× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

৬০ হাজারের অধিক খতিয়ান জরাজীর্ণ

সাতক্ষীরা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ৩১ আগস্ট ২০২৩ ১২:০৪ পিএম

আপডেট : ৩১ আগস্ট ২০২৩ ১৪:১৮ পিএম

সাতক্ষীরা সদর ভূমি অফিস। ছবি : সংগৃহীত

সাতক্ষীরা সদর ভূমি অফিস। ছবি : সংগৃহীত

সাতক্ষীরা জেলায় সিএস ও এসএ রেকর্ডের প্রায় ৬০ হাজারের অধিক খতিয়ান জরাজীর্ণ। ফলে হাজার হাজার বিঘা জমি অবৈধভাবে দখলে চলে যাচ্ছে। প্রকৃত জমির মালিকরা বিপাকে পড়েছেন, তারা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। জমি উদ্ধারপূর্বক মালিকানা স্বত্ব ফিরে পেতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন অনেকে। 

জেলা রকর্ড রুম সূত্রে জানা গেছে, সাতক্ষীরার ১ হাজার ৭১০ গ্রামের ১ হাজার ১০৩ মৌজায় ভূমি সংক্রান্ত তথ্য জেলা রেকর্ডরুমে সংরক্ষিত রয়েছে। এসব জমির লাখ লাখ খতিয়ান রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ব্রিটিশ শাসনামলে ক্যাডস্ট্রাল সার্ভে (সিএস) খতিয়ান অন্যতম। যেটি বাংলাদেশের প্রথম খতিয়ান নামে সমধিক পরিচিত। বাইরে নয় এসএ খতিয়ানও। এই দপ্তরে রেকর্ডের রেজিস্ট্রারের অন্তর্ভুক্ত খতিয়ানকে রেকর্ড অব রাইটস (আরওআর) বলা হয়। এর একটি কপি ইউনিয়ন ভূমি অফিসেও থাকে। রেকর্ডরুমের কর্মকর্তার কাছে ভুক্তভোগীরা সার্টিফায়েড খতিয়ান পাওয়ার আবেদন করেন। কিন্তু সিএস ও এসএ মিলিয়ে প্রায় ৬০ হাজারের অধিক খতিয়ান জরাজীর্ণ থাকায় তা দিতে পারছেন না। তাই জমি উদ্ধারে বেড়েছে আদালতে মামলা-মোকদ্দমা।

আরও জানা গেছে, এসএ রেকর্ড অনুযায়ী জেলায় ৯৬০টি মৌজা রয়েছে। এর মধ্যে শ্যামনগরের ১২০ মৌজায় ১ লক্ষাধিক, কালিগঞ্জের ২৩০ মৌজায় ১ লাখ ২২ হাজারের অধিক, আশাশুনিতে ৭২ মৌজায় ৮৫ হাজার, দেবহাটায় ২৬ মৌজায় ৫২ হাজার, সাতক্ষীরা সদরের ১২৪ মৌজায় ১ লক্ষাধিক, কলারোয়ায় ১০০ মৌজায় ৬৫ হাজার ও তালায় ১৬০ মৌজায় ১ লাখ ২৫ হাজারের অধিকসহ মোট ৬ লাখ ৪৯ হাজার খতিয়ান রয়েছে। এ ছাড়া সিএস খতিয়ান রয়েছে ২ লক্ষাধিক। 

সদর উপজেলার মাছখোলা গ্রামের আজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘সাতক্ষীরা মৌজায় সিএস ৩২৫৫ ও ৩২৫৬ দাগের ১২৬ শতক জমির মধ্যে ৬৩ শতক জমির মালিক আমাদের ওয়ারিশগণ। এসএ ১২২৩ ও ১২২৪ দাগে আমাদের ওয়ারিশগণের নামে ৪৫ শতক জমি রেকর্ড হয়। তবে বিআরএস খতিয়ানে আমাদের নামে ৬৪ শতক রেকর্ডভুক্ত হয়। জমিও আমাদের দখলে। কয়েক বছর পূর্বে আমাদের মধ্যে ৭ শতক জমি দাবি করে একজন আদালতে মামলা করেন। মামলার আরজিতে এসএ খতিয়ানের বর্ণনা দেন, কিন্তু সিএস খতিয়ানের কোনো ধারাবাহিকতা লেখেননি। এতে চরম হয়রানিতে পড়তে হয় আমাদের। জেলা রেকর্ডরুমে আরওআর জরাজীর্ণ থাকায় এসএ খতিয়ানের সার্টিফায়েড কপি দেয়নি। তবে একই আরওআর সাতক্ষীরা পৌর ভূমি অফিসে ভালো রয়েছে।’

জেলা রেকর্ডরুমের কিপার এম গোলাম মোস্তাফা বলেন, ‘আমাদের দপ্তরে সিএস ও এসএ খতিয়ান প্রায় ৬০ হাজারের অধিক জরাজীর্ণ বা নষ্ট। এসব খতিয়ানের সার্টিফায়েড কপি তুলতে প্রতিনিয়ত অনলাইন ও ম্যানুয়ালি আবেদন করছেন অনেকে। আরওআর যাচাই করে সার্টিফায়েড খতিয়ান কপি প্রস্তুত করি। কিন্তু পুরোনো রেকর্ডের আরওআর জরাজীর্ণ থাকায় কারও কারও সার্টিফায়েড কপি প্রস্তুত করতে পারি না। তখন স্যারের (এসি ল্যান্ড) স্বাক্ষরিত ওই খতিয়ানের একটি কপি তাদের হাতে তুলে দিই। সেই কপিতে লেখা থাকেÑ ‘এই অফিসের আরওআর জরাজীর্ণ থাকায় কপি সরবরাহ করা গেল না।’ তখন অনেকে আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। এক্ষত্রে আমাদের যে কিছু করার নেই সেটা তাদের বোঝানো যায় না।’ 

পৌর ভূমি কর্মকর্তা (নায়েব) মোস্তফা মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের এখানেও একটি আরওআর থাকে। তবে সেখানে কোনো কর্মকর্তার স্বাক্ষর থাকে না। আমাদের আরওআর দেখে খতিয়ানের প্রস্তুতের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন সেটা নেই। অনেকে মামলার প্রেক্ষিতে আমাদের কাছে আসে। খতিয়ানের আরওআর ভালো থাকলে স্বাক্ষরবিহীন জমির মালিকানা স্বত্বের বিবরণ লিখে দিই। আর ছেঁড়া থাকলে লিখে দেই জরাজীর্ণ।’

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমনা আইরিন বলেন, ‘ভুক্তভোগীরা সিএস ও এসএ খতিয়ানের সার্টিফায়েড কপি তুলতে ডকুমেন্ট সংরক্ষণগার জেলা রেকর্ডরুমে প্রতিনিয়ত আবেদন করছেন। কিন্তু অফিস পরিবর্তনসহ নানা কারণে পুরোনো কাগজপত্র নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তারা বঞ্চিত হচ্ছেন। এজন্য আরওআর লিখে দেওয়া হচ্ছে। তা ছাড়া নতুন খতিয়ানের (বিএস) ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।’

জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কাজী আরিফুর রহমান বলেন, ‘এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করেনি। খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তা ছাড়া জেলা রেকর্ড রুম, পৌর ভূমি অফিস, উপজেলা ভূমি অফিস, ইউনিয়ন ভূমি অফিসে খতিয়ানের জন্য আবেদন করে পায়নি এমন কেউ থাকলে আমার দপ্তরে পাঠিয়ে দিন। তাদের কাগজপত্র দেখে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’ 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা