× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

পোশাকশ্রমিক আন্দোলন

গাজীপুরে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর মামলার আসামি ৪ হাজার, বন্ধ ১১ কারখানা

গাজীপুর প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১০ নভেম্বর ২০২৩ ১৯:৫১ পিএম

আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৩ ২১:০১ পিএম

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) পোশাকশ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষের পর পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় ১২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৪ হাজার জনকে আসামি করে একটি মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে গাজীপুর মেট্রোপলিটনের কোনাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু সাঈদ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এ ঘটনায় জড়িত থাকা সন্দেহে ইতোমধ্যে ১১ জনকে গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার বাদী উপপরিদর্শক (এসআই) আবু সাঈদ জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে কোনাবাড়ী এলাকায় বেতন বৃদ্ধির দাবিতে তুষুকা কারখানায় শ্রমিকরা ব্যাপক ভাঙচুর করে। এ সময় কারখানার সামনে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে থাকা গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনারের (ডিসি) গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত সবাই বিভিন্ন কারখানার শ্রমিক। তিনি আরও জানান, শুক্রবার বিকালে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে থাকা সিসি টিভি ফুটেজ ও ভিডিও সংগ্রহ করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

১১ কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা

অব্যাহত শ্রমিক অসন্তোষ, বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকার ৯টি তৈরি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া আরও ২২টি কারখানা বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিল্প পুলিশ। 

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা গার্মেন্টসগুলো হলো তুষুকা প্রসেসিং লিমিটেড, এম এম নিটওয়্যার, ইসলাম গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, এম বি ফ্যাশন (অনন্ত গার্মেন্টস), রিপন নিটওয়্যার, এমা সিনটেক্স, মন্ডল ফেব্রিক্স, কাইজার নিটওয়্যার, আই টি এল এস ফ্যাশন, কটন ক্লাব ও মন্ডল ফেব্রিক্স। 

এসব কারখানার কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা, কারখানার সম্পত্তি এবং জানমাল রক্ষার স্বার্থে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ১৩(১) ধারা মোতাবেক পরবর্তী কাজের নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারখানার সব কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

তুষুকা কারখানার মহাব্যবস্থাপক মাসুম হোসেন জানান, অনুকূল পরিবেশ তৈরি হলে কারখানা খোলার তারিখ শ্রমিকদের জানিয়ে দেওয়া হবে। এ ছাড়াও কোনাবাড়ী আমবাগ রোডের এমএম নিটওয়্যার লিমিটেড ও কোনাবাড়ী জরুন এলাকার ইসলাম গ্রুপের কারখানার এক নারীশ্রমিক আহত হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় ওই গ্রুপের তিনটি কারখানার সব কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। 

গাজীপুর শিল্পপুলিশ জোন-২ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান আহমেদ জানান, গাজীপুরের কোনাবাড়ী ও আশপাশের এলাকার ২২টি কারখানা বন্ধের খবর তাদের কাছে রয়েছে। 

পরিস্থিতি এখনও থমথমে

লাগাতার শ্রমিক বিক্ষোভ, ভাঙচুর এবং পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী, কাশিমপুর, জরুন, আমবাগ, ভোগরা এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আন্দোলনের ঘটনায় একাধিক মামলা হওয়ায় গ্রেপ্তার আতঙ্কে রয়েছে শ্রমিকরা। কারখানা চালু হওয়ার পর তাদের কাজ করা নিয়েও সংশয় জেগেছে। 

বিশেষ করে মধ্যবয়সি নারী ও পুরুষ শ্রমিকরা পড়েছে বিপাকে। অনেকেই আন্দোলনে জড়িত না থেকেও গ্রেপ্তার হওয়ার ভয়ে আছে। অনেক শ্রমিক গ্রেপ্তার আতঙ্কে গ্রামে চলে গেছে। 

একাধিক শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আন্দোলনে জড়িত অধিকাংশ শ্রমিক বয়সে তরুণ, অনেকেই অবিবাহিত। ফলে তাদের চাকরি নিয়ে তেমন চিন্তা নেই। কিন্তু যারা পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী তারা দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে।

এম এম কারখানার শ্রমিক তাওহীদ বলেন, আন্দোলন কখন শুরু হয়, কীভাবে শুরু হয় বুঝতে পারি না। শুধু ঝামেলা হলে একদিকে দৌড়ে পালাই। এখন শুনলাম হাজার হাজার মানুষের নামে মামলা হয়েছে। যাকে ধরবে সেই নাকি আসামি। আমরা তো অপরাধ করিনি, তবুও ভয়ে আছি।

শ্রমিক আন্দোলনের প্রভাব পড়েছে স্থানীয়দের জীবনেও। কোনাবাড়ী আমবাগ এলাকার সবজি ব্যবসায়ী আলম হোসেন বলেন, আমরা ভ্যানে সবজি বিক্রি করি রাস্তার পাশে। গন্ডগোলের কারণে আতঙ্কে থাকি কখন দৌড়ে পালাতে হয়। কারখানা ঠিক মতো না চললে আমাদের ব্যবসারও ক্ষতি হয়। 

নতুন নিয়োগ বন্ধসহ বিজিএমইএর চার নির্দেশনা

চলমান শ্রমিক আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে পোশাক কারখানায় নতুন নিয়োগ বন্ধসহ সদস্যদের চার নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।

বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) বিজিএমইএর মহাসচিব ফয়জুর রহমান স্বাক্ষরিত নির্দেশনার অনুলিপি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।

নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে সব পোশাক শিল্প কারখানায় সব ধরনের নতুন নিয়োগ বন্ধ থাকবে। প্রতিটি কারখানার গেটে ‘নিয়োগ বন্ধ’ কথাটি লিখে ব্যানার টাঙিয়ে দিতে হবে। এ ছাড়াও যেসব কারখানায় অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর বা মারামারির ঘটনা সংঘটিত হয়েছে, সেসব কারখানা কর্তৃপক্ষকে নিকটস্থ থানায় প্রমাণস্বরূপ ছবি ও ভিডিও ফুটেজসহ মামলা করতে হবে। এক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নাম জানা না থাকলে অজ্ঞাতনামা উল্লেখ করে মামলা করা যাবে। পাশাপাশি যেসব কারখানার শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশ করে কাজ করা থেকে বিরত থাকবে বা কারখানা ছেড়ে বেরিয়ে যাবে, সেসব কারখানার মালিক বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ধারা ১৩(১) এর বিধান মোতাবেক কারখানা বন্ধ করে দিতে বলা হয়েছে। সর্বশেষ নির্দেশনায় যেসব কারখানায় অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর বা মারামারির ঘটনা ঘটেছে  সেসব ঘটনার ছবি ও ভিডিও ফুটেজ (যদি থাকে) বিজিএমইএর কাছে পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা