× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

লোকসানে পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন রাজবাড়ীর কৃষক

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১২:১৭ পিএম

আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১২:৩৮ পিএম

ভালো দাম না পেয়ে লোকসানের মুখে পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষক। প্রবা ফটো

ভালো দাম না পেয়ে লোকসানের মুখে পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষক। প্রবা ফটো

রাজবাড়ীতে পাট চাষে খরচ বেড়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় বাজারে পাট এবার কম দামে বিক্রি হচ্ছে। ভালো দাম না পেয়ে লোকসানের মুখে পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন জেলার কৃষক।

পাটচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বিঘা জমিতে (৩৩ শতাংশে এক বিঘা) পাট চাষে গড়ে ২৯ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। পাট হয় সাধারণত ৮ থেকে ১০ মণ। বাজারে সবচেয়ে ভালো পাটের দাম ২ হাজার ৪০০ টাকা। সে হিসেবে প্রতি বিঘায় পাট চাষ করে বিঘাপ্রতি ৫ হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে।

জেলার কৃষক বলছেন, গত বছর তারা প্রতি মণ পাট বিক্রি করেছেন ৩ হাজার টাকায়। এবার সার, ওষুধের খরচ ও শ্রমিকের মজুরি বেড়েছে। এতে পাটের দাম আগের বছরের তুলনায় বেশি হওয়া উচিত। কিন্তু এবার প্রতি মণ পাট ২ হাজার টাকার বেশি বলছে না কেউ। তবে পানির অভাবে পাটের রঙ ভালো হয়নি বলছেন তারা।

এখন এ দামে পাট বিক্রি করলে লোকসান হবে বলছেন পাটচাষিরা। ধারদেনা করে পাট চাষ করা কৃষক এখন দেনা পরিশোধ করবেন কীভাবে, তা নিয়ে পড়েছেন দুশ্চিন্তায়।

এমন হলে পরের বছর আবার পাটের আবাদ করবেন কি না তা নিয়ে সন্দিহান চাষিরা।

সদর উপজেলার পরিতোষ কুণ্ডু বলেন, ‘আমরা কিন্তু পরিশ্রম কম করি নাই। কিন্তু পাটের মান এবার ভালো হয়নি। জাগ দেওয়ার সময়ও ঠিকমতো পানি পাই নাই। বাজারে এবার পাটের দাম নেই। মূল খরচও উঠবে না। বরং ৫-৭ হাজার টাকা বিঘাপ্রতি লোকসান হবে। এভাবে লোকসান হলে আগামী পাট আবাদ করব কি না সন্দেহ আছে। কারণ এত কষ্ট করে ন্যায্যমূল্য না পেলে আমাদের আর কিছুই বলার থাকে না। শুধু বুক চাপড়াতে ইচ্ছা করে।’

রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালকের কার্যালয়সূত্রে জানা যায়, জেলার উপজেলার মাটিই পাট চাষের উপযোগী। চলতি মৌসুমে ৪৯ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি পাট আবাদ করা হয়েছে বালিয়াকান্দি উপজেলায়। এ উপজেলায় ১২ হাজার ৩৬০ হেক্টরে পাট চাষ করা হয়েছে। আর গোয়ালন্দ উপজেলায় পাটের আবাদ সবচেয়ে কম। এ ছাড়া সদর উপজেলায় ১০ হাজার ৯২, পাংশা উপজেলায় ১২ হাজার ২৭৮, কালুখালী উপজেলায় ৯ হাজার ৪৫০ ও গোয়ালন্দ উপজেলায় ৪ হাজার ৮৭০ হেক্টর। গত বছর আবাদ করা হয়েছিল ৪৯ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে, যা আগের বছরের তুলনায় ৭৭০ হেক্টর কম।

পাটের বাজারদরের পরিস্থিতি তুলে ধরে রাজবাড়ী বাজারের পাট ব্যবসায়ী মাসুদ মোল্লা বলেন, ‘পাটকল কর্তৃপক্ষ সেভাবে পাট কিনছে না। আবার পাটের মানও ভালো না। প্রতি মণ পাট ১ হাজার ৬০০ থেকে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৪০০ টাকা দরে কেনা হচ্ছে। সব বাজারের একই অবস্থা।’

গত বছর পাট কিনে লোকসানের মুখে পড়ায় এবার বুঝেশুনে পাট কেনার কথা জানালেন রাজবাড়ী বাজারের পাট ব্যবসায়ী আবদুল আজিজ। তিনি বলেন, ‘আমাদের গত বছর পাটের ব্যবসা ভালো যায় নাই। লোকসান হয়েছে। অনেক পাট বিক্রি করতে পারি নাই। পাট গুদামে ফেলে রেখে লাভ কী? এজন্য এবার বুঝেশুনে পাট কিনছি।

এবার পাটের গুণগত মান ভালো না হওয়া ও দাম কম হওয়ার কারণ হিসেবে ফরিদপুর পাট অধিদপ্তরের মুখ্য পাট পরিদর্শক মিজানুর রহমান বলেন, ‘এ বছর পাট জাগ দেওয়ার জন্য অনেক এলাকায় পর্যাপ্ত পানি ছিল না। এতে পাটের গুণগত মান ভালো হয় নাই। কোয়ালিটি ভালো না হলে পাট বিদেশে রপ্তানি করা যায় না। আবার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণেও পাট রপ্তানি অনেকটা কমে গেছে। এতে বিদেশে আশানুরূপভাবে পাট রপ্তানি করা যায় নাই। আবার দেশেও চাহিদার তুলনায় বেশি পাট আবাদ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে পাটের দাম তুলনামূলক কম।’

এ বিষয়ে রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বৈশ্বিক মন্দা পাটের দাম কম হওয়ার একটি অন্যতম কারণ। এ ছাড়া পাটের গুণগত মানও বড় বিষয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘বোরো মৌসুমে কৃষককে সরকারিভাবে বীজ বিতরণ করা হবে। পাট চাষ করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বাজারে বর্তমানে সবচেয়ে ভালো পাট মণপ্রতি ২ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে এ ধরনের পাট খুব কম।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা