প্রবা প্রতিবেদক, বরিশাল
প্রকাশ : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ২১:৫৬ পিএম
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ২২:১১ পিএম
বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় মাত্র ১৭ হাজার টাকা ঋণখেলাপির দায়ে ক্ষুদ্র ঋণদানকারী এক এনজিওর মামলার আসামি হয়ে শিশুসন্তান ও শাশুড়িসহ গ্রেপ্তার হয়েছেন এক গৃহবধূ।
রাতভর থানাহাজতে কাটানো গৃহবধূকে শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) মানবিক বিবেচনায় জামিন দিয়েছেন আদালত। আদালতের দেওয়া পরোয়ানায় গত শুক্রবার রাতে গৃহবধূকে গ্রেপ্তার করে আগৈলঝাড়া থানার পুলিশ।
গৃহবধূর নাম নূপুর (২৬)। তিনি আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের তালতারমাঠ গ্রামের বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী শ্যামল হালদারের স্ত্রী।
গৃহবধূর শাশুড়ি শ্রীমতি হালদার প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, এক বছর আগে ক্ষুদ্রঋণদানকারী এনজিও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (বিডিএস) থেকে ৪০ হাজার টাকা ঋণ নেয় তার পুত্রবধূ। ৫ মাস পূর্বে ছেলে শ্যামল সৌদি আরবে গেছে। সেখানে গিয়ে দুই মাস বেকার ছিল। তাই ঋণের ১৭ হাজার টাকা পরিশোধ করতে পারেনি। এই কারণে বিডিএস থেকে নূপুরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
শ্রীমতি হালদার অভিযোগ করেন, মামলার নোটিস পেয়ে ৫ হাজার টাকা নিয়ে এনজিওতে দিয়েছেন। এ সময় এনজিও থেকে জানানো হয় ৩ হাজার টাকা কিস্তি হিসেবে জমা দেবে। বাকি ২ হাজার টাকা দিয়ে মামলা উঠিয়ে (প্রত্যাহার) নিতে খরচ করবে। কিন্তু শুক্রবার রাত ১টার দিকে পুলিশ এসে পুত্রবধূ নূপুরকে গ্রেপ্তার করে।
শ্রীমতি আরও জানান, নূপুরের সঙ্গে দুই বছর বয়সি নাতি ও তাকেও পুলিশ নিয়ে যায়। পুত্রবধূকে গ্রেপ্তারের সময় নারী পুলিশ না থাকায় তাকে (শ্রীমতি হালদার) নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রাত ১টার পর থেকে তারা থানাহাজতে ছিলেন। শনিবার সকালে তাকে ছেড়ে দিয়ে নাতি ও পুত্রবধূকে পুলিশ বরিশাল আদালতে নিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে আগৈলঝাড়া থানার এসআই আমিরুল ইসলাম বলেন, আদালতের পরোয়ানা থাকায় নূপুরকে গ্রেপ্তার করেছেন। সাথে নারী পুলিশ সদস্য না থাকায় শাশুড়ি শ্রীমতি হালদারকে নিয়ে আসা হয়। শনিবার সকালে শ্রীমতি হালদারকে ছেড়ে দিয়ে নূপুরকে সন্তানসহ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
আদালতের নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা মো. ফুয়াদ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, মামলার আসামি হিসেবে নূপুরকে বরিশালের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শারমিন সুলতানা সুমী মানবিক কারণে তার জামিন মঞ্জুর করেছেন।
এ বিষয়ে গৈলা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মানিক সরদার বলেন, ঋণ নিয়ে কিস্তি না দেওয়ায় গৃহবধূকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তাকে আদালত জামিন দিয়েছেন বলেও শুনেছি।
এনজিও বিডিএসের মাঠকর্মী মো. সুমন হোসেন বলেন, অভিযুক্ত নূপুর ঋণ নিয়েছেন এক বছর আগে। কিস্তির টাকা জমা দেননি, তাই ঋণখেলাপির দায়ে মামলা করা হয়েছে।
কিন্তু নোটিস দেওয়ার পর ৫ হাজার টাকা দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেননি এ এনজিওকর্মী।