জামালপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৬:২৪ পিএম
আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:০৬ পিএম
সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যা মামলার আসামি সহিদুর রহমান লিপন।
জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি পদে আবার দায়িত্ব পেয়েছেন সহিদুর রহমান লিপন। তিনি সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যা মামলার আসামি। হত্যা মামলার আসামিকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দিয়ে পুনরায় দায়িত্বশীল পদে অবস্থান দেওয়াকে ‘পুরস্কার’ হিসেবে দেখছেন স্থানীয়রা। এ নিয়ে উপজেলাজুড়ে চলছে নানা সমালোচনা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে জামালপুর জেলা তাঁতী লীগের আহ্বায়ক জাকির হোসেন রুকু এবং সদস্য সচিব আরমান হোসেন সাগরের সই করা দলীয় প্যাডে বকশীগঞ্জ উপজেলা তাঁতী লীগের ৭১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। আগামী ৩ বছরের জন্য এই কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন সহিদুর রহমান লিপন।
সহিদুর রহমান লিপন বকশীগঞ্জ উপজেলার মালিরচর তকিরপাড়া গ্রামের মো. আব্দুল করিমের ছেলে। তিনি সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ১১ নম্বর আসামি। নাদিম হত্যাকাণ্ডে লিপনকে নিয়ে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর ১৭ জুন দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি পদ থেকে তাকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়।
গত জুনে পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে রাতে বাসায় ফেরার পথে জামালপুরের বকশীগঞ্জে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন ১৫ জুন তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ১৮ জুন নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান বাবুকে প্রধান আসামি করে ২২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় ২৫ জনের বিরুদ্ধে বকশীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, মামলার ১১ নম্বর আসামি করা হয় উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি সহিদুর রহমান লিপনকে। মামলায় উল্লেখ করা হয়, নাদিম হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয় তাঁতী লীগ নেতা লিপন। মৃত্যু নিশ্চিত করতে লিপন সর্বাত্মক চেষ্টা চালায়।
লিপনকে তাঁতী লীগে পুনরায় ফেরানোর ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম। তিনি বলেন, ‘কীভাবে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেওয়া ও এজাহারভুক্ত আসামিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন তাঁতী লীগের উপজেলা শাখার সভাপতি পদে নিযুক্ত করা হয়? মূলত হত্যাকাণ্ডের দায় থেকে মুক্ত করতেই সন্ত্রাসী লিপনকে তাঁতী লীগের উপজেলা শাখার সভাপতি করা হয়েছে। আমরা চাই, সুষ্ঠু বিচারের স্বার্থে তাঁতী লীগ থেকে অভিযুক্ত লিপনকে বহিষ্কার করা হোক।’
সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী ইউসুফ আলী বলেন, ‘আসলে এমন একটি চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার আসামিকে ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠনের উপজেলা শাখার সভাপতি পদে দায়িত্ব দেওয়া মানে আসামিকে পুরস্কৃত করার শামিল।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জামালপুর জেলা তাঁতী লীগের আহ্বায়ক জাকির হোসেন রুকু বলেন, ‘নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা থাকতেই পারে। সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলার আসামি হওয়ায় সহিদুর রহমান লিপনকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছিলাম। এখন তিনি জামিনে আছেন। সে কারণেই তাকে বকশীগঞ্জ উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’