই।’ 

স্থানীয়দের আন্দোলনে বাধা দেওয়া নেতাদের একজন সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহজাহান। তিনি বলেন, ‘রেললাইনের কারণে বন্যা হয়নি। বন্যা হয়েছে অতিবর্ষণের কারণে। রেললাইনে সেতুর দাবি আদায়ের নামে স্থানীয়রা মূলত সরকারবিরোধী আন্দোলন করতে চাইছে।’ স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আওয়ামী লীগ-যুবলীগ নেতারাও কি বিরোধী দলের মতোই আন্দোলন করছে? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছেন রেলসচিব। আমরা রেললাইন চালুর আগেই সেতু নির্মাণ দেখতে চাই।’

গত মঙ্গলবার সাতকানিয়া উপজেলার কেঁওচিয়া ইউনিয়নের তেমুহনী এলাকায় দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত লাইনের সংস্কারকাজ করা হচ্ছে। কাঁধে করে বালুর বস্তা নিয়ে যাচ্ছেন শ্রমিকরা। একাধিক শ্রমিক রেললাইনের নিচে সৃষ্ট গর্ত থেকে পানি সেচ করছেন। পানি শুকিয়ে যাওয়ার পর জগ লাগিয়ে দেবে যাওয়া রেললাইন কিছুটা ওপরের দিকে তোলা হচ্ছে। এরপর স্লিপার ও লাইনের মাঝখানে দেওয়া হচ্ছে খোয়া, বালু ও পাথর। সরে যাওয়া পাথরগুলো আবারও দেওয়া হচ্ছে স্লিপারের মাঝখানে। 

রেললাইনের ক্ষতিগ্রস্ত অংশের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশনের সহকারী প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, রেললাইনের সংস্কারকাজ করা হচ্ছে। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে সংস্কারকাজ শেষ হবে। বন্যায় পানির স্রোতে মাত্র ২৫০ মিটার রেলপথের পাথরও কিছুটা মাটি সরে গেছে। এতে কয়েকটি স্থানে রেললাইন কিছুটা দেবে গেছে। কয়েকটি স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এখন দেবে যাওয়া সেই রেললাইন জগ দিয়ে তুলে সোজা করা হচ্ছে। পাশাপাশি বালু ও পাথর বসিয়ে দিচ্ছি। মূলত রেলপথ মন্ত্রণালয়ের টেকনিক্যাল টিমের নির্দেশনা অনুসারে সংস্কার করা হচ্ছে।

সেতু নির্মাণের উদ্যোগ না নিয়ে সড়ক সংস্কার বিষয়ে জানতে চাইলে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনের প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, এখন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রেলপথের সংস্কারকাজ শুরু হয়েছে। আশা করি, সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে সংস্কারকাজ শেষ হবে। ভয়াবহ বন্যায় সাতকানিয়ার তেমুহনীর রেলপথ এবং এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই সেখানে নতুন করে আরও তিনটি কালভার্ট নির্মাণ করা হবে। তবে এখন নয়, শুষ্ক মৌসুমে। তা ছাড়া যেখানে কালভার্ট নির্মাণ করা হবে, সেখানে এখনও পানি। তাই মালামাল নেওয়া যাচ্ছে না। নভেম্বরে কালভার্ট নির্মাণকাজ শুরু হবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা