ভোর থেকে রাজবাড়ী-ঢাকা রুটে বাস চলাচল বন্ধ

আবারও রাজবাড়ী-ঢাকা রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ফরিদপুরের করিম গ্রুপের মালিকানাধীন গোল্ডেন লাইন পরিবহনের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে রাজবাড়ীর পরিবহন মালিকরা এ ঘোষণা দিয়েছেন। এ কারণে সোমবার (২ অক্টোবর) ভোর থেকে রাজবাড়ী-ঢাকা রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।

বাস মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজবাড়ীর কোনো বাস পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় যাওয়া-আসা করে না। কিন্তু গোল্ডেন লাইন পরিবহনের পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় আসা-যাওয়া চলমান রয়েছে। গোল্ডেন লাইন রাজবাড়ীর পরিবহন মালিক পক্ষের সঙ্গে আলেচনা করে নিজেদের মতো ট্রিপ পরিচালনা করছিল। এতে প্রথমে তাদের বাধা দেওয়ায় তারা ঢাকার গাবতলীতে রাজবাড়ীর কাউন্টারগুলোয় ভাঙচুর করে। পরে ঢাকার বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টির সমাধান করা হয়। এরপর গোল্ডেন লাইন রাজবাড়ীতে দুটি ট্রিপ চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু তারা এ সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে একাধিক ট্রিপ চালাচ্ছিল। তাই গত শুক্রবার রাজবাড়ী পরিবহন মালিক গ্রুপের লোকজন বাস মালিক সমিতির সামনে থেকে গোল্ডেন লাইনের একটি বাস থেকে যাত্রী নামিয়ে ঢাকায় ফেরত পাঠান। এতেই দ্বন্দ্ব শুরু হয়।

অবশ্য গোল্ডেন লাইন পরিবহনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব নতুন নয়। এর আগেও রাজবাড়ী-ঢাকা রুটে গোল্ডেন লাইন পরিবহনের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে বাস চলাচল বন্ধ ছিল। সে সময় রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে আলোচনা এবং ঢাকার বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে বসে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়। গোল্ডেন লাইন তাদের ইচ্ছামতো ও জবরদস্তি করে ট্রিপ চালানোর কারণে নিজেদের ক্ষতির কথা জানান রাজবাড়ী পরিবহন মালিক গ্রুপের লোকজন।

এদিকে ঢাকা-রাজবাড়ী রুটে হঠাৎ পরিবহন বন্ধ থাকায় যাত্রীরা কাউন্টারে এসে ফেরত যাচ্ছেন। এতে অনেক যাত্রী ভোগান্তিতে পড়ছেন। তারা ঝুঁকি নিয়ে মাহেন্দ্র, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও লোকাল বাসে ঘাট পর্যন্ত ভেঙে ভেঙে যাচ্ছেন।

ঢাকার উদ্দেশে বাস কাউন্টারে আসা যাত্রী আলামিন হোসেন বলেন, ‘তিন দিন সরকারি ছুটিতে বাড়ি এসেছিলাম। কিন্তু সরকারি ছুটি শেষে আজ অফিস করতে ঢাকায় যাওয়ার জন্য এসে দেখি বাস বন্ধ। আমি মারাত্মক ঝামেলায় পড়ে গেলাম।’

আরেক যাত্রী সোহাগ ব্যাপারী বলেন, ‘কিছুদিন আগেও আমি এই একই সমস্যায় পড়েছিলাম। আজও বাসস্ট্যান্ড এসে বাস বন্ধের কারণে ঢাকায় যাওয়া নিয়ে সমস্যায় পড়লাম। আসলে এ সমস্যা মালিকপক্ষের; মাঝখানে বিপদে পড়ছি আমরা। এখন স্ত্রী, সন্তান নিয়ে ভোগান্তিতে ভেঙে ভেঙে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই।’

এ বিষয়ে জানতে রাজবাড়ী বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক লিটনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও রিসিভ করেননি।

রাজবাড়ী বাস মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুরাদ হাসান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘কিছুদিন আগে রাজবাড়ী বাস মালিক সমিতির সঙ্গে আলোচনা না করেই গোল্ডেন লাইন ঢাকা-রাজবাড়ী রুটে বাস চালু করে। তখন আমরা বাধা দিলে দুই দিন বাস বন্ধ থাকার পর আলোচনার মাধ্যমে তাদের দুটি বাস চলাচল করার অনুমতি দেয় রাজবাড়ী বাস মালিক সমিতি ও ঢাকার বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। কিন্তু এখন তারা ইচ্ছামতো বাস চালু করছে। দুটির জায়গায় ছয়টি বাসও চালিয়েছে। এজন্য আমরা তাদের দুটি বাস রেখে বাকি বাস চলাচলে বাধা দিই। এ কারণে তারা গাবতলীতে আমাদের সব বাসের কাউন্টার বন্ধ রেখে। গোল্ডেন লাইন গায়ের জোরে এসব করছে।’