প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৭:৫১ পিএম
আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:০০ পিএম
বিজিবি-বিএসএফ রিজিয়ন কমান্ডার ও ফ্রন্টিয়ার আইজি পর্যায়ে চার দিনব্যাপী সীমান্ত সম্মেলন যৌথ ঘোষণাপত্র স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। প্রবা ফটো
সীমান্ত
হত্যা বন্ধে আবারও প্রাণঘাতি নয় এমন অস্ত্র (নন-লেথাল) ব্যবহারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) রিজিয়ন কমান্ডার
ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ফ্রন্টিয়ার আইজি পর্যায়ে চার দিনব্যাপী সীমান্ত সম্মেলন
শেষে যৌথ বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার
(১৪ সেপ্টেম্বর) বিজিবির সরাইল, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার এবং
বিএসএফের ত্রিপুরা, মিজোরাম ও কাচার এবং মেঘালয় ফ্রন্টিয়ারের ফ্রন্টিয়ার আইজি পর্যায়ে
চার দিনব্যাপী সীমান্ত সমন্বয় সম্মেলন যৌথ ঘোষণাপত্র স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
বিজিবির
চট্টগ্রাম রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজেদুর রহমানের নেতৃত্বে ১৮ সদস্যের
বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশ নেয়। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে বিজিবির সরাইল রিজিয়ন
কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শহিদুল ইসলাম, সকল রিজিয়নের অধীন সেক্টর কমান্ডার,
বিজিবির স্টাফ অফিসার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ভূমি রেকর্ড ও
জরিপ অধিদপ্তর, যৌথ নদী কমিশন এবং জরিপ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
বিএসএফের
পক্ষে মেঘালয় ফ্রন্টিয়ারের ফ্রন্টিয়ার আইজি প্রদীপ কুমারের নেতৃত্বে সাত সদস্যের
ভারতীয় প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশ নেয়। ভারতীয় প্রতিনিধিদলে বিএসএফ মেঘালয় এবং মিজোরাম
ও কাচার ফ্রন্টিয়ারের আইজি ছাড়াও সংশ্লিষ্ট সেক্টরের ডিআইজি, বিএসএফের স্টাফ অফিসার,
ভারতের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিজিবি
সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের হালিশহরে বিজিবির চট্রগ্রাম
রিজিয়ন সদর দপ্তরে সীমান্ত সম্মেলন আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা
নিরসন, অবৈধ অনুপ্রবেশ, মাদক পাচার, মানব পাচার রোধ, স্বর্ণ ও অস্ত্র চোরাচালান রোধসহ
বিভিন্ন ধরনের আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমন, সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক
কাজ এবং পারস্পরিক সম্প্রীতি ও আস্থা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হয়। বৃহস্পতিবার যৌথ ঘোষণাপত্র
স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে সম্মেলন শেষ হয়েছে।
ঘোষণাপত্রের
মধ্যে ছিল, বিজিবি সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক নিরস্ত্র বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা বা আহতের
ঘটনা জোরালোভাবে তুলে ধরে। এ প্রসঙ্গে বিজিবি বিএসএফকে গত বছরের সেপ্টেম্বরে দুদেশের
প্রধানমন্ত্রীর যৌথ বিবৃতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় আনার জন্য
আহ্বান জানায়। সীমান্ত হত্যা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে বিএসএফের পক্ষ থেকে নন-লেথাল নীতি
অনুসরণের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়। উভয়পক্ষ সীমান্তে পেশাদারিত্বের সঙ্গে যৌথভাবে
বিভিন্ন দায়িত্ব পালন বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্তে রাত্রিকালীন যৌথটহল বৃদ্ধি, সীমান্তবর্তী
এলাকার জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, জনসচেতনতা ও জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি গ্রহণ,
অতিরিক্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং তাৎক্ষণিক তথ্য আদান-প্রদানের ব্যাপারে সম্মত
হয়।
ঘোষণাপত্রে
আন্তঃ সীমান্ত অপরাধ যেমন- মাদক পাচার, অবৈধ অনুপ্রবেশ, মানব পাচার, স্বর্ণ, অস্ত্র,
জাল মুদ্রার নোট প্রভৃতি চোরাচালান রোধে সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা কার্যকরভাবে
বাস্তবায়নের ওপর উভয়পক্ষ হতে গুরুত্বারোপ করা হয়। সীমান্ত অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের
সম্পর্কে তথ্য আদান-প্রদান এবং তাদের সম্পর্কে প্রাপ্ত তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে মাঠ পর্যায়ে
শেয়ার করতেও উভয়পক্ষ সম্মত হয়।
আন্তর্জাতিক
সীমানা লঙ্ঘন করে উভয়দেশের নাগরিকদের অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম রোধকল্পে সীমান্তবর্তী
এলাকায় জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার ব্যাপারে উভয়পক্ষ কর্তৃক একমত হয়।
উভয়পক্ষ
পূর্বানুমতি ব্যতীত সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে কোনো ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ না করার ব্যাপারে
পারস্পরিক সম্মতি জ্ঞাপন করেন। এ ছাড়া সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে বন্ধ থাকা উন্নয়নমূলক
কাজসমূহ জয়েন্ট ভেরিভিকেশনের মাধ্যমে দ্রুত সমাধানের ব্যাপারে সম্মত হন।
এর আগেও বহুবার বিএসএফ একই ধরণের প্রতিশ্রুতি দিলেও সেটার বাস্তবায়ন করেনি। ফলে সীমান্তে থামছে না সীমান্ত হত্যা।