× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

গুরুদাসপুর ‘কিডনি হাট’

নাটোর প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০১:১৫ এএম

আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১০:৩৫ এএম

নাটোরের গুরুদাসপুরে কিডনি বিক্রিকারী এক ব্যক্তি। সম্প্রতি তোলা ছবি। প্রবা ফটো

নাটোরের গুরুদাসপুরে কিডনি বিক্রিকারী এক ব্যক্তি। সম্প্রতি তোলা ছবি। প্রবা ফটো

নাটোরের গুরুদাসপুরে নিত্যপণ্যের মতো দামাদামি করে কিডনি বিক্রি হচ্ছে বলে জানা গেছে। তরুণ-তরুণীদের প্রতিটি কিডনি ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা আর মধ্যবয়সিদের কিডনি বিক্রি হচ্ছে ২ থেকে ৪ লাখ টাকায়। এখন পর্যন্ত উপজেলায় শতাধিক কিডনি বিক্রি হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ ব্যবসায় জড়িতরাসহ একাধিক কিডনি বিক্রেতা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তারা জানান, কিডনি বিক্রির জন্য বাজারের মাছ-মাংসের মতো দরদাম করা হয়। এরপর ‘সিন্ডিকেট’-নির্ধারিত দামে মিলে গেলে বিক্রেতাকে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রোগীর স্বজন সাজিয়ে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। জেলাজুড়ে বিষয়টি ওপেন সিক্রেট বলেও জানান তারা।

অধিকাংশ কিডনি বিক্রেতা জানিয়েছেন, তারা ‘অভাবের কারণে’ কিডনি বিক্রি করেছেন।

গুরুদাসপুরের এই কিডনি সিন্ডিকেট পরিচালিত হয় ঢাকা থেকে। এর নেতৃত্ব দেন সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মোনায়েম হোসেন জেমস। তার হয়ে গুরুদাসপুরে কিডনি সংগ্রহের কাজ করেন আব্বাস ও রশিদ নামের দুই ব্যক্তি। তারা দরিদ্রদের টার্গেট করে অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে কিডনি বিক্রিতে উদ্বুদ্ধ করেন।

কিডনি বেচাকেনা নিয়ে প্রশাসনের কাছে কোনো ‘তথ্য’ নেই। তবে পুলিশ জানিয়েছে তারা তদন্তে নেমেছে। শিগগির চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হবে।

কিডনি কেনাবেচার সত্যতা স্বীকার করেছেন চক্রের সদস্য উপজেলার আব্বাসের মোড় এলাকার রশিদ। তিনি জানান, মোনায়েম হোসেন জেমসের নেতৃত্বে কিডনি সিন্ডিকেট চলছে। তিনি ঢাকা থেকে সব নিয়ন্ত্রণ করেন। বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে কিডনি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগীদের টার্গেট করে কিডনি কেনার লোক ঠিক করা হয়। পরে প্রলুব্ধদের কাছ থেকে কেনা হয় কিডনি। তরুণদের কিডনির চাহিদা সবচেয়ে বেশি।

চক্রের আরেক সদস্য আব্বাস ওরফে কিডনি আব্বাস বলেন, ‘আমি নিজের কিডনি বিক্রি করেছি। এজন্য অনেকেই আমার কাছে কিডনি বিক্রি-সংক্রান্ত পরামর্শের জন্য আসে। কেউ এলে পরামর্শ দিই। তবে আমি চক্রের সঙ্গে জড়িত না। জেমস ও রশিদ আমাকে হিংসা করে মিথ্যা কথা বলেছে। তারা দুজনই হোতা।’ 

সম্প্রতি কিডনি বিক্রির জন্য রশিদের কাছে গিয়েছিলেন উপজেলার সাহাপুরের নজরুল ও তার মা। নজরুলের মা বলেন, ‘দেনার কারণে নজরুলের কিডনি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এজন্য রশিদের সাথে যোগাযোগ করি। রশিদ জানায়, ক্রেতা পাওয়া গেলে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা দাম দেওয়া হবে। ঢাকাতে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন হবে। এ কাজে সহযোগিতা করবে আব্বাস ও জেমস।’ 

চাচকৈড় বাজারের মধ্যম পাড়া এলাকার খৈবারসহ আরও কয়েকজন কিডনি বিক্রেতা জানান, তারা জেমস, রশিদ ও আব্বাসের মাধ্যমে ভারতে গিয়ে কিডনি বিক্রি করেছেন। এজন্য তাদের ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। অভাবের কারণেই তারা কিডনি বিক্রি করেছেন।

কিডনি বিক্রি করতে গিয়ে ফিরে আসা জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আব্বাস ও জেমসের প্রলোভনে কিডনি বিক্রিতে রাজি হয়েছিলাম। পরে ভুল বুঝতে পেরে ফিরে এসেছি।’

চক্রের হোতা মোনায়েম হোসেন জেমস দাবি করেছেন তিনি কিডিনি বিক্রির সঙ্গে জড়িত নন। প্রতিদিনের বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমি ঢাকায় নিয়মিত হাসপাতালে যাই এলাকার রোগীদের দেখাশোনা করতে। আমি কিডনি বিক্রির সঙ্গে জড়িত নই।’

নাটোরের সিভিল সার্জন ডা. মশিউর রহমান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কিডনি বেচাকেনার ব্যাপারে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।’

নাটোরের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘কিডনি পাচার সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা