× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

দেয়ালধস

ফকির মোহাম্মদের আর্তনাদ, সবাইকে একসঙ্গে কবরে দিয়ে এলাম

কক্সবাজার অফিস

প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ২২:৫৩ পিএম

আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ২২:৫৫ পিএম

ফকির মোহাম্মদ। প্রবা ফটো

ফকির মোহাম্মদ। প্রবা ফটো

ও আল্লাহ মুই হারে চাইয়ারে থাকিম। তাড়ারে রাখিয়া রে মরে লই গিলই খুব বালা অইত- আর্তস্বরে এসব বলে বিলাপ করছিলেন মাটির দেয়াল ধসে স্ত্রী ও সন্তানহারা মধ্যবয়সি ফকির মোহাম্মদ। বিলাপ করতে করতে মাঝেমধ্যে অজ্ঞান হয়ে পড়ছিলেন তিনি।

গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টায় কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভীবাজারের মরিচ্যাঘোনার পানিরছড়া নামক পাহাড়ের পাদদেশে ভারী বর্ষণে বসতঘরের মাটির দেয়াল ধসে একই পরিবারের চারজন নিহত হয়েছে।

নিহতরা হলো- ফকির মোহাম্মদের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৫০), তার ছেলে শাহিদুল মোস্তফা (২০), মেয়ে নিলুফা ইয়াসমিন (১৫) ও সাদিয়া বেগম (১১)।

শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) বিকালে মৌলভীবাজারের পানিরছড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, লাশগুলো দেখতে এসেছে আত্মীয়-স্বজনসহ গ্রামের মানুষ। একই পরিবারে চারজনের এমন মৃত্যুতে পুরো গ্রামের মানুষ শোকাহত। 

স্বজন ও এলাকাবাসী জানায়, ফকির মোহাম্মদ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অনেক বছর ধরেই পাহাড়ের পাদদেশে ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করছেন। মাটির নতুন ঘর তার জন্য কাল হয়েছে। পরিবারের সবাইকে হারিয়ে মধ্যবয়সি মানুষটি এখন নির্বাক।

ফকির মোহাম্মদ বলেন, নোয়া গরত স্বপ্ন দেখি, বেগ্গুনরে হবর দিয়ম। আল্লায় কেমন পরীক্ষা নিল।

স্থানীয়রা বলেন, গত এক মাস ধরে পাহাড়ের পাদদেশে ভিলেজারি জমিতে নতুন করে মাটির ঘর তোলা হচ্ছিল। এই জমিতে দীর্ঘ ২০-২৫ বছর ধরে বসতি করে আসছিল ফকির মোহাম্মদের পরিবার। নতুন নির্মাণাধীন ঘরের পাশে পলিথিন দিয়ে একটি ঝুপড়িঘরে হতো রাত্রি-যাপন। রাতে পরিবারের সবাই মিলে খাওয়া-দাওয়ার পর ঘুমাতে যায়। এর মধ্যে রাতে ভারী বৃষ্টিপাতে নির্মাণাধীন মাটির দেয়াল ধসে পড়ে ঘুমন্ত পরিবারের সদস্যদের ওপর। 

ফকির মোহাম্মদ বলেন, কোনোরকমে বাইর হতে পারলেও আর কেউ বাইর হতে পারে নাই। আশেপাশের লোকজনকে ডেকে আনার পর মাটির নিচ থেকে একেকজনের লাশ তুলে আনা হয়। 

শুক্রবার বিকালে মৌলভীবাজার মাঠে নিহতদের জানাজা শেষে বড় কবরস্থানে দাফন করা হয়।

ফকির মোহাম্মদ কাঁদছেন আর বলছেন, পরিবারের সবাইকে একসঙ্গে কবরে দিয়ে এলাম। এখন আমি কার মুখ দেখে বেঁচে থাকব।

হ্নীলার ইউপির চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হয়। রাত আটটার পর থেকে কয়েক দফা ভারী ও মাঝারি বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এতে মরিচ্যাঘোনার পানির ছড়া এলাকায় বসতঘরের মাটির দেয়ালচাপা পড়ে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী ফকির মোহাম্মদের স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়েসহ চারজন মারা যায়। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন মাটিচাপা পড়া চারজনের মৃতদেহ উদ্ধার করে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, নিহতদের দাফনের জন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা ফকির মোহাম্মদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা