রায়পুরা (নরসিংদী) সংবাদদাতা
প্রকাশ : ২৫ নভেম্বর ২০২৩ ১৪:১৫ পিএম
রায়পুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবন। প্রবা ফটো
নরসিংদীর রায়পুরা পৌর এলাকার রায়পুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবন নির্মাণের এক বছরের মাথায় পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। শ্রেণিকক্ষ-সংকটে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে বলে জানায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এদিকে নির্মাণের এক বছরের মাথায় পরিত্যক্ত ঘোষণা করায় সরকারের প্রায় ৩২ লাখ টাকা অপচয় হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পৌর শহরের তাত্তাকান্দায় ১৯৩৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় রায়পুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ২০০১ সালে বিদ্যালয়ের একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। পরে শিক্ষার্থী বৃদ্ধি পেলে শ্রেণিকক্ষের সংকট দেখা দেয়। সংকট নিরসনে তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা প্রকল্পের (পিইডিপি-৩) আওতায় ২০১৬ সালে ৩১ লাখ ৭৩ হাজার টাকা ব্যয়ে ভবনের দ্বিতীয় তলা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কাজ শেষে ২০১৭ সালে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের কাছে ভবনটি হস্তান্তর করে। এর এক বছর পর ২০১৮ সালে উপজেলা এলজিইডি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পরিত্যক্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের পাশে দুটি টিনশেড ঘরে চলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। এদিকে বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই যে দৃষ্টিনন্দন দোতলা ভবনটি পরিত্যক্ত। রঙিন দেয়ালজুড়ে আঁকা বর্ণমালা, ফুল-পাখি ও কবি-সাহিত্যিকদের ছবি। ভবনটি ময়লা-আবর্জনায় পরিপূর্ণ। নিচতলার বিভিন্ন কক্ষের পিলার ও ভিমে দেখা দিয়েছে ফাটল। কয়েক স্থানে ফাটল থেকে কংক্রিট খসে বেরিয়ে পড়েছে রড। দেয়ালেরও বিভিন্ন স্থানে ফাটল রয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাদেকুল ইসলাম বলেন, ‘২০১৭ সালে দোতলার কাজ শেষ হওয়ার পরপরই বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এরপরই নিচতলায় বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দেয়। পরে বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিস ও এলজিইডি অফিসকে জানানো হয়। ২০১৮ সালে তারা পরীক্ষা করে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে সাতজন শিক্ষক রয়েছেন। আর শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী রয়েছে ২২০ জন। আগে ছিল ৪৫০ জন। শ্রেণিকক্ষসংকটে শিক্ষার্থীর সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের একটি কক্ষে অফিসের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।’
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সোহাগ হোসেন বলেন, চলতি মাসেই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি অপসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সেখানে নতুন ভবন নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
রায়পুরা উপজেলা প্রকৌশলী শামীম ইকবাল মুন্নার কাছে ঠিকাদারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মোবাইল ফোনে বলেন, ‘এটা অনেক আগের ঘটনা। আমাদের কাছে সাধারণত পাঁচ বছরের বেশি ফাইল থাকে না। তারপরও ফাইল আছে কি না, খুঁজে দেখতে হবে। এরপর বারবার চেষ্টা করেও তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করতেই পারিনি।’
উপজেলা প্রকৌশলী শামীম ইকবাল মুন্না বলেন, ‘আমাদের কাছে সাধারণত পাঁচ বছর আগের ফাইল থাকে না। তাই এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারছি না। তারপরও খোঁজ নিয়ে দেখব।’