পদ্মা সেতু রেল প্রকল্প
মাদারীপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৯ নভেম্বর ২০২৩ ২২:৫৬ পিএম
আপডেট : ২৯ নভেম্বর ২০২৩ ২৩:১০ পিএম
পদ্মা সেতু হয়ে চলা রেলের সেবার পরিধি বাড়ছে। নতুন নতুন স্টেশন চালুর মধ্য দিয়ে বাড়ছে রেল নেটওয়ার্ক। পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেন সার্ভিস চালুর ১ মাস ২০ দিন পর শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) থেকে মাদারীপুরের দুটি স্টেশন ও মুন্সীগঞ্জের একটি স্টেশন চালু হচ্ছে। এতদিন ট্রেন লাইন ও স্টেশন থাকার পরও রেলসেবা থেকে বঞ্চিত ছিল মাদারীপুর ও মুন্সীগঞ্জের মানুষ। রাজশাহী ও খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ট্রেন দুটি এখন এসব স্টেশন থেকে যাত্রী পরিবহন করবে।
এর আগে গত ১০ অক্টোবর ঢাকা-ভাঙ্গা রেলপথের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর গত ১ নভেম্বর থেকে এ রুটে জনসাধারণের চলাচলের জন্য খুলনা থেকে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও বেনাপোল থেকে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন দুটি চালু করলেও এ দুটি ট্রেন ভাঙ্গার পর কোনো স্টেশনে থামেনি। এখন পদ্মা সেতুর ওপর চলা ট্রেনের সংখ্যা হবে মোট চারটি।
জানা গেছে, ১ ডিসেম্বর থেকে মধুমতি এক্সপ্রেস রাজশাহী থেকে ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে রাজবাড়ী পৌঁছবে, সেখানে ১৫ মিনিট যাত্রাবিরতি দিয়ে বেলা ১১টায় ছেড়ে বেলা ১১টা ৩৮ মিনিটে ফরিদপুর পৌঁছবে। সেখানে তিন মিনিট যাত্রাবিরতি দিয়ে ১১টা ৪১ মিনিটে ছেড়ে ১২টা ৩০ মিনিটে ট্রেনটি ভাঙ্গা জংশনে পৌঁছবে। সেখানে তিন মিনিট যাত্রাবিরতি শেষে ১২টা ৩৩ মিনিটে ছেড়ে ১২টা ৪৪ মিনিটে শিবচর স্টেশনে পৌঁছবে। সেখানে দুই মিনিট যাত্রাবিরতি শেষে ১২টা ৪৬ মিনিটে ছেড়ে ১২টা ৫৬ মিনিটে ট্রেনটি শিবচরের পদ্মা স্টেশনে পৌঁছবে। সেখানে দুই মিনিট যাত্রাবিরতি শেষে ১টা ১১ মিনিটে মাওয়া পৌঁছবে। সেখানে দুই মিনিট যাত্রাবিরতি শেষে এটি দুপুর ২টায় ঢাকা পৌঁছবে।
ট্রেনটি আবার বেলা ৩টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে ৩টা ৩৮ মিনিটে মাওয়া পৌঁছবে। সেখানে দুই মিনিট যাত্রাবিরতি দিয়ে ৩টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে ৩টা ৫৪ মিনিটে শিবচরের পদ্মা স্টেশনে পৌঁছবে। সেখানে তিন মিনিট যাত্রাবিরতি দিয়ে ৩টা ৫৭ মিনিটে ছেড়ে ৪টা ৮ মিনিটে শিবচর স্টেশনে পৌঁছবে। সেখানে দুই মিনিট যাত্রাবিরতি দিয়ে ট্রেনটি ৪টা ১০ মিনিটে ছেড়ে ৪টা ২১ মিনিটে ভাঙ্গা জংশনে পৌঁছবে। সেখানে তিন মিনিট যাত্রাবিরতি শেষে ট্রেনটি ৪টা ২৪ মিনিটে ছেড়ে ৫টা ১৫ মিনিটে ফরিদপুর পৌঁছবে। সেখানে তিন মিনিট যাত্রাবিরতি দিয়ে ৫টা ১৮ মিনিটে ছেড়ে ৬টা ৫ মিনিটে রাজবাড়ী পৌঁছবে। সেখানে ১৫ মিনিট যাত্রাবিরতি দিয়ে ৬টা ২০ মিনিটে ছেড়ে রাত ১০টা ৪০ মিনিটে রাজশাহী পৌঁছবে।
ট্রেনটির শোভন চেয়ারে শিবচর স্টেশন থেকে মাওয়া স্টেশনে ভাড়া ১৫০ টাকা ও ঢাকা পর্যন্ত ১৮৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর শিবচর থেকে ভাঙ্গা স্টেশনে ভাড়া ৪৫ টাকা, ফরিদপুর ৫০ টাকা, রাজবাড়ী ৮০ টাকা ও রাজশাহী পর্যন্ত ২৪৫ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে।
অপরদিকে একই দিন থেকে নকশিকাঁথা কমিউটার ট্রেন এ রুটে চলাচল করবে। ট্রেনটি খুলনা থেকে রাত ১১টা ৩০ মিনিটে ছেড়ে সকাল ৮টা ২৪ মিনিটে শিবচর স্টেশনে আসবে। শিবচর স্টেশন থেকে ট্রেনটি ৮টা ২৪ মিনিটে ছেড়ে ৯টা ৪৭ মিনিটে ঢাকা পৌঁছবে। ট্রেনটি আবার ঢাকা থেকে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে ১টা ১২ মিনিটে শিবচর স্টেশনে পৌঁছবে। এটি শিবচর স্টেশন থেকে ছেড়ে রাত ১০টা ২০ মিনিটে খুলনা পৌঁছবে।
শিবচরের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা কোনোদিন ভাবিনি আমাদের এলাকায় রেল চালু হবে। এই রেল চালু হওয়ায় আমরা খুবই খুশি। এখন অল্প খরচে ও সময়ের মধ্যেই ঢাকা যেতে পারব। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।’
শরীয়তপুরের হাবিবুর রহমান বলেন, ‘পদ্মা সেতুর সঙ্গে সঙ্গে রেললাইন এটা আমাদের জন্য অনেক বড় পুরস্কার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞ। রেল চালু হওয়ার ফলে আমাদের পণ্য পরিবহন খুব সহজ হবে। আমরা ব্যবসায়ীরা অনেক লাভবান হব।’
রেলওয়ের শিবচর স্টেশন মাস্টার মো. সেলিম হোসেন বলেন, এই লাইন দিয়ে ১ ডিসেম্বর থেকে আরও দুটি ট্রেন চালু হবে। ওই ট্রেন দুটি শিবচর, পদ্মা, মাওয়াসহ বেশ কিছু স্টেশনে থামবে। ভবিষ্যতে এ রুটে ট্রেনসংখ্যা আরও বাড়বে।