গোপালগঞ্জ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২২:৩৩ পিএম
আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২৩:৩৭ পিএম
জোনায়েদ মোল্লা। প্রবা ফটো
ভিসা পাসপোর্ট ছাড়া বিমানে ওঠে আলোচনায় আসা শিশু জোনায়েদ মোল্লা বাড়ি ফিরেই বাঁধা পড়েছে শিকলে। এর আগেও কাউকে কোনো কিছু না বলে চলে যাওয়ায় ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখা হতো তাকে। চারদিন আগে দাদিকে মাদ্রাসায় যাওয়ার ওয়াদা করে বাইর হয়ে ঢাকায় গিয়ে নিরাপত্তা কর্মীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে উঠে পরে বিমানে।
বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে জোনায়েদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, একটি রুমের মধ্যে খাটের ওপর বসে রয়েছে সে। পায়ে শিকল পরিয়ে ঘরের খুঁটির সঙ্গে তাকে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। সেখানেই তাকে খাবার দেওয়া হয়।
জানা গেছে, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের পারইহাটি গ্রামের সবজি ব্যবসায়ী ইমরান মোল্লার প্রথম পক্ষের ছেলে জোনায়েদ। মা অন্যত্র চলে যাবার পর সৎ মায়ের কাছে বড় হতে থাকে সে। ভর্তি করে দেওয়া হয় উজানী হাফিজিয়া মাদ্রাসায়। এখন ওই মাদ্রাসার ৫ম শ্রেণিতে পড়ে সে। তবে বিভিন্ন সময় বাড়ির কাউকে না বলে বাইরে চলে যায় জোনায়েদ। তবে এবার ঘটিয়েছে আবাক করা কাণ্ড।
জোনায়েদ জানায়, দাদি আসমা বেগমকে বলে তালাবদ্ধ ঘর থেকে বাইরে বের হয় সে। তারপর ইজিবাইকে করে মুকসুদপুর বাসস্ট্যান্ডে এবং সেখান থেকে ঢাকার বাসে উঠে চলে যায় সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ডে। সেখান থেকে বাসে করে বসুন্ধরা, এরপর এয়ারপোর্ট যায় সে। পরে উপরে উঠতে গেলে বাধা পেলে অন্য পাশ দিয়ে ঘুরে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে জোনায়েদ। পরে অন্য যাত্রীদের সঙ্গে চলে যায় কুয়েতগামী কুয়েত এয়ারওয়েজের রাত ৩টা ১০ মিনিটের একটি ফ্লাইটে। প্রায় ১ ঘণ্টার মত বিমানের সিটে বসে থাকার পর কোনো সিট ফাঁকা না থাকায় ধরা পড়ে সে। পরে তাকে বিমান থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে তাকে বিমানবন্দর থানা হেফাজতে রাখা হয়।
পরে এয়ারপোর্ট থানা থেকে ফোন আসার পর জোনায়েদের খোঁজ পায় পরিবার। জোনায়েদের চাচা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে। বাড়িতে এসেও পালিয়ে যায় সে। পরে খুঁজে তাকে শিকল দিয়ে তালাবন্ধ করা হয়।
এ ঘটনা পর থেকে জোনায়েদকে দেখতে ভিড় জমাচ্ছে এলাকাবাসী।
জোনায়েদের বাবা ইমরান মোল্লা জানান, ১৮ মাস বয়সে অভাব-অনাটনের কারণে জোনায়েদের মা তাকে ফেলে গিয়ে অন্যত্র বিয়ে করে। পরে তিনি আবার বিয়ে করেন। জোনাইয়েদের মানসিক সমস্যা থাকতে পারে তাকে শিগগিরই ভাল চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হবে।