ওবায়দুল আকরব রুবেল, ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম)
প্রকাশ : ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ১৪:৩১ পিএম
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:০৯ পিএম
ফটিকছড়ির বাগানবাজার ইউনিয়নে নির্বিচারে কাটা হচ্ছে সংরক্ষিত বনের টিলা ও পাহাড়। প্রবা ফটো
চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে সড়ক উন্নয়নের অন্তরালে চলছে সংরক্ষিত বনের টিলা ও পাহাড় কেটে মাটি ব্যবসা। পরিবেশ ও ভূমি আইন উপেক্ষা করে প্রকাশ্যে এক্সকাভেটর দিয়ে রাত-দিন সমানে কাটা হচ্ছে পাহাড়-টিলা। গত বুধবার চট্টগ্রাম বন ও পরিবেশ আদালতে এ ব্যাপারে চারটি মামলা করেন চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগ। তবে মামলার আসামিদের নাম প্রকাশে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বন কর্মকর্তারা। এদিকে প্রশাসনের একের পর এক ভ্রাম্যমাণ আদালতে অভিযান ও মামলার পরও থামছে না সংরক্ষিত বনাঞ্চলের নির্বিচারে টিলা-পাহাড় নিধন।
বনবিট অফিস সূত্র জানায়, ফটিকছড়ির বাগান বাজার ইউনিয়নের পানুয়া, উদয় পাথর, হলুদিয়া, রসুলপুর, কচুয়া খোন্দা, আঁধারমানিক, নয় দোলন, চৌদ্দ দোলন, রহমতপুর আজিজের দোকান এলাকায় সড়ক উন্নয়নের অজুহাতে প্রকাশ্যে এক্সকাভেটর দিয়ে রাত-দিন কাটা হয়েছে অসংখ্য পাহাড় ও টিলা। এ ছাড়া মাটি কেটে নিয়ে যাওয়ার পর সমতল হওয়া টিলা বা পাহাড়ি বনভূমি দখলে নিচ্ছে স্থানীয় ভূমিদস্যু চক্র। আবার কোথাও কোথাও টিলা বা পাহাড় কাটা এসব মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে কৃষি ও ফসলি জমি। সংরক্ষিত বনের টিলা ও পাহাড় কেটে এসব মাটি বিক্রি করে আসছে চক্রটি। প্রকাশ্যে এক্সকাভেটর দিয়ে পাহাড় কাটলেও চক্রটি প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ প্রতিবাদ করার সাহসও পাচ্ছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাগানবাজার ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকা চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের সংরক্ষিত বনের জায়গা। বিগত সময়ে এখানকার বনাঞ্চল কেটে উজাড় করেছে স্থানীয় চক্রটি। এখন শুরু করেছে টিলা আর পাহাড় নিধন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া সিন্ডিকেটটি বন বিভাগের টিলা বা পাহাড় নিধনের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। তারা নিচ্ছে না পরিবেশ অধিপ্তরের কোনো অনুমতি। এতে একদিকে যেমন জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে, অন্যদিকে পাহাড়ের একটি অংশ খাড়াভাবে কেটে নেওয়ায় বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ের বাকি অংশ ধসে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
সম্প্রতি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পাহাড় ও টিলা কাটার সত্যতা পেয়েছেন বলে জানান চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের করেরহাট রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক হারুন উর রশিদ। তিনি বলেন, ‘কোনো ধরনের পূর্বানুমতি ছাড়াই একটি সিন্ডিকেট এসব পাহাড় ও টিলা কেটে সাবাড় করছে। পুরো এলাকা পরিদর্শন করে পাহাড় কাটার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ১২-১৪ জনের বিরুদ্ধে চারটি পিওআর মামলা করা হয়েছে। গত বুধবার চট্টগ্রাম বন আদালতে কয়লা বনবিটের কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামল করেন। এ ছাড়া পাহাড় কাটা বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, বিভাগীয় বন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত পত্র পাঠানো হয়েছে।’ তবে মামলার আসামিদের নাম প্রকাশে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তিনি।