নোয়াখালী প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০২৩ ১৯:১৮ পিএম
আপডেট : ০১ অক্টোবর ২০২৩ ২০:৪৭ পিএম
নোয়াখালী জেলা কারাগার। প্রবা ফটো
নোয়াখালী জেলা কারাগারে এক কয়েদির দুই চোখে কলম দিয়ে আঘাত করে উপড়ে ফেলার চেষ্টা করেছেন আরেক কয়েদি। আহত কয়েদি নূর হোসেন বাদলকে উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রবিবার (১ অক্টোবর) ভোর ৬টার দিকে জেলা কারাগারের নিচতলায় এ ঘটনা ঘটে।
জেলা কারাগার সূত্র জানায়, ২০২১ সালে বেগমগঞ্জের একলাশপুরের নারী নির্যাতনের একটি মামলায় জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নূর হোসেন বাদলকে ১০ বছরের সাজা দেওয়া হয়। পরে ওই মামলায় তিনি জামিন পেলেও অপর আরেকটি মামলায় তার বিচারকার্য চলমান থাকায় তাকে কারাগারে রাখা হয়। তার বাড়ি বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে। বাবার নাম শাহাব উদ্দিন।
আর অভিযুক্ত কয়েদি মাইন উদ্দিন একই ইউনিয়নের অনন্তপুর গ্রামের হুমায়ূন কবিরের ছেলে। তিনি মাদক মামলায় বর্তমানে কারাগারে আছেন।
কারাগার কর্তৃপক্ষ জানায়, দুই আসামির পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, মাইন উদ্দিনকে আটক ও পুলিশে সোপর্দ করার পেছনে নূর হোসেন বাদলের স্বজনরা যুক্ত ছিলেন। এর আগেও কোনো একসময় বাদলের চোখ তুলে নেবে বলে মাইন হুমকি দিয়েছিল বলে জানা গেছে।
জেলা কারাগারের ডেপুটি জেলার সৈয়দ মো. জাবেদ হোসেন বলেন, ’মাইন উদ্দিন ও নূর হোসেন বাদল দুজন ভিন্ন ভিন্ন কক্ষে থাকত। ভোরে কয়েদিদের কক্ষের তালা খুলে দেওয়া হয়। পূর্বশত্রুতার জের ধরে সকালে কক্ষ থেকে বের হওয়ার পর মাইন উদ্দিন হাজিরা খাতায় থাকা কলম দিয়ে নূর হোসেন বাদলের দুই চোখে আঘাত করেন। তাৎক্ষণিক আমরা কারা হাসপাতাল থেকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করাই। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।’
ভুক্তভোগীর মামা নূর মোহাম্মদ বাবু বলেন, ’আমার ভাগনেকে মাইন উদ্দিন পূর্বশত্রুতার জের ধরে হামলা চালিয়েছে। মাইন উদ্দিনের ভাই কিরণ আমাদের বর্তমানেও হুমকি দিচ্ছেন। আমরা যদি কোনো কিছু করি তাহলে বাইরে যারা আছে তাদের অবস্থা নাকি খারাপ হয়ে যাবে। মাইন উদ্দিন বেগমগঞ্জের চিহ্নিত মাদক কারবারি। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম বলেন, ’দুই চোখে প্রচণ্ড আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমাদের চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক চিকিৎসা দিয়ে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে রেফার করেছেন।’
নোয়াখালী জেলা কারাগারের জেল সুপার মো. গোলাম দস্তগীর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ’অভ্যন্তরীণ কোনো অবহেলা হয়েছে কি না, তার জন্য আমরা তদন্ত করব। পাশাপাশি এ ঘটনায় নতুন করে সুধারাম মডেল থানায় মামলা হবে।’