ধামরাই (ঢাকা) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৫ অক্টোবর ২০২৩ ১৩:২৬ পিএম
ঢাকার ধামরাই উপজেলার বংশী নদীর ওপর সেতু নির্মাণে দীর্ঘসূত্রতায় ভোগান্তিতে পড়েছে স্থানীয়রা। প্রবা ফটো
কার্যাদেশ পাওয়ার এক বছরের মধ্যে সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ করার শর্ত ছিল। কিন্তু সাড়ে চার বছরেও তা করা হয়নি। এ অবস্থা ঢাকার ধামরাই উপজেলার বংশী নদীর ওপর নির্মিত সেতুটির। ধামরাই-কালিয়াকৈর সড়কের সোমভাগ-ফুকুটিয়া এলাকায় সেতুটির অবস্থান। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে সেতুটির কাজ ঝুলে আছে। এ কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।
ধামরাই স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সোমভাগ ইউনিয়নের সোমভাগ-ফুকুটিয়া এলাকায় ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মাণে প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয় ৫ কোটি ৭০ লাখ ৬ হাজার ৭৪৪ টাকা। মেসার্স সুরমা অ্যান্ড খোশেদা এন্টারপ্রাইজ (জেভি) নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়। কার্যাদেশ পাওয়ার পর ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি তারা কাজ শুরু করে। এক বছর মেয়াদি কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এ পর্যন্ত সেতুটির ৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এখন কাজ বন্ধ রয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, সেতুটির চারটি পিলার ও দুই পাড়ের নিরাপত্তা দেয়াল নির্মাণ করা হয়েছে। এখন নির্মাণকাজ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, ২০২০ সালের পর থেকেই সেতুটির কাজ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। ঠিকাদারের গাফিলতিতে এমনটা হয়েছে বলেই অভিযোগ তাদের।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ধামরাই-কালিয়াকৈর সড়কটি দিয়ে সোমভাগ, ফুকুটিয়া, আশুলিয়া, দেপাশাই, নওগাঁও, কান্দিকুল, কুড়ালভাংগা চাপিলসহ আশপাশের গ্রামের হাজারো মানুষের যাতায়াত। ফলে স্বাধীনতার পর থেকে বংশীর নদীর ওপর সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন এলাকাবাসী। দাবি পূরণ হওয়ার দ্বারপ্রান্তে গেলেও এখন তা ঝুলে আছে। আশপাশের গ্রামসহ উপজেলার হাজারো বাসিন্দা খেয়া নৌকায় নদী পার হতে হয়। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। কারণ একমাত্র নৌকায় নদী পার হতে হয়। দুপারে ভিড় জমে শত শত মানুষের। তাদের সময়ের অপচয় হয়। পাশাপাশি দুর্ঘটনার আশঙ্কা তো আছেই। শুষ্ক মৌসুমে পানি কমে গেলে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে হয়।
আইনজীবী সঞ্জিবন সাহা বলেন, ‘ভেবেছিলাম সেতুর কাজ যখন শুরু হয়েছে এবার দুর্ভোগের লাগব হবে। কিন্তু তা আর হলো না। নদীর দুই পাশে গার্ডার ও পিলার উঠিয়ে ঠিকাদার চলে গেল। এখন দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। কারণ আগে নৌকা সোজা যেত, এখন অনেক জায়গা ঘুরে যেতে হয়। সেতুটির কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানাচ্ছি।’
সোমভাগ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আওলাদ হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি উপজেলা মাসিক সভায় সংসদ সদস্য বেনজির আহমদসহ সবার মাঝে উপস্থাপন করেছি। রেজল্যুশনেও তা লিপিবদ্ধ হয়েছে। এরপরও সেতুর কাজের কোনো অগ্রগতি নেই।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক সজিব হোসেন বলেন, ‘সেতুটির নকশার পরিবর্তন হওয়ায় কাজ শেষ করতে পারিনি। নতুন নকশার অনুমোদন হলে কাজ শুরু করব।’
কিন্তু উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী তরুণ কুমার বললেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ‘ঠিকাদার চৌহাট এলাকায় একটি সেতুর কাজ করছে। কাজটি শেষ হলেই সোমভাগ-ফুকুটিয়া সেতুর কাজটি করবে। তবে দ্রুতই নির্মাণকাজ শুরু করা হবে।’