পাবনা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ নভেম্বর ২০২৩ ১৯:৫৪ পিএম
পাবিপ্রবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কে এম সালাহ উদ্দিন। প্রবা ফটো
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কে এম সালাহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে নিয়ম ভেঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেস্ট হাউজে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘ দিন ধরে বিষয়টি চলতে থাকলেও কেউ মুখ খুলছেন না। প্রশাসনও এ বিষয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে অধ্যাপক ড. কে এম সালাহ উদ্দিনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর থেকে পাবনা শহরে অবস্থিত মানামা অরণ্য টাওয়ারের ১২ তলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গেস্ট হাউজেই বসবাস করছেন তিনি।
গেস্ট হাউজটিতে অতিথিদের জন্য চারটি এসি রুম আছে। এর জন্য একজন অতিথিকে দিনে ২৫০ টাকা করে ভাড়া দিতে হয়। নিয়ম অনুযায়ী কোনো অতিথি গেস্ট রুমে থাকতে চাইলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন সর্বোচ্চ সাত দিন ছয় রাত থাকার অনুমতি দিতে পারেন। কিন্তু অধ্যাপক ড. কে এম সালাহ উদ্দিন গত এক বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেস্ট হাউজের একটি রুম ব্যবহার করে আসছেন।
এই ঘটনায় শিক্ষকদের অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। উপাচার্যকে বিষয়টি একাধিকবার অবহিত করলেও তিনি কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি বলে জানা গিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাবিপ্রবির একটি বিভাগের চেয়ারম্যান বলেন, প্রশ্ন মডারেশন, মৌখিক পরীক্ষাসহ বিভিন্ন কাজে বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হতে অনেক শিক্ষক আসেন। উনাদের থাকার ব্যবস্থা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গেস্ট হাউজে। এমনিতেই রুম সংকট, তার ওপর কোষাধ্যক্ষ একটা রুম দখল করে রেখেছেন। প্রায় সময়ই দেখা যায় অতিথিদের জন্য গেস্ট হাউজে জায়গা পাওয়া যায় না। গেস্ট হাউজ প্রশাসক এবং উপাচার্যকে বিষয়টি অবহিত করলেও এ সমস্যার সমাধানে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, কোষাধ্যক্ষ গেস্ট হাউজের একটা রুম দখল করে আছেন। উনার চাকরির জন্য বাড়ি ভাড়া দিচ্ছে সরকার কিন্তু তিনি বাসা ভাড়া নিচ্ছেন না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্রের খবর, কোষাধ্যক্ষকে গেস্ট হাউজে থাকার জন্য উপাচার্যের সম্মতিতে এপ্রিল মাসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন লিখিত অনুমতি দেয়। মাসিক ভাড়া নির্ধারণ করা হয় সাত হাজার পাঁচশ টাকা।
এ বিষয়ে বক্তব্য কথা বলতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কে এম সালাহ উদ্দিন বলেন, আমি এভাবে (মুঠোফোনে) কথা বলবো না। এরপর তিনি ফোন কেটে দেন। পরে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তার মন্তব্য পাওয়ায় যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গেস্ট হাউজ প্রশাসক ড. আবদুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কিছু রাজি হননি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও বক্তব্য দিতে অস্বীকার করে অফিস চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণসংযোগ বিভাগে যোগাযোগ করতে বলেন।
উল্লেখ্য, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কে এম সালাহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে গত এক বছরে ভর্তি পরীক্ষার টাকা ভাগ, লিফট কেনার জন্য তুরস্ক সফর, বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারসহ নানা অভিযোগ এসেছে।