× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বড় মনিরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করা কলেজছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার ১

টাঙ্গাইল প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৯ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:৫২ পিএম

আপডেট : ১৯ নভেম্বর ২০২৩ ১৮:২৫ পিএম

গ্রেপ্তার সৌরভ পালকে রবিবার দুপুরে আদালতে নেওয়া হয়। প্রবা ফটো

গ্রেপ্তার সৌরভ পালকে রবিবার দুপুরে আদালতে নেওয়া হয়। প্রবা ফটো

টাঙ্গাইল-২ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ওরফে ছোট মনিরের বড় ভাই টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনিরের বিরুদ্ধে করা ধর্ষণের অভিযোগ তোলা কলেজছাত্রী মির্জা আফরোজ এশার রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এশার বোনের করা মামলায় সৌরভ পাল নামের এই যুবককে শনিবার রাতে গ্রেপ্তার করে টাঙ্গাইল মডেল থানা-পুলিশ। রবিবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে সৌরভকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তিনি টাঙ্গাইল পৌর শহরের থানাপাড়া এলাকার বাসিন্দা।

এর আগে শনিবার রাতে আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগ এনে এশা মির্জার বড় বোন মির্জা লুনা মামলা করেছেন। মামলায় এশার ভাই মির্জা জিয়াউর হাসান জনি ও সৌরভ পালকে আসামি করা হয়। 

শনিবার বিকালে টাঙ্গাইলের সদর উপজেলার করটিয়া ইউনিয়নের করের বেতকার (বোয়ালী) এলাকার নিজ বাসা থেকে এশার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এশা বোয়ালী এলাকার মৃত লতিফ মির্জার মেয়ে।

পুলিশের ধারণা, এশা আত্মহত্যা করেছেন। এশার পরিবারের সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে এশার মৃত্যুর বিষয়টিকে সন্দেহজনক বলে মনে করছেন তার প্রতিবেশী ও স্থানীয়রা। 

টাঙ্গাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ছালাম মিয়া প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘শনিবার রাতে আত্মহত্যায় প্ররোচণার অভিযোগ এনে এশার বড় বোন মির্জা লুনা আপন বড় ভাই জনি ও আরেক যুবক সৌরভের নামে মামলা করেন। এশার মরদেহ টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। আজ ময়নাতদন্ত করা হবে।’

টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শরফুদ্দীন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘টাঙ্গাইল সদর মডেল থানায় এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। পুলিশ রাতেই একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। আইনি সব বিষয়ে আমরা সজাগ থেকে এ ঘটনায় কাজ করে যাচ্ছি। ময়নাতদন্ত শেষে রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।’

চলতি বছরের ৫ এপ্রিল রাতে টাঙ্গাইল মডেল থানায় বড় মনির ও তার স্ত্রী নিগার আফতাবের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন এশা। মামলা দায়ের করার সময় তিনি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। এ ঘটনায় টাঙ্গাইলসহ সারা দেশে আলোড়ন ওঠে। মামলার এজাহারে এশা অভিযোগ করেন, জমিসংক্রান্ত বিরোধ সমাধানের জন্য তিনি বড় মনিরের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে এশাকে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর শহরের আদালতপাড়ায় বড় মনির বাড়ির পাশে একটি ফ্ল্যাটে যেতে বলেন। সেখানে গেলে এশাকে একটি কক্ষে প্রায় তিন ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। এরপর বড় মনির সেই কক্ষে ্এসে এশাকে ধর্ষণ করেন এবং সেই ছবি তুলে রাখেন। এ কথা কাউকে জানালে হত্যার হুমকিও দেন। এরপর ওই ছবি প্রকাশের ভয় দেখিয়ে আরও একাধিকবার এশাকে ধর্ষণ করেন বড় মনি। 

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, ধর্ষণের পর এশা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বড় মনি তাকে গর্ভপাতের জন্য চাপ দেন। রাজি না হওয়ায় গত ২৯ মার্চ রাত ৮টার দিকে এশাকে আদালতপাড়ায় নিজ শ্বশুরবাড়িতে তুলে নিয়ে যান বড় মনি। ওই বাসার একটি কক্ষে আটকে রেখে ভয়ভীতি দেখানোর পরও গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে রাজি না হওয়ায় এশাকে ফের ধর্ষণ করেন। এরপর বড় মনির স্ত্রী এশাকে মারধর করেন। পরে অসুস্থ অবস্থায় গভীর রাতে তাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয় এবং অব্যাহত  হুমকি দেওয়া হতে থাকে। 

মামলা দায়ের হওয়ার বিষয়টি নিয়ে বেশ আলোড়ন ওঠে। হাইকোর্টে আবেদন করে চার সপ্তাহের আগাম জামিন নেন বড় মনির। গত ৩০ এপ্রিল রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের ভিত্তিতে চেম্বার আদালত জামিন স্থগিত করে দুই সপ্তাহের মধ্যে তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। সেই অনুযায়ী গত ১৫ মে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এর মধ্যে গত ২৭ জুন এশা এক সন্তানের জন্ম দেন। পরে ১১ জুলাই হাইকোর্ট থেকে জামিন পান তিনি। কিন্তু পরদিনই রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে সেই জামিনাদেশ স্থগিত করে সন্তানের পিতৃপরিচয় নিশ্চিতের জন্য ডিএনএ পরীক্ষার নির্দেশ দেন চেম্বার আদালত। 

গত ২৮ আগস্ট ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে এশা অভিযোগ করেন, ক্ষমতা খাটিয়ে বড় মনির ডিএনএ রিপোর্ট পাল্টে দিতে পারেন। হুমকিধমকির পরও সন্তানের অধিকার নিশ্চিতের জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দেন এশা। 

তবে আদালতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দায়ের করা ডিএনএ রিপোর্ট অনুযায়ী, এশার নবজাতকের সঙ্গে বড় মনিরের ডিএনএর মিল পাওয়া যায়নি। এর ভিত্তিতে গত ৯ অক্টোবর হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রাখার আদেশ দেন আপিল বিভাগ। বড় মনির বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা