বগুড়া অফিস
প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:৪০ পিএম
আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:১৫ পিএম
শিবগঞ্জে একটি হিমাগারে অবৈধ উপায়ে আলু মজুদের দায়ে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। প্রবা ফটো
আগামী সপ্তাহের মধ্যে আলুর বাজারের দর নিয়ন্ত্রণে না এলে আমদানির জন্য বর্ডার খুলে দিতে সরকারের কাছে অনুরোধ করা হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম শফিকুজ্জামান।
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বগুড়ার শিবগঞ্জে একটি হিমাগারে অভিযান শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। পরে বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি।
এএইচএম শফিকুজ্জামান বলেন, ‘দেশে আলুর পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। কিন্তু বণ্টন চ্যানেলে বিশৃঙ্খলার কারণে সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশি দামে আলু বিক্রি করা হচ্ছে। এসব বিশৃঙ্খলা দূর করতে আমরা অভিযান চালাচ্ছি। আশা করছি, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। যদি আগামী সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয়, তাহলে আমরা বর্ডার খুলে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ করব।’
জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আলুর মজুদ, সরবরাহ পরিস্থিতি, ক্রয়-বিক্রয় রসিদ সংরক্ষণ এবং পাকা রসিদ নিশ্চিত করতে মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় আরঅ্যান্ডআর পটেটো কোল্ড স্টোরেজে অভিযান চালানো হয়। জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম শফিকুজ্জামানের নেতৃত্বে দুপুর ১টা ২০ মিনিট পর্যন্ত সেখানে অভিযান চালানো হয়। অভিযানকালে অবৈধ উপায়ে মজুদ এবং কেনাবেচার তথ্য কারসাজি করে বেশি দামে আলু বিক্রির অভিযোগে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। আটকরা হলেন—রিপন, শাহ্ আলম ও জাহিদ। তাদের শিবগঞ্জ থানায় দেওয়া হয়েছে।
পরে জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম শফিকুজ্জামান কোল্ড স্টোরেজ মালিক ও ব্যবসায়ীদের সরকার নির্ধারিত মূল্যে আলুর মূল্যসংবলিত ব্যানার টানানো, আলু কেনাবেচার পাকা রসিদ সংরক্ষণ এবং আলু কোথায় কার কাছে বিক্রয় করা হচ্ছে তার তথ্য সংরক্ষণের নির্দেশনা দেন।
অভিযানকালে বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মেজবাউল করিম, শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার, শিবগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানভির হাসান, বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহসভাপতি মাফুজুল ইসলাম রাজ, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বগুড়া জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ইফতেখারুল আলম রিজভীসহ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ বলেন, ‘জাতীয় ভোক্তা অধিকারের পক্ষ থেকে সোপর্দ করা তিন ব্যক্তিকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে এখনও মামলা হয়নি। অবৈধ উপায়ে আলু মজুদ ও কেনাবেচার তথ্য কারসাজির অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে।’
এর আগে বাজার স্থিতিশীল রাখতে ১৪ সেপ্টেম্বর সরকারের পক্ষ থেকে প্রথমবারের মতো আলুর দাম বেঁধে দেওয়া হয়। ঘোষণা অনুযায়ী হিমাগার পর্যায়ে প্রতি কেজি আলুর দাম হবে ২৬ থেকে ২৭ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে তা ৩৫ থেকে ৩৬ টাকায় বিক্রি করতে হবে। তবে বাস্তবতা হলো—সরকারের বেঁধে দেওয়া দরের চেয়ে প্রকারভেদে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেশি দরে আলু কেনাবেচা হচ্ছে।