× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

খননে উল্টো বিপদ

সরোয়ার জাহান সোহাগ, ডিমলা (নীলফামারী)

প্রকাশ : ২৬ আগস্ট ২০২৩ ১৪:৩২ পিএম

অপরিকল্পিতভাবে নাউতারা নদী পুনঃখননে দেবে গেছে সেতু। নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ছাতনাই নিয়াপাড়া গ্রামে। প্রবা ফটো

অপরিকল্পিতভাবে নাউতারা নদী পুনঃখননে দেবে গেছে সেতু। নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ছাতনাই নিয়াপাড়া গ্রামে। প্রবা ফটো

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত নাউতারা নদী। এটির পানিপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি জলকপাট নির্মাণ করা হয়েছিল বছর দুয়েক আগে। ডিমলা উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ডালিয়া বিভাগের উদ্যোগে নদীটি পুনঃখনন করা হয়। খননের পর বন্যা ও উজানের ঢলে জলকপাটসহ নদীর ওপরে থাকা অন্তত পাঁচটি সেতু দেবে ভেঙে গেছে।

ভাঙনে বিলীন হয়েছে বেশকিছু বাড়িঘরসহ ফসলি জমি। এতে চরম দুর্ভোগের শিকার নদীপারের কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা। অপরিকল্পিতভাবে খননের কারণে এমন অবস্থা হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের। তবে এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও পাউবো পরস্পরের ওপর দায় চাপাচ্ছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এলজিইডি ও পাউবোর সমন্বয়হীনতার কারণে দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন তারা।

পাউবো সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নাউতারা নদীর ২৫ কিলোমিটার এলাকা খননযন্ত্র (এক্সকাভেটর) দিয়ে পুনঃখনন করে। কিন্তু খননের এক মাস যেতে না যেতেই বর্ষায় উজানের ঢলে নদীর ওপরে থাকা জলকপাট ও সেতু দেবে যায়। 

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর আগে পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের মধ্যপাড়া এলাকায় নাউতারা নদীতে ৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি জলকপাট নির্মাণ করে নীলফামারী পাউবো। ২০২১ সালের শেষের দিকে অপরিকল্পিতভাবে নদীটি খননের পরে নিচের অংশের মাটি সরে জলকপাটটি প্রায় ৬ ফুট দেবে যায়। এটি অকেজো হয়ে পড়ে এবং পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে নদীর গতিপথ বদলে যায়। জলকপাটের দুই পাশের সংযোগ সড়কসহ পাঁচটি বসতবাড়ি ও মধ্যপাড়া সড়কটি নদীতে বিলীন হয়ে যায়।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, অপরিকল্পিত নদী খননের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। দেবে যাওয়া জলকপাট এখন তাদের গলার কাঁটা। নদীর পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে তাদের কৃষিজমি ভাঙছে। ভাঙনের মুখে রয়েছে শতাধিক বসতবাড়ি ও রাস্তা। এ ছাড়া জলকপাটটি দেখভালের দায়িত্ব কার সেটাও জানেন না তারা। দেবে যাওয়ার পর কেউ দেখতেও আসেননি। তাই কোনো সংস্কারও হয়নি।

এদিকে ছাতনাই মিয়াপাড়া গ্রামে ২০১৬ সালের দিকে নির্মাণ করা হয় ২০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু। নদী খননের পর পুরো সেতুটি ৫ ফুট দেবে ভেঙে পড়েছে। দুই পাশের সংযোগ সড়কের মাটিও সরে গেছে। গ্রামের বাসিন্দা লাল মিয়া বলেন, সেতুটি ভেঙে পড়ায় প্রায় ২ কিলোমিটার পথ ঘুরে শহরে বা বাজারে যেতে হচ্ছে। এতে সময় এবং অর্থ দুটোই অপচয় হচ্ছে। যানবাহন ঢুকতে না পারায় এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষিকাজ অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে। কেউ অসুস্থ হলে ঘাড়ে চেপে নদী পার হতে হয়। একই গ্রামে ৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের আরেকটি সেতু মাঝ বরাবর ৩ ফুট দেবে গেছে। এ ছাড়া ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে আছে ডিমলা-পূর্ব ছাতনাই মূল সড়কের সেতুসহ একাধিক সেতু।

নদীপারের আলী আজগর, মফিজুল উদ্দিন, আবুল খায়েরসহ অন্তত ২০ জন বাসিন্দা বলেন, সেতুর খুঁটির গভীরতা বিবেচনায় না নিয়ে অতিরিক্ত গভীর করে নদী খনন করা হয়েছে। এ ছাড়া নদীর দুই পাশে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না রেখে অপরিকল্পিত বাঁধ দেওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতে হাজারো একর ফসলি জমি জলাবদ্ধ হয়।

পূর্ব ছাতনাই ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন, ‘সেতুর পাইলিংয়ের চেয়ে নদী খননের গভীরতা বেশি হওয়ায় পিলারের নিচের মাটি সরে গেছে। ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে ভারি যানবাহন চলাচল করছে। যেকোনো সময় এ সেতু ভেঙে দুর্ঘটনায় আশঙ্কা রয়েছে।’

অপরিকল্পিত নদী খননের অভিযোগ অস্বীকার করে ডালিয়া পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদদৌলা বলেন, ‘বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও পানি নিষ্কাশনের জন্য পরিমাপ অনুযায়ী নদী পুনঃখনন করা হয়েছে। সেতুগুলো তৈরি করা হয়েছে অনেক আগে। তখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পাউবোর সমন্বয়হীনতার কারণে নদীর পরিমাপ বিবেচনায় আনেনি। ফলে এই অবস্থা হয়েছে।’

জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী ফিরোজ হাসান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে জানাব।’ নীলফামারী পাউবোর প্রকৌশলী বলেন, ‘সদ্য যোগদান করেছি। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা