শ্রমিক বিক্ষোভ
আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:৩০ পিএম
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:৫৬ পিএম
ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের চলমান আন্দোলনে আশুলিয়ায় কারখানা ভাঙচুরের ঘটনায় আশুলিয়া থানায় পৃথক ১২টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ১৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। আর এসব মামলায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রবিবার (১২ নভেম্বর) ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মোহাম্মদ শাহিদুল ইসলাম এসব তথ্য জানিয়েছেন।
প্রতিদিনের বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত কারখানাগুলোর কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত ১২টি মামলা করেছে। এসব মামলায় ১৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা তিন থেকে সাড়ে ৩ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শ্রমিকদের আন্দোলনকে ঘিরে যে নাশকতা হয়, তাদের বেশির ভাগই নিরীহ ও শান্তিপ্রিয় শ্রমিক। কিন্তু তাদের ভেতরে ও বাইরে থেকে কিছু লোক অসৎ উদ্দেশ্য সফল করার চেষ্টায় থাকে। আমরা তা প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছি। গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে কাজ করছি।’
আশুলিয়ায় আজও বন্ধ রয়েছে ৬০ কারখানা
ন্যূনতম মজুরি প্রত্যাখ্যান করে পোশাক শ্রমিকদের চলমান আন্দোলনের জেরে দুই দিন আগে শতাধিক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। আজ কিছু কারখানা খুলেছে কর্তৃপক্ষ। তবে শ্রমিক অসন্তোষের মধ্যে আশুলিয়ায় আজও ৬০টি কারখানা বন্ধ রয়েছে।
জানা গেছে, আশুলিয়ায় আজ খুলে দেওয়া কারখানাগুলোর মধ্যে আট থেকে দশটির শ্রমিকরা সকালে হাজিরা দেয়। হাজিরা দিয়েও তারা কাজে যোগ না দিয়ে কারখানায় অবস্থান করে। তাদের মধ্যে অনেকে আবার বের হয়ে যায়।
আশুলিয়ার জামগড়া, নরসিংপুর ও নিশ্চিন্তপুর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এসব এলাকার বেশ কিছু কারখানার ফটকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধের ঘোষণার নোটিস টানানো রয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে সড়কে সাঁজোয়া যান নিয়ে টহল দিচ্ছেন বিজিবির সদস্যরা। এ ছাড়া আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১, ঢাকা জেলা পুলিশ ও র্যাব সদস্যদের বিভিন্ন এলাকায় টহল দিতে দেখা গেছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে জলকামান।
দুপুর ১২টার দিকে জামগড়া ছয়তলা এলাকার এএম ডিজাইন লিমিটেডের সামনে বেশ কয়েকজন পোশাক শ্রমিককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। মুঠোফোনে কারখানার ফটকের সামনে লাগানো বন্ধের নোটিসের ছবি তুলে সহকর্মীদের পাঠাচ্ছিলেন তারা।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সারোয়ার আলম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, আশুলিয়ায় রবিবার ৬০টির মতো কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে। গতকাল শতাধিক কারখানা বন্ধ ছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় বন্ধ কারখানাগুলো খুলে দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও বিজিবির সদস্যরা তৎপর রয়েছে।
সর্বনিম্ন মজুরি বাড়িয়ে ২৩ হাজার করার দাবিতে গত ২৯ অক্টোবর থেকে পোশাক শ্রমিকেরা আন্দোলন করে আসছে। আন্দোলনের মধ্যে ৭ নভেম্বর ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা ঘোষণা করে সরকার। তবে সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে তারা।