× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

চালুর আগেই অচল তিন কোটি টাকার হাজিরা মেশিন

সরোয়ার জাহান সোহাগ, ডিমলা (নীলফামারী)

প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৩:৩৭ পিএম

আপডেট : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৫:২১ পিএম

ডিজিটাল হাজিরা মেশিন।

ডিজিটাল হাজিরা মেশিন।

নীলফামারীর ডিমলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের প্রতিদিন সঠিক সময়ে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে বসানো হয়েছিল ডিজিটাল হাজিরা মেশিন। কিন্তু নিম্নমানের মেশিন, সফটওয়্যার না থাকা, তদারকির অভাবসহ নানা কারণে তিন বছর ধরে অচল পড়ে রয়েছে মেশিনগুলো। এমনকি অনেক মেশিন এক দিনের জন্য পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়নি। শিক্ষা অফিসে বারবার জানানোর পরও সমস্যার সমাধান হয়নি বলে অভিযোগ শিক্ষকদের।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বেশিরভাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লাগানো হয়েছে বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্র। যেগুলোর ৯০ ভাগ বর্তমানে নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক মেশিনের সংযোগও দেওয়া হয়নি। কিছু মেশিন আবার এখনও প্যাকেটবন্দি রয়েছে। 

প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়ন-সংস্কার (স্লিপ ফান্ড) তহবিল থেকে উপজেলার ২১৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হাজিরা মেশিন কেনার নির্দেশনা দেন তৎকালীন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস। ওই নির্দেশনার আলোকে প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে ডিজিটাল হাজিরা মেশিনগুলো কেনেন প্রধান শিক্ষকরা।

তবে অভিযোগ রয়েছে, স্বপন কুমার দাস তার পছন্দের প্রতিষ্ঠান থেকে মেশিনগুলো কেনার নির্দেশনা দেন শিক্ষকদের। এমনকি বাজারদর থেকেও দ্বিগুণ টাকা ব্যয়ে মেশিনগুলো ক্রয় করা হয়েছে বলে জানান একাধিক শিক্ষক। তারা বলেন, ওই সময় প্রতিটি মেশিনের বাজারদর ছিল ছয়-সাত হাজার টাকা, অথচ আমাদের পরিশোধ করতে হয়েছে ১৫ থেকে ২৫ হাজার টাকা। অথচ নিয়ম রয়েছে, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাজার যাচাই করে নিজেদের পছন্দমতো সাশ্রয়ীমূল্যে বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন কিনে বিদ্যালয়ে স্থাপন করবে। নির্দিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে মেশিন ক্রয়ের বাধ্যবাধকতা নেই। নির্দেশনা উপেক্ষা করে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কেনা এসব মেশিন কিছুসংখ্যক বিদ্যালয়ে চালু হলেও কিছুদিনের মধ্যে তা অকেজো হয়ে পড়ে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলার ঠাকুরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে আমরা হাজিরা মেশিন ক্রয় করেছি, সংযোগ না থাকায় কখনও ব্যবহার করা যায়নি, এখন দেখছি মেশিনটি নষ্ট হয়েছে। অফিসে বারবার বলা হলেও তারা কোনো কর্ণপাত করেনি।

সুন্দরখাতা ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনন্ত কুমার রায় বলেন, অফিস থেকে আমাদের এই মেশিন দেওয়া হয়েছে, আমরা এক দিনও ভালোভাবে চালাতে পারিনি, মেশিন ভালো আছে নাকি নষ্ট হয়েছেÑ কীভাবে বুঝব আমরা, শিক্ষা অফিসে বলেছি কোনো কাজ হয়নি।

খগা বড়বাড়ী বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আইনুল হক বলেন, মেশিন লাগানোর পর আমরা চালু করতে পারিনি। শিক্ষা অফিসে বলেছি একাধিকবার, কিন্তু কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। 

ডিজিটাল হাজিরা মেশিন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী স্বাধীন সরকার জানান, তৎকালীন শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাসের মাধ্যমে ডিমলা উপজেলার ১৪৬টি বিদ্যালয়ে আমরা হাজিরা মেশিন সরবরাহ করেছি। প্রতিটি মেশিনের দাম ধরা হয়েছিল ৮ হাজার টাকা। পাশাপাশি সিম ও সফটওয়্যার বাবদ ধরা হয়েছে আরও ২ হাজার টাকা। কিন্তু তা পরিশোধ করা হয়নি।

সাবেক এই শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শিক্ষকদের হাজিরা মেশিন ক্রয়ের নির্দেশনা দিয়েছিলাম, তারা কোথা থেকে কিনেছেনÑ এটা তাদের ব্যাপার, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।

বর্তমান শিক্ষা অফিসার নুর মোহাম্মদ বলেন, বিষয়টি যেহেতু আমার সময়ে হয়নি তাই এ ব্যাপারে মন্তব্য করা কঠিন। তারপরও আমি খোঁজখবর নিয়ে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা