বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক
চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১১:০৯ এএম
কক্সবাজারের চকরিয়ার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ স্থাপনা। প্রবা ফটো
কক্সবাজারের চকরিয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের প্রায় ৩০ হেক্টর জমি বেদখল হয়ে আছে। বেদখল জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে শতাধিক অবৈধ স্থাপনা। পার্ক কর্তৃপক্ষ একাধিকবার চেষ্টা করেও ওই জমি দখলে নিতে পারছে না। এ ছাড়া সীমানাপ্রাচীরের বাইরে থাকা ৩০০ হেক্টর জমিও তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে।
পার্কের তত্ত্বাবধায়ক মাজহারুল ইসলাম জানান, চকরিয়ার ডুলাহাজারায় বন মন্ত্রণালয়ের থেকে ছোট-বড় বৃক্ষরাজিতে ভরপুর ৯০০ হেক্টর জমি পর্যটন মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হয়। পরে ১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক প্রতিষ্ঠা করা হয়। বন্য প্রাণীর অবাধ বিচরণের জন্য ৩০০ হেক্টর জমি সীমানাপ্রাচীরের বাইরে রাখা হয়। ৬০০ হেক্টরের মধ্যে মূল সাফারি পার্ক প্রতিষ্ঠা করা হয়। এর মধ্যে প্রায় ৩০ হেক্টর জমি শুরু থেকেই স্থানীয় প্রভাবশালীদের দখলে।
সরেজমিন দেখা গেছে, মূল সাফারি পার্কের ডান পাশে ৩০ হেক্টর জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে কাঁচাপাকা শতাধিক বসতঘর। ঘরে বসবাসকারী আলী আহমদ নামে একজন বলেন, ‘সাফারি পার্ক প্রতিষ্ঠার পূর্বে থেকেই আমরা এই জমিতে বসবাস করে আসছি। বসবাসের বিকল্প ব্যবস্থা থাকলে এখানে থাকতাম না।’ একই কথা বলেন অন্য বাসিন্দারাও।
তত্ত্বাবধায়ক মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘পূর্বে পার্কের সামনেই অবৈধ দখলদারদের বসতি ছিল। সেখান থেকে তাদের সরিয়ে দিলে অন্যপাশে প্রায় ৩০ হেক্টর জমি দখল করে বসবাস করছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কর্মকর্তা উচ্ছেদ করতে লিখিতভাবে সহায়তা চান কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের। সেই আবেদন এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। ওই আবেদনে ৬৯ দখলদারের নাম ছিল।’
অপরদিকে সাফারি পার্কের সীমানাপ্রাচীরের বাইরে থাকা ৩০০ হেক্টর জমি বন্য প্রাণী বিচরণের জন্য বলা হলেও তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। স্থানীয় প্রভাবশালীদের নজর পড়েছে ওই জমির দিকে। ফলে গাছ ও পাহাড় রক্ষা করতে গিয়ে একাধিকবার ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে পার্ক কর্তৃপক্ষ ও দখলদারদের মধ্যে। বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘ওই ৩০০ হেক্টর জমি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেখান থেকে স্বল্পসংখ্যক গাছ চুরি হয়েছে মাত্র।’
জানতে চাইলে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বলেন, ‘দখল নিয়ে সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ অবহিত করেনি। উচ্ছেদের বিষয়ে জেলা প্রশাসন থেকে কোনো আদেশও পাইনি। আদেশ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’