চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২১:০৫ পিএম
আপডেট : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২২:০৪ পিএম
এসএ কাদেরী টিচিং ভেটেরিনারি হাসপাতালে কুকুরের ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি করেছেন চিকিৎসকরা। প্রবা ফটো
দেশে প্রথমবারের মতো একটি কুকুরের ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি করেছেন চিকিৎসকরা। দিন দশেক আগে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) ভেটেরিনারি ক্লিনিকসের আওতাধীন এসএ কাদেরী টিচিং ভেটেরিনারি হাসপাতালে এ অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। অপারেশনের পর কুকুরটিকে ছয় দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। পরে কুকুরটি পুরোপুরি সুস্থ আছে নিশ্চিত করে এটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
অস্ত্রোপচারে নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন ও সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ড. বিবেক চন্দ্র সূত্রধর। তিনি ও তার দলের সদস্যরা পোষা প্রাণীটির শরীর থেকে প্রজনন ক্ষমতার গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ (অণ্ডকোষ বা ডিম্বাশয়) অপসারণ করেছেন, যাকে স্পেয়িং বা প্রজনন ক্ষমতার অপারেশন বলা হয়। ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে একজন সার্জনকে বড় ছেদ না করেই যেকোনো প্রাণীর পেটের অভ্যন্তর দেখতে ও পরীক্ষা করতে সাহায্য করে। ল্যাপারোস্কোপ নামে একটি যন্ত্রের সাহায্যে এটি জরায়ু ফাইব্রয়েড, বন্ধ্যাত্ব, অবরুদ্ধ ফ্যালোপিয়ান টিউব ইত্যাদির মতো পেট-সম্পর্কিত সমস্যা নির্ণয়ে সহায়তা করে।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) অধ্যাপক বিবেক চন্দ্র সূত্রধর প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘তিন মাস আগে বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাপারোস্কোপিক মেশিনটি কেনে। এর সাহায্যে পরীক্ষামূলক কয়েকটি অস্ত্রোপচার করা হয়। পরে ২৩ আগস্ট সফল অস্ত্রোপচার হয়। এটি একটি বেওয়ারিশ কুকুর ছিল।’
দেশে এটি প্রথম সফল ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি দাবি করে তিনি বলেন, ’সাধারণত অস্ত্রোপচারের সময় একটি প্রাণীকে পুরোপুরি অজ্ঞান করে পুরো পেট কেটে ফেলতে হয়। ল্যাপারোস্কোপিক পদ্ধতিতে শরীরের ছোট একটি অংশ অবশ করতে হয়। এরপর ওই স্থানে কাছাকাছি তিনটি ছিদ্র করা হয়। এতে সহজে সম্পন্ন করা যায় অস্ত্রোপচার। ফলে এই পদ্ধতিতে ব্যথা কম হয়, সংক্রমণের ঝুঁকিও থাকে না। সাত দিনের মধ্যে অপারেশনের ক্ষত শুকিয়ে যায়। সাধারণ অপারেশন করতে যেখানে এক থেকে দেড় ঘণ্টা লাগে, সেখানে এটি করতে সময় লাগে ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট।’
অধ্যাপক বিবেক সূত্রধর বলেন, ’যারা কুকুর লালন-পালন করেন, তারা যদি পোষা কুকুরের বিনা ব্যথায় জন্মনিয়ন্ত্রণ করাতে চান, তাহলে আমাদের কাছে নিয়ে এলে আমরা ল্যাপারোস্কোপিক পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচার করে দেব। এ ছাড়া সিটি করপোরেশনও বেওয়ারিশ কুকুরের ব্যথাহীন জন্মনিয়ন্ত্রণ করাতে চাইলে তারা করতে পারবে।’