কক্সবাজার অফিস
প্রকাশ : ০৯ অক্টোবর ২০২৩ ১৬:৪৭ পিএম
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জাফরুল ইসলাম বাবুলকে অস্ত্র ও ইয়াবাসহ গ্রেপ্তারের ঘটনা সাজানো ও ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করে এই ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে তার পরিবারের সদস্যরা।
রবিবার (৮ অক্টোবর) কক্সবাজার প্রেসক্লাবে সাংবাদ সম্মেলন করে তারা এ দাবি জানায়।
গত ৫ অক্টোবর র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের একটি দল জাফরুল ইসলাম বাবুলকে গ্রেপ্তারের কথা জানায়।
ওইদিন গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়, পার্শ্ববর্তী দেশ হতে চোরাকারবারির অন্যতম হোতা জাফরুল ইসলাম বাবুল। ৫৫ হাজার ইয়াবা, বিদেশি পিস্তল, আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাবুলের নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একটি চক্র রয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়। চক্রটি মাদক ব্যবসার পাশাপাশি এলাকায় চাঁদাবাজি, স্বর্ণ চোরাচালান, অবৈধ অস্ত্র, জোরপূর্বকভাবে অবৈধ বালু উত্তোলন, অবৈধভাবে চোরাই পথে গবাদি পশু চোরাচালান, অবৈধভাবে পাহাড় কেটে মাটির ব্যবসাসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাবুলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ ২১টি মামলা রয়েছে। সে ২০০৫ সাল থেকে মাদক চোরাচালানে জড়িত। তার নেতৃত্বে প্রতিমাসে ৫০ লাখের উপরে ইয়াবা আনা হয়। সে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী।
র্যাবের দেওয়া এ তথ্য মিথ্যা ও সাজানো বলে দাবি করে বাবুলের পরিবার বলছে, বাবুলের বিরুদ্ধে জায়গা-জমি ও রাজনৈতিক ৩-৪টি মামলা থাকলেও মাদকের কোনো মামলা নেই।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বাবুলের ভাই একরামুল কবির ও বোন শাহীনা আক্তার বলেন, বাবুল উচ্চশিক্ষিত মানুষ। তার স্ত্রী চিকিৎসক। এলাকার সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান। গত ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে গিয়ে স্থানীয় সুলতান আহমদ ও তার সহযোগীরা বাবুলকে ফাঁসাতে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। অথচ সুলতানই তালিকাভুক্ত মাদক কারবারি। তার বিরুদ্ধে মাদকসহ ১৯টি মামলা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সুলতানসহ স্থানীয় চিহ্নিত মাদক কারবারিরা ষড়যন্ত্র করে র্যাবকে ভুল তথ্য দিয়ে গ্রেপ্তার নাটক সাজানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে গত ৪ অক্টোবর উখিয়ার জামতলী এলাকা থেকে তাকে তুলে নেওয়া হয়। পরদিন র্যার বাবুলকে টেকনাফের কাটাখালী থেকে ইয়াবা, অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেপ্তার দেখায়।
সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন বাবুলের মেয়ে কক্সবাজার মডেল হাই স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী অনিমা ইসলাম অর্পা, চাচা হাফেজ জাকের হোসেন, বোন মনোয়ারা বেগম ও ফাতেমা খাতুনসহ পরিবারের সদস্যরা।
তবে বাবুলকে র্যাব দিয়ে গ্রেপ্তারের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন সুলতান আহমদ। তিনি বলেন, র্যাব একটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এই বাহিনীর সাথে আমার যোগাযোগ নেই। তাছাড়া আমার কথায় র্যাব একজন মানুষকে ধরে নিয়ে যাবে এটা সত্য হতে পারে না।
তিনি বলেন, বাবুল একজন চিহ্নিত মাদককারবারি ও সন্ত্রাসী। নানাভাবে আমাকে ও আমার পরিবারের ওপর হামলা, মারধরের ঘটনার মামলার আসামি। তাই আমাকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জোবায়ের ছৈয়দ বলেন, বাবুলের বিরুদ্ধে হত্যা, দাঙ্গা-হাঙ্গামাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৮টি মামলা রয়েছে। তবে আগে কোনো মাদকের মামলা ছিল না।
বিষয়টি নিয়ে র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পক্ষ থেকে জানানো হয়, র্যাব কারও কথায় অভিযান পরিচালনা করে না। নিজস্ব তথ্য নিয়েই অভিযান পরিচালনা করে। বাবুলকে গ্রেপ্তারের পর পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিটিই তাদের বক্তব্য।