কক্সবাজার অফিস
প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:৫৩ পিএম
আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:২১ পিএম
চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েলের মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ফুটেজ। প্রবা ফটো
কক্সবাজারে সমাজসেবা কার্যালয়ের এক ইউনিয়নকর্মীকে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েলের মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনাটি গত মাসের হলেও বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওর সূত্র ধরে এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে। তার নাম মোর্শেদ আলম। তিনি কক্সবাজার সদর উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের একজন ইউনিয়নকর্মী। সদর উপজেলার চৌফলদণ্ডী, ভারুয়াখালী, পোকখালী ও পিএমখারী ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত তিনি। নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৬ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে। তবে নির্যাতনের বিষয়ে মুখ খোলেননি মোর্শেদ।
বৃহস্পতিবার ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে একজনকে প্রকাশ্যে কিল-ঘুসি-লাথি মারছেন উপজেলার চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল। মারধরের শিকার ব্যক্তি নিজকে রক্ষা করতে নানাভাবে চিৎকার করছেন।
বিষয়টি নিয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি মারধরের শিকার মোর্শেদ আলম। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, মোর্শেদের সহকর্মী ও পরিবারের সদস্যরা এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে রাজি নন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান, মোর্শেদ প্রতিদিনের মতো ১৬ আগস্ট উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণের এক পাশে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ছোটন নামের এক সহকর্মীর সঙ্গে কথা বলছিলেন। এ সময় মোর্শেদের পেছন থেকে এসে পরিষদে প্রবেশ করেন চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল। ছোটন চেয়ারম্যানকে দেখে সালাম জানালেও মোর্শেদ তা দেখেননি। ফলে সালাম না দেওয়ার অপরাধে জুয়েল প্রকাশ্যে মারধর করেন মোর্শেদকে। এতে মোর্শেদের মাথা ফেটে রক্তাক্ত হয়ে যায়। পরে সহকর্মীরা মোর্শেদকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের নথিপত্রে দেখা গেছে, ১৬ আগস্ট বিকাল ৩টার পরেই মোর্শেদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
মোর্শেদের পরিবারের সদস্যরা জানান, টানা ১০ দিন চিকিৎসা শেষে মোর্শেদ ফিরলেও নানা হুমকির কারণে বিষয়টি নিয়ে কোথাও কোনো অভিযোগ করেননি।
মারধরের ঘটনা নানাভাবে শুনেছেন বলে স্বীকার করেছেন কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকারিয়া ও কক্সবাজার জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক হাসান মাসুদ। তবে এই দুই কর্মকর্তার দাবি, ঘটনার শিকার ব্যক্তি কোনো অভিযোগ বা মৌখিকভাবে বিষয়টি স্বীকার করেননি।
কায়সারুল হক জুয়েল বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বঙ্গবন্ধুসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করে সমালোচিত হয়েছেন। সর্বশেষ কক্সবাজার পৌর নির্বাচনে তার এক ভাই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মেয়র নির্বাচন করেন। যে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তিনিসহ তার পরিবারের পাঁচজনকে ক্ষমতাসীন দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এর মধ্যে প্রকাশ্যে ইউনিয়নকর্মীকে মারধর করে ফের আলোচনায় এসেছেন জুয়েল।
এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য কায়সারুল হক জুয়েলের ফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, তিনি এক সপ্তাহ ধরে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন।