লক্ষ্মীপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৯ আগস্ট ২০২৩ ১৯:৫৬ পিএম
আপডেট : ২৯ আগস্ট ২০২৩ ২০:১৫ পিএম
আহত শিক্ষার্থী মুনতাহা রিজমিকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে । প্রবা ফটো
লক্ষ্মীপুরে কলেজে যাওয়ার পথে সুবর্ণা মুনতাহা রিজমি নামে এক ছাত্রীকে কুপিয়ে ও ইট মেরে আহত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) দুপুর সোয়া ১টার দিকে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের
কলেজ রোডের সামাদ স্কুল দিঘী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। রিজমি লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের
একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ও লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের
বাইশমারা এলাকার প্রবাসী মুরাদ হোসেনের মেয়ে।
সদর উপজেলার দালাল বাজার
ডিগ্রি কলেজের এক ছাত্র (১৭) তার বন্ধুদের নিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ। অভিযুক্ত
কলেজছাত্র লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কালুহাজী সড়কের এক প্রবাসীর ছেলে।
সে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের পোশাক পরে প্রতারণার মাধ্যমে ওই কলেজে ক্লাস করত বলে
জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী
রিজমি ও তার মা সুমি ভূঁইয়া জানায়, অভিযুক্ত কলেজছাত্র প্রায় সাত মাস ধরে কলেজে
আসা-যাওয়ার পথে রিজমিকে উত্ত্যক্ত করত। এর মধ্যে তাকে প্রেমের প্রস্তাবও দেয়। কিন্তু
রিজমি তার প্রস্তাবে রাজি হয়নি। একপর্যায়ে রিজমি তার পরিবারকে ঘটনাটি জানায়। এ নিয়ে
অভিযুক্ত কলেজছাত্রকে সতর্ক করে দেওয়ার জন্য পরিবারের কাছেও বিচার দেন রিজমির মা।
তখন ওই কলেজছাত্রের মা জানিয়েছে, আর কখনও রিজমিকে উত্ত্যক্ত করবে না। কিন্তু এরপরও
তাকে উত্ত্যক্ত করত। প্রায়ই প্রেমের প্রস্তাব গ্রহণের জন্য চাপ দিত।
রিজমির মামা রাসেল
ভূঁইয়া জানান, ঘটনার সময় রিজমি বাড়ি থেকে কলেজে যাচ্ছিল। গাড়ি থেকে নেমে সামাদ
স্কুল মোড় থেকে সে হেঁটেই কলেজে যাচ্ছিল। পথে পেছন থেকে অভিযুক্ত কলেজছাত্র রিজমির
মাথায় ইট মারে। একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথার সামনের অংশেও আঘাত করে। তখন
তার সঙ্গে আরও ১০-১২ জন ছিল।
রিজমির মা সুমি
ভূঁইয়া বলেন, ওই কলেজছাত্র ও তার বন্ধুরা তার মেয়েকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। প্রেমের
প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চান।
নাম প্রকাশ্যে
অনিচ্ছুক সরকারি কলেজের দুই ছাত্রী জানায়, অভিযুক্ত কলেজছাত্র তাদের সঙ্গেই ক্লাস
করত। দালাল বাজার কলেজ থেকে ট্রান্সফার হয়ে সরকারি কলেজে ভর্তি হয়েছে বলে সবাইকে
জানিয়েছে। ওই কলেজছাত্র আর রিজমিকে প্রায়ই একসঙ্গে দেখা যেত। তবে দুজনের মধ্যে
প্রেমের সম্পর্ক ছিল কি না তা নিশ্চিত না তারা।
লক্ষ্মীপুর সরকারি
কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মাহবুবুল করিম বলেন, ’ছেলেটি আমাদের কলেজে ক্লাস করত কি
না, তা সঠিকভাবে বলতে পারছি না। ক্লাসের বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর ঘটনাটি কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে ঘটেছে। পরে ঘটনাটি জেনেছি। অভিযুক্ত
আমাদের ছাত্র না। রিজমিকে দেখতে হাসপাতালে আমাদের কয়েকজন শিক্ষককে পাঠিয়েছি।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সোহেল রানা বলেন, ’খবর পেয়ে ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’